প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

নব্বইর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁদপুরের ক’টি সংসদীয় এলাকায় ঈদকেন্দ্রিক জাকাতের কাপড় বা ঈদবস্ত্র বিতরণের হিড়িক পড়ে যায়। এটা যে সংসদ নির্বাচনে বড় বড় রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে ছিলো, সেটা একেবারে পরিষ্কার। সংসদ নির্বাচন শেষ হবার পর যে ঈদ আসলো, তার পূর্বে মনোনয়নপ্রাপ্ত, নির্বাচিত ও মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের কেউই জাকাতের কাপড়/ ঈদবস্ত্র আর বিতরণ করলো না। তারপর ভালো সময় বিরতির পর গত বেশ ক’বছর ধরে মতলব উত্তরে আহসান গ্রুপের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক চলছে নানা দাতব্য কার্যক্রম। আর ফরিদগঞ্জে অনুরূপ কার্যক্রম চলছে শিল্পপতি এমএ হান্নানের পক্ষ থেকে। অন্যান্য স্থানেও আরো ক’জন এমন কার্যক্রম চালাচ্ছেন, তবে সেটা বিচ্ছিন্নভাবে সীমিত পরিসরে, ধারাবাহিক ও ব্যাপক পরিসরে নয়।
মতলব উত্তরে আহসান গ্রুপের সাম্প্রতিক কার্যক্রম সম্পর্কে চাঁদপুর কণ্ঠের ব্যুরো ইনচার্জ মাহবুব আলম লাভলু জানিয়েছেন, বাংলাদেশের স্বনামধন্য গ্রুপ অব কোম্পানি আহসান গ্রুপ লিমিটেডের সৌজন্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মতলব উত্তর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। রোববার ২৬শে মার্চ সকালে লতরদি ইসহাকিয়া মাদ্রাসা মাঠে ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন আহসান গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার কামরুল আহসান সিআইপি। এ সময় তিনি বলেন, আমি ও আমার পরিবার আওয়ামী পরিবারের। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে ভালোবেসে এসেছি। আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা বাঙালি জাতি স্বাধীনতা পেয়েছি, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখে আসছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সবাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন। আমার সুযোগ্য পুত্র এম ইসফাক আহসান সবসময় মতলব উত্তর-দক্ষিণের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় ও এলাকার মানুষের জন্যে কিছু করতে পারলে নিজেকে কিছুটা ধন্য মনে করি। আমার ছেলে এম ইসফাক আহসান বিদেশে পড়াশোনা করলেও এলাকার মানুষের প্রতি তার যে ভালোবাসা সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তিনি আরো বলেন, আজকে আমি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়নের অসহায় দুঃস্থদের মাঝে ও আমার এলাকার কিছু মানুষকে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করেছি। আমার সুযোগ্য পুত্র এম ইসফাক আহসান বাকিগুলো বিতরণ করবে। সবাই আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন, আমি যাতে সবসময় আপনাদের পাশে থেকে কাজ করে যেতে পারি।
পিতা হিসেবে কামরুল হাসান সিআইপি যেভাবেই বলেন না কেনো, এটা পরিষ্কার যে, তাঁর পুত্র এম ইসফাক আহসান আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। সেজন্যে অতীতের ন্যায় তিনি নিজ এলাকায় দাতব্য কাজ করছেন। তিনি অতীতে মনোনয়ন না পেয়েও তাঁর দাতব্য কাজ থেকে সরে যান নি। যদিও অনেকে মনোনয়নপ্রাপ্তির ব্যর্থতায় এমন কাজ থেকে সরে গেছেন। আমরা চাই, সামর্থ্যবান মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দাতব্য কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। অন্যথায় তাঁরা প্রদর্শনেচ্ছা ও উদ্দেশ্যমূলক দাতব্য কাজের দায়ে ইসলামের দৃষ্টিতে দুনিয়া ও আখেরাতে প্রশ্নবিদ্ধ ও সওয়াব-বঞ্চনার আশঙ্কায় যে ভুগবেন, সেটা স্পষ্টভাবেই বলা যায়। অতএব, সাধু সাবধান।