প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২
প্রথিতযশা আবৃত্তিশিল্পী ড. ভাস্কর বন্দোপাধ্যায়ের সাথে একদিন

আজ যার কথা লিখতে যাচ্ছি, তিনি একজন বাংলাদেশী আবৃত্তিশিল্পী, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও অভিনেতা। বর্তমানে তিনি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র গণমাধ্যম বিষয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
তিনি স্কুলজীবন থেকেই কবিতা আবৃত্তি শুরু করেন। বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠানে ও পাড়ার অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করতেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি সাংবাদিকতায় যুক্ত হন এবং সাংবাদিকতা ভালো লাগার কারণে তিনি ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। এরপর ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি দিল্লি গিয়ে সাংবাদিকতায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮২ সালে দেশে ফিরে তিনি আবৃত্তি ফেডারেশন গড়ে তোলেন। কিন্তু বেশি দিন কার্যকর ছিলো না। তারপর ১৯৮৫ সালে তিনি তাঁর নিজ সংগঠন কথা আবৃত্তিচর্চা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তিনি ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮৯ সালে তিনি এই পরিষদের উদ্যোগে প্রথম জাতীয় আবৃত্তি উৎসবের আয়োজন করেন। শুধু তাই নয়, তিনি ২০১৭ সালে ছিটকিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। গুণী এই শিল্পী ২০২১ সালে শিল্পকলায় একুশে পদকসহ অনেক পদক পেয়েছেন।
ড. ভাস্কর বন্দোপাধ্যায় এসেছিলেন ৩৯তম ফোবানা, আটলান্টা, জর্জিয়া কাব্য জলসায় আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি হয়ে। কাব্য জলসায় তাঁর সাথে কথা হয়, কবিতা আবৃত্তি হয়। কাব্য জলসা শেষে তিনি বইয়ের স্টল ঘুরে দেখেন। সেই সময় আমার কাছ থেকে মাতৃভাষা ও নতুন প্রজন্ম বইটি নেন। তিনি বইটি হাতে নিয়ে বললেন, চমৎকার একটি বই লিখেছেন। আমি মনেপ্রাণে চাই আমাদের বাংলা ভাষাটা যেন হারিয়ে না যায়। তাই আরও বই নতুন প্রজন্মকে শেকড় অন্বেষী করার জন্যে দরকার। ভাষার ওপর খুব কম বই আছে। আরও অনেক কথা হলো। তিনি খুব সুন্দরভাবে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আমার সাথে আলাপ করলেন। অনেক ভালো মনের একজন মানুষ। বাংলা শিল্প সাহিত্যে ড. ভাস্বর বন্দোপাধ্যায় তাঁর কর্ম-আতিশয্যে চির অম্লান হয়ে থাকুক ও এই প্রত্যাশা করছি।
ড. আব্দুস সাত্তার : লেখক ও সাংবাদিক, ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র।