সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

পুত্র-কন্যাও যখন বাবা/মাকে স্মরণ করে না-
অনলাইন ডেস্ক

কারো বাবা/মা যদি জগদ্বিখ্যাত হন, দেশখ্যাত হন, তাহলে ভিন্ন কথা। কিন্তু কোনো জেলা বা অঞ্চলে যদি বিখ্যাত হন, তাহলে তাঁকে নিজ পরিবারে মৃত্যুর ক’বছর পর্যন্ত প্রতিটি মৃত্যুবার্ষিকীতে ভালোভাবেই স্মরণ করা হয়। তারপর পুত্র-কন্যারা ব্যস্ততার অজুহাতে, আর্থিক সঙ্কট কিংবা অন্য কোনো কারণে বাবা/ মাকে স্মরণ করে না। এটাই আমাদের সমাজের চিত্র। এ চিত্রের বিপরীতে যখন ভিন্ন কিছু দেখা যায়, তখন ভালোলাগার অন্যরকম অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হতে হয়, বিস্ময়ও প্রকাশ করতে হয়। এমন একটি বিস্ময়সূচক সংবাদই চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকরা পড়লো অতি সম্প্রতি।

‘সঙ্গীত নিকেতনে অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুস সাত্তারের স্মরণ সভা ও সঙ্গীত সন্ধ্যা’ শীর্ষক সংবাদটিতে লিখা হয়, চাঁদপুর সঙ্গীত নিকেতনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বহুগুণে গুণান্বিত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুস সাত্তারের স্মরণ সভা ও সঙ্গীত সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চার অন্যতম প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর সঙ্গীত নিকেতনের আয়োজনে কোড়ালিয়া রোডস্থ চন্দ্রকান্ত সাহা মিলনায়তনে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অজয় কুমার ভৌমিক। আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ, সঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীত নিকেতনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুধীজনদের ব্যাপক উপস্থিতিতে এবং সংগঠনের অধ্যক্ষ স্বপন সেনগুপ্তের সভাপ্রধানে মরহুম সৈয়দ আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সহ আরো অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা সৈয়দ আব্দুস সাত্তারকে স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন বহু গুণে গুণাম্বিত একজন ভালো মানুষ, অতি সহজে মানুষকে আপন করে নেয়ার মত গুণাবলি ছিল তাঁর মাঝে। তাঁর জন্মস্থান চাঁদপুরে না হলেও চাঁদপুরকে তিনি অনেক আপন করে নিয়েছিলেন। সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে শুরু করে সামাজিক সেবামূলক সকল কাজেই ছিলো তাঁর সমান বিচরণ। তিনি চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। আর রাজনীতি করেছেন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। তিনি ছিলেন বহু প্রতিভার অধিকারী। তাঁর শিক্ষকতাও ছিল গঠনমূলক। আমরা আজও এই মানুষটির অভাববোধ করি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ও বিভিন্ন কাজে।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুস সাত্তার ১৯২৮ সালের ২০ মে শেরপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আব্দুল করিম ও মাতার নাম সৈয়দা মাহফুজা খাতুন। ২০০৩ সালের ৩ জুন তিনি সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান। তিনি চাঁদপুর কলেজে ১৯৫৭ সালের ১৫ জুন থেকে আশির দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাংলা বিভাগের একজন জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অস্থানীয়, তবে চাঁদপুরের সকলের কাছে তাঁর কর্মযজ্ঞে শ্রদ্ধেয় সৈয়দ আব্দুস সাত্তার ছিলেন স্থানীয়ের চাইতেও অনেক বেশি। তিনি তাঁর কর্মস্থল চাঁদপুরকে আপন করে নিয়েছিলেন তাঁর জন্মস্থানের চেয়েও বেশি। ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ চাঁদপুর কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘স্বর্ণস্মৃতি’ নামে যে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের লেখায় যে ক'জন প্রিয় শিক্ষককে সবচে' বেশি স্মরণের আভরণে আভরিত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সৈয়দ আব্দুস সাত্তার আছেন অনেক এগিয়ে। তার ঠিক পূর্বক্ষণে চাঁদপুরের সবচে' প্রসিদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগঠন সংগীত নিকেতনে সৈয়দ আব্দুস সাত্তারকে স্মরণ করাটা যথার্থ হয়েছে বলে মনে করছি। এজন্যে এমন আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ শুধু নয়, কৃতজ্ঞতাও জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়