সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

ছোটখাট মেরামতে কি বড় ঝুঁকি মোকাবেলা করা যায় না?
অনলাইন ডেস্ক

‘বালিথুবা রাস্তার মাথার ব্রিজটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ॥ হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ’--এটি গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি সংবাদ শিরোনাম। এ সংবাদে প্রতিবেদক সোহাঈদ খান জিয়া যে ছবি যুক্ত করেছেন, তা দেখে একজন শিশু-পাঠকেরও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না ব্রিজটির ঝুঁকি কোন্ পর্যায়ে রয়েছে। তারপরও সংবাদটির বিবরণী একটু জেনে নেই। বিবরণীটি হচ্ছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা রাস্তার মাথার ব্রিজটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ব্রিজটি দিয়ে ২৪ ঘন্টা মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা, বাইসাইকেল, ট্রলিসহ জনসাধারণ চলাচল করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ ব্রিজটির বেহাল দশা বিরাজ করলেও কর্তৃপক্ষসহ অন্য কারোই টনক নড়েনি। ব্রিজ ভেঙ্গে যে কোনো সময় যান ও জনচলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ব্রিজ মেরামতের জন্য কেউ এগিয়ে আসছে না। এ স্থান দিয়ে যানবাহনগুলো ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাত হয়ে চলাচল করে থাকে। যে কোনো সময় ব্রিজের রড ভেঙে গাড়িসহ চালক ও যাত্রী নিচে পানিতে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। এ ব্রিজটি দিয়ে ফরিদগঞ্জ উত্তরাঞ্চলের একটা অংশে বালিথুবা, পাটোয়ারী বাজার, পাইকপাড়া, রূপসা, ফরিদগঞ্জে সহজে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু ব্রিজের এমন অবস্থা দেখলে গা শিউরে ওঠে।

জানা যায়, ফরিদগঞ্জের বর্তমান এমপির ইউনিয়নে এ ব্রিজের অবস্থান হওয়ার পরও এটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। বুধবার দুপুরে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, এ ব্রিজের উত্তর পাশে মধ্যখানে ঢালাইয়ের আস্তর ভেঙ্গে গেছে। রডগুলো বাঁকা হয়ে রয়েছে। ছোট যানবাহন এক পাশে কাত হয়ে অপর পাশে উঠে যাওয়া অবস্থায় পার হতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় লোকজন জানান, এমপির নিজ ইউনিয়নে যদি ব্রিজের এমন বেহাল দশা হয় তাহলে অন্য ইউনিয়নের ব্রিজ ও রাস্তাঘাটের অবস্থা কেমন হবে। আলমগীর হায়দার খান এমপি থাকাকালীন এ ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রথমে ব্রিজটির মাঝে ছোট একটা ছিদ্র হয়। পরে আস্তে আস্তে এটা বড় হয়ে এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। যানবাহন ও জনগণের চলাচলের স্বার্থে ব্রিজ মেরামতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় না।

বালিথুবা ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, এ ব্যাপারে থানা ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়েছি। উপজেলা মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে বলেছি। কিন্তু কেনো এটা মেরামত করা হয় না সেটা আমার জানা নেই।

বাংলা প্রবাদে আছে, সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। ব্রিজটিতে প্রথম যে ছোট ছিদ্র হয়, সেটি সামান্য খরচে অর্থাৎ সময়ের এক ফোঁড়ে মেরামত করা যেতো। কিন্তু সেটি না করায় সেই ছোট ছিদ্রটিই এখন অনেক বড় হয়ে ব্রিজটিকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। যার ফলে অসময়ের দশ ফোঁড় অর্থাৎ অনেক বেশি খরচে ব্রিজটি মেরামতের উপলক্ষ তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের দেশের একটা সাধারণ চিত্র, যাতে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টিকটু প্রবণতা এবং স্বার্থ সংক্রান্ত উদ্দেশ্য নিহিত থাকে। এমনটি এড়ানো যায়, তবে না এড়ানোতে অনেক জটিলতা তৈরি হয়। এর জন্যে উপকারভোগীদের অসচেতনতা, উদাসীনতা এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপূর্ণ আচরণও কম দায়ী নয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়