প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলা নদী ভাঙ্গনগ্রস্ত একটি অনুন্নত উপজেলা। এ উপজেলায় ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও অস্তিত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকাটা খুবই মুশকিল হয়ে পড়ে। এমন বাস্তবতায় হাইমচরের আলগীবাজারে গড়ে ওঠা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টেকসই হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটির নাম আদর্শ শিশু নিকেতন। মাজহারুল ইসলাম শফিক নামে একজন রাজনীতিক এবং হাইমচর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করে হাঁটি হাঁটি পা পা করে সামনে এগিয়ে চলছেন। তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা অনুধাবন করতে পেরে এর এক বা একাধিক শাখা পর্যন্ত অন্যত্র পরিচালনায় সক্ষম হয়েছেন।
গত ২৫ ডিসেম্বর রোববার হাইমচর আদর্শ শিশু নিকেতনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রজতজয়ন্তী, পুনর্মিলনী উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এ উৎসব উদযাপনে ব্যাপক জানান দিয়ে বড় বড় অনেক মানুষের সমাগম না ঘটিয়ে নিজেদের সীমাবদ্ধতা ও সক্ষমতায় স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি সুধী ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। রজতজয়ন্তীর আনন্দকে নিজেদের মতো করে উদযাপনে আদর্শ শিশু নিকেতনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিকতা ছিলো লক্ষ্যণীয়। এমনটি সব প্রতিষ্ঠানে সচরাচর দেখা যায় না।
আমাদের সমাজে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের মাইল ফলকসম অর্জনকে উদযাপন করতে গিয়ে ব্যাপক আয়োজন করা হয়। এতে প্রায়শই আয়োজকদের সক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়, বিশৃঙ্খলা ও বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং সৌহার্দ্যের পরিবর্তে মনোমালিন্য তৈরি হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান শতবর্ষ অতিক্রম করেও শুধুমাত্র উদ্যোক্তার অভাবে উৎসব উদযাপন করতে পারে না। বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই, আমাদের চাঁদপুর জেলাতেই এমন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমন বাস্তবতা বিবেচনায় হাইমচর আদর্শ শিশু নিকেতনের ২৫ বছর পূর্তিতে রজতজয়ন্তী উদযাপন তুলনামূলক কম প্রচারে ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে আত্মশ্লাঘার।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ কল্যাণধর্মী যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টদের চেয়ে বাইরের লোকজনকে বেশি প্রাধান্য দিলে কর্তৃত্ব ব্যাহত হয়। বাছ-বিচার ছাড়া দান/অনুদান গ্রহণের মধ্যেও নিজেদের কর্তৃত্ব হাতছাড়া হয়ে যায়। দূর থেকে হাইমচর আদর্শ শিশু নিকেতনকে আমরা যেটুকু দেখি, তাতে মনে হয় তারা নিজেদেরকে নিয়েই নিজেরা ভালো কিছু করার চেষ্টা করে। এর ফলে তাদের কার্যক্রমে পরিচ্ছন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
হাইমচর আদর্শ শিশু নিকেতনকে গত পঁচিশ বছরের বিবেচনায় আদর্শই মনে হয়। প্রতিষ্ঠানটির আদর্শিক মান রক্ষায় প্রতিষ্ঠাতার সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনা এবং দূরদর্শিতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। স্বল্প জায়গায় শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে ধীরস্থিরভাবে কেবলই এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর নিরন্তর প্রয়াস প্রশংসনীয়। আমরা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করছি।