সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

জমিতে যখন ফসলের চেয়ে মাছ চাষের দাপট

জমিতে যখন ফসলের চেয়ে মাছ চাষের দাপট
অনলাইন ডেস্ক

মোবাইল বা মুঠোফোন যেমন আমাদের অনেক কিছু খেয়ে ফেলছে, তেমনি মিনি ড্রেজারও অনেক কিছু খেয়ে ফেলছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফসলি জমি খেয়ে ফেলা। এমন জমি খাওয়ার ক্ষেত্রে চাঁদপুর জেলায় সবচে’ এগিয়ে আছে ফরিদগঞ্জ উপজেলা। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সিআইপি) বেড়িবাঁধের অভ্যন্তরে হওয়ায় এই ফরিদগঞ্জ বন্যামুক্ত এবং সেজন্যে এইখানে ইট বানানোর ব্রিক ফিল্ড গড়ে উঠেছে অনেক বেশি। এই ব্রিক ফিল্ডও ফরিদগঞ্জের ফসলি জমি খেয়ে ফেলছে। এ নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে সচিত্র কতোটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তার হিসেব মিলানো কঠিন। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে ফরিদগঞ্জে এক ফসলি জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে মাছ চাষের চেষ্টা সংক্রান্ত সংবাদ। যে সংবাদটি পড়ে আসলে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারলাম না।

এ সংবাদটির সূচনায় প্রবীর চক্রবর্তী যে দিকটি তুলে এনেছেন, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট খোরাক আছে। তিনি লিখেছেন, চার দশক পূর্বে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বাঁধ তৈরি করা হয়। উদ্দেশ্য ছিলো, বন্যামুক্ত এলাকায় ফসলি জমিতে বছরে একাধিক ফসল উৎপাদন করে খাদ্য ঘাটতি দূর করা। কিন্তু গত চার দশকেও সেই ঘাটতি দূর হয়নি। বরং বছরের পর বছর খাদ্য ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে ফসলি জমি। চরের এক ফসলি জমিগুলো ক্রমেই মাছ চাষের আওতায় চলে যাচ্ছে। প্রকৃত কৃষকরা ধানের আবাদ করতে চাইলেও জমির মালিক ও চর পরিচালনা কমিটির কৌশলের কাছে তারা পেরে উঠছে না। ফলে একের পর এক চরে ধানের আবাদ বন্ধ হচ্ছে। এমতাবস্থায় কৃষকরা ধান চাষে সহযোগিতা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

সম্প্রতি ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের চরগুদাড়া ও গজারিয়া চরে মাছ চাষ ও ধান চাষ নিয়ে কৃষক ও চর পরিচালনা কমিটির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি পৌর মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারীর দৃষ্টি গোচর হলে খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় ধান চাষে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি প্রথমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে এবং পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। সে আলোকে এবং কৃষকদের স্মারকলিপি প্রদানের প্রেক্ষিতে গত ৩০ অক্টোবর রোববার দুপুরে এলাকার সকল চর পরিচালনাকারী কমিটির সাথে মতবিনিময় করে উপজেলা প্রশাসন। সভাপ্রধান ছিলেন ইউএনও তাসলিমুন নেছা। সভায় চরগুলোতে বছরের চার মাস ধানের আবাদ ও বাকি ৮ মাস মাছের চাষ করার সিদ্ধান্ত হয়।

আমরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। সাথে সাথে উপজেলা প্রশাসনের নিকট ফরিদগঞ্জের খাদ্য ঘাটতি নিরসনে ফসলি জমি বাঁচাতে মিনি ড্রেজারের দৌরাত্ম্য রোধে ধারাবাহিক কঠোর কর্মসূচি এবং ব্রিক ফিল্ডের মাটি জোগান দিতে ফসলি জমির উর্বরতাপূর্ণ টপসয়েল কেটে নেয়ার জন্যে দালালদের হীন প্রয়াস বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণও প্রত্যাশা করছি। আমরা মনে করি, প্রধান খাদ্য ভাত (শে^তসার)-এর জন্যে ধানের উৎপাদনের সাথে মাছ (আমিষ) উৎপাদনের সমতা রক্ষা দরকার।

 

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়