প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
সাম্প্রতিক ক’বছরে বিশেষ করে বর্তমান নৌ-পুলিশ সুপার চাঁদপুরে কর্মরত থাকাকালীন নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে না, যেটা নিয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রচার করা যায়। নৌ-পুলিশের সাম্প্রতিক সময়ের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে অসন্তোষ নেই বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।
নৌ-পুলিশ নিয়ে অধিকাংশের ইতিবাচক ধারণা লালন করার মধ্যেই ১৭ অক্টোবর জানা গেলো নেতিবাচক ঘটনার খবর। চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন হরিণা নৌ-ফাঁড়ির পুলিশ সলেমান দর্জি (৪০) নামের এক জেলেকে আটক করলে স্থানীয় অন্যান্য জেলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে উক্ত ফাঁড়ি ঘেরাও করে। এ সময় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে।
নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলাকালে সলেমান দর্জিকে ইলিশ মাছসহ আটক করি। পরে তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার সময় স্থানীয়রা ফাঁড়ি ঘেরাও করে হামলা চালায় এবং তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় লোকজন বলেছেন ভিন্ন কথা। তাদের অভিযোগ, দাদনের পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে ট্রলারচালক সলেমান এলাকাতে আসার সময় তার থেকে উক্ত টাকা ছিনিয়ে নেয় হরিণা ফাঁড়ির নৌ-পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, তাকে ব্যাপক মারধরও করে। এর সাথে নিরাপরাধ দোকানদার সোহাগসহ আরো একজনকে জেলে সাজিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে নৌ পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মেঘনা-পদ্মায় জাটকা এবং মা ইলিশ রক্ষার অভিযান চালাতে গিয়ে নৌ-পুলিশের কর্মকর্তা ও প্রতিটি সদস্যকে জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। প্রায়শই জেলেদের হামলায় নৌ-পুলিশের সদস্যদের গুরুতর আহত হবার খবর পাওয়া যায়। ক’দিন আগে চাঁদপুর নৌ-থানার এক পুলিশ সদস্য মারমুখী জেলেদের হামলায় এতোটাই গুরুতর আহত হন যে, তাকে দ্রুত ঢাকায় পাঠাতে হয়েছে। এছাড়া অতীতের দিনগুলোতে নৌ-পুলিশের কারো কারো অঙ্গহানি ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
স্থলভাগে কর্মরত পুলিশের দায়িত্বপালনের চেয়ে নৌ-পুলিশের দায়িত্বপালনটা কমণ্ডবেশি একঘেঁয়েমিপূর্ণ, আর ঝুঁকিপূর্ণ তো বটেই। এমতাবস্থায় নৌ-পুলিশের কারো বিরুদ্ধে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়াটা দুঃখজনক। যেমনটি হরিণা ফাঁড়ির নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে। আমরা মনে করি, অতি দ্রুত তদন্ত করে সত্যতা উদ্ঘাটন করা দরকার। অন্যথায় জনমনে ভুল ধারণা বিরাজ করবে এবং নৌ-পুলিশ নিয়ে ইমেজ সঙ্কট তৈরি হবে।