প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
ব্রীজটির নির্মাণ কাজ নির্বিঘ্ন হোক
অনেক সঙ্কট, সমস্যা ও স্থবিরতার মধ্যে জানা গেলো একটি সুখবর। সেটি হচ্ছে ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সেতুবন্ধন রচনায় গতকাল রোববার উটতলী ব্রীজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান। তাঁর সাথে ছিলেন সাবেক সিনিয়র সচিব ও বর্তমানে কর্মসংস্থান ব্যাংকের চেয়ারম্যান নূরুল আমিন, যিনি সরকারি পদে যথাস্থানে অধিষ্ঠিত থেকে এ ব্রীজটির স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করার জন্যে যথাযথ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
|আরো খবর
ডাকাতিয়া নদীতে ৫৫০ ফুট দীর্ঘ এ ব্রীজটি ১৩টি স্প্যানের ওপর নির্মাণে ৬৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং দু দিকের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণে ৪৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মূল ব্রীজের টেন্ডার সম্পন্ন হওয়ায় গতকাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন সম্ভব হয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহমেদ জানান, ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরুর পর দু পাড়ের সংযোগ রক্ষাকারী অ্যাপ্রোচ সড়কের টেন্ডারও দ্রুত করা যাবে। বর্তমানে এ সড়কের এলাইনমেন্টের কাজ চলছে।
এ ব্রীজের নির্মাণ কাজের উদ্বোধক মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি বলেছেন, আমার ত্রিশ বছরের প্রচেষ্টার ফসল এই উটতলী ব্রীজ। ব্রীজটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে ফরিদগঞ্জের উত্তরাঞ্চল ও হাজীগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি সেতুবন্ধন রচিত হবে এবং এতদঞ্চলের অর্থনৈতিক বিপ্লব সাধিত হবে। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে গ্রাম থেকে উন্নয়ন যাত্রা শুরুর ক্ষেত্রে এ ব্রীজটি মডেল হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করছি।
বলা দরকার, যে কোনো অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করার সময় কিংবা প্রাক্কালে নানা আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না নির্মাণ কাজ শেষ করে সেটি ব্যবহার উপযোগী করা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই আশাবাদকে পরিহাসই মনে হয়। যেমন-চাঁদপুর সদর উপজেলা ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার সংযোগ রক্ষাকারী ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ সেতুর নির্মাণ কাজ যৌথভাবে উদ্বোধন করেছিলেন ডাঃ দীপু মনি এমপি (বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী) ও ড. মুহম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া এমপি (বর্তমানে সাবেক)। দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটির মূল কাজ বহু আগে সম্পন্ন হয়ে গেলেও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় সেটি উদ্বোধন করা যাচ্ছে না। আর দু উপজেলার আশাবাদী মানুষগুলোর অপেক্ষার যন্ত্রণাও যেন শেষ হচ্ছে না। অপেক্ষা করতে করতে এ সেতুটিকে নিয়ে শ্রুত আশাবাদ যেনো তাদের জন্যে পরিহাসে পরিণত হয়েছে।
আমরা চাই উটতলী ব্রীজের মূল কাজ ও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ নিয়ে যেনো দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি না হয়। নির্দিষ্ট সময়ে ব্রীজটির কাজ শেষ করার জন্যে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিকতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করি, স্থানীয় এমপি মহোদয় ব্রীজটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেই ক্ষান্ত হবেন না, সকল কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত ব্রীজটির জন্যে লেগে থাকবেন এবং কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখলেই সেটি দূর করার আন্তরিক প্রয়াস চালাবেন। আমাদের বিশ্বাস, উটতলী ব্রীজটির সকল কাজ যথাযথভাবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাবেক সিনিয়র সচিব নুরুল আমিনও দেখভাল করবেন কিংবা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখবেন।