সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২১, ০০:০০

এতো উন্নয়নের মাঝেও এ কোন্ দৃশ্য?
অনলাইন ডেস্ক

স্বাধীনতা অর্জনের পর পুরো সত্তরের দশক জুড়ে এবং আশির দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের গ্রাম ও শহরতলী, এমনকি কিছু শহরের রাস্তাগুলোতে বাঁশের সাঁকো, কাঠের সেতুর বিদ্যমানতা ছিলো সাধারণ দৃশ্য। পাকা সেতুর অভাবে গ্রাম পর্যায়ে সড়ক যোগাযোগ ছিলো বিঘিœত। আর বর্ষাকালে গ্রামের অভ্যন্তরে পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্যে বাঁশের সাঁকো ছিলো প্রধান ভরসা। বর্ষার আগমনে প্রতিটি গ্রামের মাতবর, মুরুব্বি শ্রেণীর কেউ কিংবা ইউপি মেম্বার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বাঁশ, গাছ, নগদ অর্থ উত্তোলন করে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করতো বাঁশের সাঁকো। আশির দশকে ক্ষমতাসীন এরশাদ সরকার দেশের সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে এতোটা মনোযোগী হয় যে, গ্রামীণ সড়কেও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মিত হতে দেখা যায়। যেখানে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে অসামর্থ্য অনুভূত হয়েছে, সেখানে মাটি দিয়ে খাল কিংবা অন্য কোনো জলাশয় ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এতে নৌ যোগাযোগ বিঘ্নিত হলেও মানুষ প্রতিবাদী হয়নি, বরং সড়কে হেঁটে স্বস্তি খোঁজার প্রয়াস চালিয়েছে। এভাবে এতোসব নানান কারণে গ্রাম পর্যায়ে বাঁশের সাঁকো দেখাটা এখন বিরল একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

আমাদের দেশে সরকারের সক্ষমতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রামীণ পর্যায়ে সড়ক-সেতু নির্মাণের পাশাপাশি ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সড়কের উন্নয়ন করছে, আর যত্রতত্র সেতু নির্মাণ করছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেতু নির্মাণে বরাদ্দের পর্যাপ্ততা কোথাও কোথাও এতোটা যে, সড়ক খুঁজে না পেয়ে ঠিকাদার মাঠের মাঝখানে, বাড়ির পেছনে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করে যথাসময়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশে বিল তুলে নিয়েছে। চাঁদপুর জেলার চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব ও কচুয়ায় নির্মিত এমন সেতু নিয়ে তো চাঁদপুর কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এসব সেতু মানুষের চলাচল নয়, ধান, খড়, কাপড় ইত্যাদি শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার কোথাও সেতু নির্মাণের জায়গা না পেয়ে পুরো বরাদ্দের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে খেয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উন্নয়নের ডামাঢোলে এবং বাস্তবতায় দেশের গ্রামীণ সড়কগুলোতে সেতু নির্মাণের বরাদ্দ যখন উদ্বৃত্ত(!), তখন কোথাও বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলের দৃশ্য সম্বলিত সংবাদ পত্রিকাসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে যদি চোখে পড়ে, তখন যে কারোরই বিস্ময়ের ঘোরে আবর্তিত হতে হয়। এমন একটি সংবাদই গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হয়েছে, যার শিরোনাম হয়েছে ‘বাঁশের সাঁকোই ২৫ পরিবারের চলাচলের ভরসা’। চাঁদপুর কণ্ঠের হাজীগঞ্জ ব্যুরো ইনচার্জ কামরুজ্জামান টুটুলের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে হাজীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল কালাচোঁ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে এমন বাঁশের সাঁকো ধরা পড়ায় তিনি সেটি ক্যামেরাবন্দী করে সংবাদ পরিবেশন করেছেন।

এই বাঁশের সাঁকোটি এমন একটি সংসদীয় এলাকায় (চাঁদপুর-৫) অবস্থিত, যাতে নির্বাচিত এমপি হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। তিনি হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তিতে ডাকাতিয়া নদীর ওপর একের পর এক ৭টি সেতু নির্মাণসহ বড় ধরনের অনেক কাজ করে নিজেকে উন্নয়নের কারিগর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বলে অধিকাংশজন মনে করেন। তাঁর এলাকায় বাঁশের সাঁকোর অস্তিত্ব নিতান্তই লজ্জাকর বলে সুধীজনের অভিমত। ইউপি চেয়ারম্যান বরাদ্দ আসা মাত্র উক্ত বাঁশের সাঁকোর স্থলে রাস্তা নির্মাণের যে আশ্বাস দিয়েছেন, সেটি যথাযথভাবে রক্ষার জন্যে আমরা তার প্রতি জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়