প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
বিষয়টিতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে ‘ভূমি অফিসের ভুল রিপোর্টের জের : ফরিদগঞ্জে জমি থেকে উচ্ছেদ করতে অসহায় পরিবারের ওপর মিথ্যা মামলার অভিযোগ’। ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদক এ সংবাদটি পরিবেশন করেছেন। সংবাদটিতে তিনি লিখেছেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিনের তিন ছেলে রুস্তমপুর মৌজায় ৪৮.৬২ শতক জমি পিতার ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে ভোগদখলে রয়েছেন। বাড়িতে তিন ভাইয়ের তিনটি ঘর রয়েছে। এছাড়া বাড়ির পশ্চিম পাশের ডোবায় মাছ চাষ ও ওপরের অংশে সবজি চাষ করে আসছেন তারা।
|আরো খবর
এই জমির অন্যতম ভোগদখলকারী ফরিদ মৃধা জানান, প্রতিবেশী প্রভাবশালী ঢাকার মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাহার ও তার ভাই মোজাম্মেল হোসেন বাবু তাদের জমির মূল্য বাড়াতে তাদের তিন ভাই যথাক্রমে ফয়েজ আহমেদ মৃধা, ফরিদ মৃধা ও সোহাগ মৃধাকে নানাভাবে হয়রানি শুরু করেন। একাধিকবার প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা করে তাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। ফরিদ মৃধা বলেন, চলতি বছরের ১৩ মে রুস্তমপুর বাজারে জনসম্মুখে আমাকে ও আমার ভাই ফয়েজ আহমেদ মৃধাকে বেধড়ক মারধর করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বাধ্য হয়। এমতাবস্থায় তারা নিজেরা বাদী না হয়ে তাদের প্রতিবেশী দেলোয়ার হোসেনকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। ১৪৫ ধারায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করার জন্যে আদালত ফরিদগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসকে নির্দেশনা দেয়। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ এ অফিসকে ম্যানেজ করে তাদের পক্ষে জমির মিথ্যা দখল-রিপোর্ট করিয়ে নেয়। অথচ আজ পর্যন্ত সেই জমিতে আমরা বসবাস করছি। ফলে গত ১২ সেপ্টেম্বর এ রিপোর্টের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সপ্তাহের প্রতি বুধবার গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক স্বয়ং এই গণশুনানি পরিচালনা করেন। ফরিদগঞ্জের ফরিদ মৃধা গং তাদের বিষয়টি নিয়ে এই গণশুনানিতে আসা উচিত। যদি তারা না আসেন, তাহলে চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের আলোকেও জেলা প্রশাসক ফরিদগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক প্রদত্ত ভুল রিপোর্টের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন বলে আমরা মনে করি।
বলা দরকার, দেশের ভূমি প্রশাসনে পূর্বের তুলনায় অনেক স্বচ্ছতা আসলেও কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বভাবে এখনও পরিবর্তন আসেনি। ফলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্তরিক প্রয়াস ভেস্তে যাবার উপক্রম হয়। ভূমি অফিসে সাধারণ মানুষের হয়রানি পুরোপুরি কমেনি কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির অবৈধ সুবিধা আদায়ের ফন্দি-ফিকিরের কারণে। আশা করি ‘জমি তার দলিল যার’ আইনটি বাস্তবায়ন শুরু হলে এসব প্রভাবশালীর কিংবা ভূমিদস্যুদের দাপট কমবে এবং ভূমি অফিসের চিত্র পাল্টাবে।