শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

অপরিসীম ত্যাগে ভাস্বর শোকাবহ পনর আগস্ট
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের জাতির পিতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। অথচ তাঁকেই কিনা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে স্বাধীনতার ৩ বছর ৭ মাস ২৯ দিনের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্য আত্মস্বীকৃত খুনি হিসেবে নিজগৃহে নির্মমভাবে সপরিবারে ও আত্মীয়-স্বজনসহ হত্যা করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর মতো কিছু রাষ্ট্রনায়ক আততায়ী কিংবা আত্মস্বীকৃত খুনিদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো সপরিবারে ও আত্মীয়-স্বজন সহ অন্য কাউকে প্রাণ হারাবার ইতিহাস জানা যায় নি।

আমাদের ভারত উপমহাদেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অনেক ঘটনা আছে। ১৯৪৮ সালে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী উগ্রবাদী হিন্দু নথুরাম গড্সের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দিল্লীতে নিজ কার্যালয়ে দুই দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। পরবর্তীতে তাঁর পুত্র রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়ে ১৯৯১ সালের ২১ মে এলটিটিই জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ২০০৭ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারালেন। এছাড়া আমেরিকার বহুল আলোচিত ১৬তম প্রেসিডেন্ট ১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল ওয়াশিংটনের ফোর্ড থিয়েটারে নাটক দেখার সময় আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান। আমেরিকার নোবেল বিজয়ী মানবাধিকার কর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান। একইভাবে ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর আমেরিকার ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডী প্রাণ হারান। ১৯৭৫ সালের ২৫ মার্চ সৎ ভাইয়ের ছেলে মুসাইদের রিভলভারের গুলিতে নিজ বৈঠক ঘরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সৌদি আরবের জনপ্রিয় বাদশাহ ফয়সাল। বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই হত্যাকাণ্ডের ৪ মাস ২০ দিনের মাথায় বাংলাদেশে নিজগৃহে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু ব্যতীত বিশ্বের প্রাগুক্ত নেতৃবৃন্দ ব্যক্তিগতভাবে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। কাউকেই স্ত্রী-পুত্র, পুত্রবধূসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং ভাই-ভাগ্নে ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন সহকারে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়নি। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গবন্ধুর পাহাড় পরিমাণ আত্মত্যাগের অপরিসীম-অমূল্য এক বিরল দৃষ্টান্ত। খুনিদের উদ্দেশ্য ছিলো বঙ্গবন্ধুর নামণ্ডনিশানা মুছে ফেলে তাঁর আদর্শের কবর রচনা করা। কিন্তু তাদের সে উদ্দেশ্য মোটেও সফল হয়নি। খুনিরা ভেবেছিলো, প্রবাসে থাকা বঙ্গবন্ধুর দু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে গেলেও তাঁর পিতার আদর্শের ধ্বজা কোনোদিনও উড্ডীন করতে পারবেন না। খুনিরা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার যাতে না হয় সেজন্যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির ব্যবস্থা করে। কিন্তু খুনিদের ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে নির্বাসিত জীবন শেষে শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেন, সভানেত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত ও পুনর্গঠিত করলেন। ক্ষমতায় আসলেন, বিতর্কিত সেই অধ্যাদেশ বাতিলের ব্যবস্থা নিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করলেন, বিচারের রায়ও কার্যকর করলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায়ও কার্যকর করতে পিছপা হলেন না। দেশ ও জাতিকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে দেশকে নিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে যেনো অদম্য গতিতে ধাবমান আছেন। পিতার ন্যায় তাঁকেও বারবার হত্যার প্রয়াস চালালেও তিনি হতোদ্যম হননি। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে রোল মডেল করেছেন এবং নিজেও বার বার সম্মানিত হয়ে চলছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়