সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২২, ০০:০০

তাদের সবখানেই যাওয়া উচিত
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তার সক্রিয় কর্মতৎপরতায় একের পর এক আশার আলো ছড়িয়ে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছেন। তিনি বুধবার একটি প্রাইভেট হাসপাতাল এবং দুটি কুরিয়ার সার্ভিসে গিয়ে ভোক্তাস্বার্থবিরোধী অনিয়ম পেয়ে জরিমানা আরোপ ও আদায় করেন। কথা হচ্ছে, তার কি সর্বত্র যাওয়ার অধিকার ও সাহস আছে?

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)সহ আরো অনেকের আন্দোলনের ফসল হিসেবে ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন পাস হয় এবং এর কার্যকর প্রয়োগের জন্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর হয়েছে। উক্ত আইনের ৮২টি ধরা আছে। এ আইন অনুযায়ী ক্রেতা বা ভোক্তা যেসব বিষয়ে প্রতিকার চাইতে পারেন তা হলো : বিক্রেতার পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয় করা, পণ্য মজুত করা, ভেজাল পণ্য বিক্রয়, খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা প্রতারণা করা, প্রতিশ্রুত পণ্য সরবরাহ না করা, ওজনে ও পরিমাপে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপের ক্ষেত্রে ফিতায় কারচুপি, নকল পণ্য প্রস্তুত, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয় ও অবহেলা।

এ আইনটি পাস হবার পর তেরো বছরের অধিক সময়ে এ আইনটি সম্পর্কে ব্যাপক জানান দেবার জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে এবং ক্যাবের পক্ষ থেকে যেভাবে প্রচার-প্রচারণাসহ আনুষঙ্গিক পদক্ষেপ নেয়াটা প্রত্যাশিত ছিলো, বস্তুত সেটা লক্ষ্য করা যায় নি। যার ফলে ক্রেতা বা ভোক্তাদের সচেতন একটি ক্ষুদ্র অংশ ছাড়া বৃহদাংশ এ আইনটি সম্পর্কে অনবহিত ও উদাসীন রয়ে গেছে। পরিণামে বিক্রেতাদের অনিয়ম, প্রতারণা ইত্যাদি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হ্রাস পায় নি।

চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূর হোসেন প্রতি সপ্তাহের কর্মদিবসের অধিকাংশ দিনই কোনো না কোনো অভিযান পরিচালনা করেন। এজন্যে তিনি পুলিশের সহযোগিতা ও সমর্থনও পাচ্ছেন বেশ। তারপরও কথা উঠেছে, তিনি কি সবখানেই যেতে পেরেছেন? নিশ্চয়ই নয়। এক্ষেত্রে তিনি জনবল সঙ্কটসহ আনুষঙ্গিক সীমাবদ্ধতায় যে ভুগছেন না কিংবা এ সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে পারছেন না-এটা জোর গলায় বলা যায় না।

যেমন ধরুন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূর হোসেন চাঁদপুর লঞ্চঘাট, বাস স্ট্যান্ড ও রেল স্টেশনে টিকেট বিক্রি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে কতোবার যেতে পেরেছেন? তিনি কি দেশের প্রসিদ্ধ ইলিশ অবতরণ ও বিপণন কেন্দ্র চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে যেতে পেরেছেন? সাম্প্রতিক সময়ে ইলিশের ব্যাপক আমদানিতে এ মাছঘাট সয়লাব হয়ে গেলেও প্রতি কেজি ইলিশের মূল্য ছয়শ’ টাকার নিচে না নামা এবং ক্রেতাদের প্রতারিত হবার বিষয়ে কি তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে পেরেছেন? ক্ষুদ্র জনবল নিয়ে মাছঘাটের বৃহৎ পরিসরে যাবার সাহস তার নেই-এ কথা বলার অবকাশ কারো না থাকলেও নানা চাপা গুঞ্জন কিন্তু বাতাসে বিরাজ করে। সেজন্যে বলছি, পরিস্থিতি মোকাবেলায় অক্ষমতার আভাসে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বৃহৎ পরিসরের কোথাও আইনি ব্যবস্থা নিতে না পারলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সেখানে যাওয়া উচিত এবং সতর্ক করা উচিত। এতে কাজ না হলেও বৃহৎ জনবলে বিরাট অভিযান পরিচালনার তাগিদ যে তৈরি হবে কিংবা সচেতনদের কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হবে-এটা হলফ করে বলা যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়