প্রকাশ : ২২ মে ২০২২, ০০:০০
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুরোধে প্রচারণা জরুরি
সারাদেশের পরিসংখ্যান পুরোপুরি জানা না গেলেও চাঁদপুর জেলার বিষয়ে এটা জানা যায় যে, এ জেলায় প্রায়শই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এমনটি ক’বছর পূর্বে বর্তমানের মতো ছিলো না। সত্তরের দশকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ছিলো সর্বাধিক। কেননা তখন বাসা-বাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহারের বিষয়টি সহজলভ্য ও সহজসাধ্য ছিলো না। সেজন্যে সৌখিন ও বিলাসী মানুষ বৈদ্যুতিক হিটার ব্যবহার করে রান্নার কাজ করতো। এর ফলে অসাবধানতাবশত গৃহিণী ও রান্নার সাথে সংশ্লিষ্টরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হতাহত হতো এবং তাদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে পরিবারের অন্যরাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হতাহত হতো। ওই দশকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি পরিবারের সকল সদস্য মৃত্যুবরণ করার বিয়োগান্তক ঘটনাও ঘটেছে। তখন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কেবল বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ করতো। সত্তরের দশকের শেষ দিক থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডও গ্রামীণ পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ শুরু করে এবং বর্তমানে শহর ও গ্রাম মিলিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডই দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রধান দায়িত্বে নিয়োজিত। সেজন্যে দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরে অতীতের চেয়ে অনেক বেশি জনবল কাজ করছে। অথচ বিদ্যুৎজনিত দুর্ঘটনায় হতাহতের হার ক্রমশ বেড়েই চলছে। মাঠ পর্যায়ে এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর প্রচারণার অভাবে তথা জনসচেতনতা সৃষ্টির ঘাটতিহেতু এমনটি ঘটছে বলে সাধারণ পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
|আরো খবর
পিতার বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে। কলেজ পড়ুয়া সন্তান সে ব্যবসা দেখাশুনা করেন। এমন সন্তানের অবশ্যই বিদ্যুৎ সম্পর্কিত সকল কিছু কমণ্ডবেশি জানা থাকার কথা। অথচ এমন সন্তানই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার নাম রাকিব (১৭)। গত শীতে রাকিবসহ স্থানীয় একদল যুবক হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বেলচোঁ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্ট বানায়। সেই কোর্টে লাগানো বিদ্যুতের তার আর খোলা হয়নি। শুক্রবার বিকেলে রাকিব নিজে সেই তার খুলতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলে মারাত্মক আহত হন। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে পথিমধ্যে তিনি মারা যান। তিনি তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তিনি ছিলেন স্থানীয় কাজিরখিল গ্রামের মিজি বাড়ির বাসিন্দা। তার বাবা ইলেকট্রিক সামগ্রীর ব্যবসায়ী মিজান মিজি।
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শুধু রাকিবের মতো বয়সী লোকজনই মারা যাচ্ছে না, শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষই মারা যাচ্ছে। এর কারণ অসচেতনতা ও উদাসীনতা এবং এগুলো নিরসনে মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বত্র সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক প্রচারণার অভাব। এ অভাব দূর করতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়কে করণীয় নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে খুবই গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে বলে মনে করি।