শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

চাঁদপুর শহরে যানজট নিরসনের নূতন প্রস্তাবনা প্রসঙ্গে

অতি সম্প্রতি চাঁদপুর জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় চাঁদপুর শহরের যানজটই আলোচ্য বিষয় হিসেবে বেশ প্রাধান্য পেয়েছে। এ সভায় যানজট নিরসনে বাইপাস সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবনা এসেছে, যেটি জরিপ, পরিকল্পনা, বাজেট, অর্থ বরাদ্দসহ দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও সময়সাপেক্ষ বিষয়। তার আগে যানজটে চাঁদপুরবাসীকে নাকাল অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্যে দ্রুত কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায় সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। এরই মধ্যে গত রোববার অনুষ্ঠিত হলো জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। এ সভায় চাঁদপুর শহরের যানজট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। বলা হয়, যানজট এই শহরের মহাসমস্যা। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন ইচলী লঞ্চঘাট পুনরায় চালু করার প্রস্তাব করেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বিআইডব্লিউটিএ-এর উপ-পরিচালক কায়সারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ফরিদগঞ্জ, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ সন্নিহিত অঞ্চলের যাত্রীদের জন্যে ইচলী ঘাট চালু করার প্রস্তাবনা সময়োপযোগী। চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসন করতে ইচলী লঞ্চঘাট চালু করা যেতে পরে। এছাড়া লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষেরও ইচলীতে লঞ্চ ভিড়ানোর ব্যাপারে মৌন সমর্থন রয়েছে। জেলা প্রশাসক বিআইডব্লিউটিএকে লঞ্চ মালিকদের সাথে আলোচনা করে ইচলী লঞ্চঘাট চালু করার অনুরোধ জানান।

চাঁদপুর শহরের যানজট পুরোপুরি না হোক, উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাসের ক্ষেত্রে ইচলী লঞ্চঘাট পুনরায় চালুর প্রস্তাবনা গ্রহণ ও কার্যকর করা হলে সেটি সুফল দিতে পারে। তবে চাঁদপুর জেলার চাঁদপুর সদর ও ফরিদগঞ্জসহ লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার লোকজন ঢাকা যাওয়ার ক্ষেত্রে ইচলী থেকে লঞ্চে আরোহনকে বেশ সুবিধাজনক ভাবলেও ঢাকা থেকে ইচলী যাওয়ার আগে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নেমে যাওয়াকে সময় বাঁচানোর উপায় হিসেবে ভাবে। এদের মধ্যে অনেক বেয়াড়া যাত্রী ঢাকা-ইচলী টিকেট কেটেও চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নামে এবং সিএনজি অটোরিকশাযোগে দ্রুত গন্তব্যে যাবার প্রয়াস চালায়। এদের ভাড়া করা অটোরিকশাগুলোর বাড়তি চলাচলের চাপ কিন্তু চাঁদপুর শহরের রাস্তাগুলোকেই বহন করতে হয়। এমনটি আমরা নিকট অতীতে ইচলী লঞ্চঘাট চালু অবস্থাতেই প্রত্যক্ষ করেছি। নিকট ভবিষ্যতে ইচলী লঞ্চঘাট চালু হলে উক্ত বেয়াড়া যাত্রীদের সময় বাঁচানোর মানসিকতায় পূর্ববর্তী ঘাট হিসেবে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নেমে যাবার প্রবণতা রোধ করা যাবে কিনা, সেটা কিন্তু ভেবে দেখার বিষয়। এজন্যে কাউন্সেলিংয়ে কোনো কাজ হবে কিনা সেটাও বিচার্য বিষয়।

ইচলী লঞ্চঘাট পুনরায় চালু করে চাঁদপুর শহরকে সারা বছর যানজট মুক্ত রাখার নিশ্চয়তাও নেই। কেননা ভর বর্ষায় বিশেষ করে বন্যাপ্রবণ সময়টাতে ৩-৪ মাস চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেডের নিকটস্থ ডাকাতিয়া-মেঘনার মিলনস্থলের ঘূর্ণাবর্ত বিপজ্জনক আকার ধারণ করলে ইচলী পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই ঘূর্ণাবর্তকে এড়ানোর জন্যেই ডাকাতিয়ার তীর থেকে বহু পুরানো লঞ্চঘাট মেঘনা তীরবর্তী বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। এক সময় এটি বিকল্প লঞ্চঘাট থাকলেও বর্তমানে স্থায়ী লঞ্চঘাটে রূপান্তরিত হয়েছে এবং আধুনিকায়নের জন্যে ব্যয়বহুল প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেজন্যে চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসনের টেকসই সমাধান হলো বাইপাস সড়কের পরিকল্পনা গ্রহণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন। আশা করি, এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি ও শিক্ষামন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়র সমন্বিতভাবে কাজ করবেন।

চাঁদপুর শহরে যানজটের মহাসমস্যা সাময়িক লাঘব বা সমাধানের জন্যে তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে আমরা মনে করি। সেগুলো হচ্ছে : চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড় তথা শপথ চত্বরের ভেঙ্গে ফেলা ভাস্কর্যের সীমানা রেলিং যতো দ্রুত সম্ভব অপসারণ, চাঁদপুর টাওয়ারের দক্ষিণ পাশর্^স্থ সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড স্থায়ীভাবে অপসারণ, দিনের বেলা পিক আওয়ারে তেলের লরি/ট্রাক চলাচল কয়েক ঘন্টা বন্ধ রাখা, কিছু সড়ককে ওয়ানওয়ে করে দেয়া, ট্রাফিক পুলিশের সাথে ঈদ উপলক্ষে রিজার্ভ পুলিশ থেকে কিছু কনস্টেবলকে কাজ করার জন্যে সাময়িক দায়িত্ব দেয়া এবং চাঁদপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে সবসময়ের জন্যে চাহিদানুসারে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ক’টি স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সহযোগী হিসেবে লোকজন নিয়োগ দেয়া। আমরা এসব পদক্ষেপের ব্যাপারে আন্তরিকতার সাথে ভেবে দেখার জন্যে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জ্ঞাপন করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়