প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে বহু কমিটি রয়েছে। সব কমিটির সভা ও সিদ্ধান্তের বিষয় সাধারণ্যে খুব আলোচিত হয় না। তবে কিছু কমিটির সভা ও সিদ্ধান্তসমূহ খুবই আলোচিত হয়, এমনকি আলোড়নও সৃষ্টি করে। এর মধ্যে অবশ্যই জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি এবং উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি উল্লেখযোগ্য। এ দুটি কমিটির সভায় মন্ত্রী, এমপি, সচিব কিংবা পদস্থ অন্য কর্মকর্তাকেও উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। তাঁদের নির্দেশনামূলক বক্তব্যে একটি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নয়ন সাধিত হয় এবং উন্নয়নমূলক কাজে গতি সঞ্চারিত হয়। আবার এমনও দেখা যায়, সভার নামে গতানুগতিক সভা হয়, কিন্তু সভার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় না।
আমাদের রাজনীতিবিদ কিংবা জনপ্রতিনিধিদের অধিকাংশই যে কোনো সভায় প্রতিশ্রুতি/আশ^াসের ফুলঝুরিতে অংশগ্রহণকারীদের মন ভরিয়ে দেন। এমন মনভরানোর কাজটা আমলাদের অনেকেই রপ্ত করেছেন। এই আমলারা তাদের সভাপ্রধানে আয়োজিত যে কোনো সভায় নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচিতে বেশিক্ষণ না থেকে দ্রুত আশ^াস/প্রতিশ্রুতিমূলক বক্তব্যে সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হন। পরবর্তীতে দেখা যায়, এমন সিদ্ধান্তের নব্বই ভাগ কার্যকর হয় না। সেজন্যে অংশগ্রহণকারীদের চাপা ক্ষোভ এবং সভার বাইরে এসে কটু কথা বলতে দেখা যায়।
চাঁদপুরে প্রাগুক্ত সভা সমূহ নিয়ে অতীত অভিজ্ঞতায় জনমনে নেতিবাচক ও ইতিবাচক দুটি ধারণাই রয়েছে। দেখা গেছে, সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয় যতোটা গুরুত্ব সহকারে, ততোটা গুরুত্বে সেটা বাস্তবায়ন হয় না, আবার হলেও সেটা আংশিক হয়। এজন্যে এমন সকল সভার সিদ্ধান্তকে গতানুগতিক ভাবাটাই স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ৯ জানুয়ারি রোববার জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় দুর্ঘটনা রোধে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে টিকার কাজ সম্পাদন, কওমি মাদ্রাসার তালিকা তৈরি, মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগানো, গ্রাম আদালতে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকরণ, করোনা মোকাবেলায় ভার্চুয়ালি সভা ইত্যাদি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এক নজরে এ সিদ্ধান্তগুলোকে সুন্দরই মনে হয়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে সব ক’টি সুষ্ঠুভাবে কার্যকর বা বাস্তবায়ন হয় কিনা সেটিই দেখার বিষয়।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ আইন শৃঙ্খলা কমিটির উক্ত সভায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)কে বলেছেন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ও রেজিস্ট্রেশনভুক্ত যানবাহনের তালিকার আপডেট তথ্য প্রতিমাসের সভায় জানাতে হবে। সিএনজি অটোরিকশা চালকদেরকে প্রশিক্ষণের জন্যে বাধ্য করতে হবে। এখন দেখার বিষয়, বিআরটিএ জেলা প্রশাসকের এ নির্দেশনা কতোটুকু মানে। কেননা অতীতে বিআরটিএ’র নির্দেশনা মানার হার খুব সন্তোষজনক ছিলো বলে আমাদের জানা নেই।