প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৫, ০৯:২৩
অপকর্মের হোতাদের রাজনৈতিক পরিচয়ে ব্যবস্থা নিন

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ‘হানারচরে ডিবি পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ যুবদল নেতা আটক’ শিরোনামের সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৩নং হানারচর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মালকে ইয়াবাসহ আটক করেছে ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ জুন ২০২৫) রাতে চাঁদপুর শহরের ২নং ওয়ার্ডে পশ্চিম জাফরাবাদ চালতা গাছতলায় ভাড়াটিয়া বাসা থেকে মাদক ব্যবসায়ী মাহবুব মালকে আটক করা হয়েছে। ডিবি পুলিশের হাতে আটক হওয়া মাহবুব মাল হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের ৫নং ওয়ার্ড বেড়িবাঁধের পাশের বাসিন্দা মৃত জলিল মালের ছেলে। সে দীর্ঘদিন যাবত রাজনৈতিক দলের প্রভাব দেখিয়ে হরিণা ফেরিঘাট ও শহরের পশ্চিম জাফরাবাদ এলাকায় বাসা ভাড়া থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক চরাঞ্চলে পাচার করে আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে চাঁদপুর ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় তার সাথে থাকা ৪০ পিচ ইয়াবা জব্দ করে তাকে আটক করা হয়। ডিবির হাতে আটক হওয়া মাদক ব্যবসায়ী মাহবুব মাল নিজেকে ৫নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাহবুব মালের সহযোগী হানারচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের শাহজাহান আখনের ছেলে সোহাগ আখন পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে আটক মাহবুব মালকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
হানারচর ইউনিয়ন এলাকা সূত্রে জানা যায়, হরিণা ফেরিঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় আগে মাদকের নিয়ন্ত্রণ ছিলো স্থানীয় আওয়ামী লীগের হাতে। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর বিএনপি নামধারী কতিপয় লোক গোপনে মাদক কারবারের সাথে জড়িত। এদেরকে ইউনিয়নের কিছু নেতা শেল্টার দিচ্ছে। এখানকার চিহ্নিত কিছু দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগ-বিএনপি রাজনীতিকে অবৈধ পন্থায় টাকা কামানোর ধান্দায় ব্যবহার করে। এলাকায় অভিযোগ রয়েছে, আগে আওয়ামী লীগের লোকজন যেসব কাজে জড়িত ছিলো, এখন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চিহ্নিত লোকগুলো সেই কাজে লিপ্ত। তাদের ভেতর আদর্শিক রাজনীতি কম। মূলত এলাকার আধিপত্য ধরে রাখার জন্যেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নামধারী দুই থেকে তিনটি গ্রুপ সব সময় সক্রিয় থাকে এবং রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে মাদক, অবৈধ বালু ব্যবসা, নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ ধরতে জেলেদের প্রশ্রয় ও ফেরিঘাট নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তাদের দখলে। আর সরকার পরিবর্তন হলে এক দলের জায়গায় আরেক দলের লোকজন সেখানে অবস্থান নেয়।
যুবদল নেতা মাহবুব মাল মাদকসহ পুলিশের হাতে আটকের পর যুবদল ও বিএনপি থেকে ঊর্ধ্বতন কোনো নেতা তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার প্রকাশ্য চেষ্টার খবর পাওয়া যায় নি। এটি একটি আশাপ্রদ বিষয়। সে আলোকে আমরা আশা করবো, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি সহ যে কোনো অপকর্মে প্রকাশ্য-গোপনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে, আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে বিএনপির জেলা ও উপজেলা কমিটির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়াটা বাঞ্ছনীয়। এতে দলের ভেতরে-বাইরে দুর্বৃত্তায়ন রোধ হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের তৎপরতা চালাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে।