প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
এমন প্রবণতা বন্ধের কার্যকর উপায় খুঁজুন
ধর্ষণমুক্ত স্থান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কোথাও বেশি, কোথাও কম। আমাদের চাঁদপুর জেলার সকল উপজেলাতে প্রায়শই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু ধর্ষক কর্তৃক ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা এবং সেটা অনলাইনে বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে দেবার হুমকি দিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করার উল্লেখযোগ্য ঘটনা ফরিদগঞ্জ উপজেলাতে তুলনামূলকভাবে বেশি ঘটছে বলে সাধারণ পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে। এটা কেনো সেটা নিয়ে জনমনে কম-বেশি কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে, যেটা অবশ্যই স্বাভাবিক।
|আরো খবর
ফরিদগঞ্জের গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টাও করা হয়। এ ব্যাপারে ৯ জানুয়ারি ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে কিছু বখাটে ওই স্কুলছাত্রীকে প্রায়শই উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমতাবস্থায় গত ৯ জানুয়ারি রোববার ছাত্রীটি বাড়ি ফেরার পথে কথিত যুবলীগ নেতা শিমুলসহ ক’জন বখাটে তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। শুধু তা-ই নয়, ধর্ষণের ভিডিও পর্যন্ত ধারণ করে। পরে ওই ছাত্রী কোনো রকমে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে এসে জানালে সন্ধ্যায় তার মা বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানার ওসি মোহাম্মদ শহিদ হোসেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের আশ^াস দিয়েছেন।
ফরিদগঞ্জে ইতিপূর্বে গৃহবধূ/প্রবাসীর স্ত্রী, কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়া এবং ধর্ষণের ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেবার হুমকিতে বার বার ধর্ষিতা হবার কিছু ঘটনায় থানায় অভিযোগ/মামলা দায়ের হয়েছে। তার তদন্তে কী অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বা হচ্ছে সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু পুলিশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়নি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের অনুসন্ধিৎসা থেকে জেনে ফলোআপ সংবাদও পরিবেশন করেনি। যদি এমনটি হতো, তাহলে ধর্ষণের ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমতো বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।
ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও সংক্রান্ত ঘটনার ফলোআপের ক্ষেত্রে কেবল পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীরা দায়ী-এমনটি ঢালাওভাবে বলার অবকাশ নেই। কারণ, এ সংক্রান্ত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সহ বিভিন্ন প্রভাবশালীর চাপে ধামাচাপা পড়ে কিংবা আপসরফায় পর্যবসিত হয়। বস্তুত এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তীতে অনুরূপ ঘটনা সংঘটনের বিষয়টি প্রশ্রয় পায়। এটি আমাদের বিশ্লেষণ। তবে এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা, এ প্রবণতা রোধের উপায় খুঁজে বের করা যায় কিনা সেটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।