প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর কণ্ঠের অনলাইন ভার্সন ও আমার আত্মতৃপ্তি
সমাজের অনিয়ম ও অসঙ্গতি তুলে ধরার অন্যতম হাতিয়ার সংবাদপত্র। বস্তুত কোনো ঘটনাকে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যায় আবদ্ধ কিংবা সংজ্ঞায় সীমাবদ্ধ করাই হলো সংবাদপত্রের কাজ। কেননা সময়ের পরিক্রমায় সংবাদের মানদ- ও কাঠামো পরিবর্তিত হয়েছে। তবে এক কথায় বলা যায়, সংবাদ হলো চলতি ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ বিবরণ, যা পাঠকের আগ্রহ উদ্দীপিত করে। এ কথাটাকে একটু কঠিন করে বললে এভাবে বলা যায় : স্থিতাবস্থার পরিবর্তনে সৃষ্ট ঘটনা, যাতে সমাজে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং যা অবশ্যই সত্য, বস্তুনিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ, তাকে সংবাদ বলে। এজন্যে সংবাদ বিশ্লেষকরা বলেন, news must be new. ইংরেজি চার দিকের নামণ্ড North, East, West, South । এই চারটি দিকের নামের প্রথম একটি করে বর্ণ একত্রিত হয়ে news শব্দটি গঠিত হয়। মানুষকে কেন্দ্র করে, মানুষকে উপজীব্য করে এবং মানুষের প্রয়োজনে কোনো মাধ্যমে যা প্রকাশিত ও প্রচারিত হবে তা-ই সংবাদ। লেনিন সংবাদপত্রকে বলতেন যৌথ সংগঠক। বাস্তব সত্যি হলো, কারো পক্ষেই দেশের সব মানুষ সম্পর্কে জানা বা সব এলাকার খোঁজ রাখা সম্ভব নয়। এভাবে দিনে দিনে সংবাদপত্র তার পাঠকের মনে দেশ, দেশের জীবনযাত্রা এবং বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা গড়ে তোলে। সংবাদপত্র হিসেবে এ কাজটি দীর্ঘ ২৯ বছর সুনামের সাথে করে যাচ্ছে চাঁদপুর কণ্ঠ।
|আরো খবর
আমি গর্ববোধ করি এজন্যে যে, আমি চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের একজন সদস্য। ১৯৯৯ সালে যখন আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়ি, তখন কলেজ লাইব্রেরীর পেপার স্ট্যান্ডে জাতীয় দৈনিকের পাশাপাশি চাঁদপুর কণ্ঠ পড়ে নিতাম। শুক্রবারসহ বন্ধের দিনগুলোতে না পড়লে চাঁদপুর সম্পর্কে কিছু জানা হতো না। প্রথমাবস্থায় সাপ্তাহিক চাঁদপুর কণ্ঠ নামে এটি জেলায় সাড়া ফেলেই দৈনিকে রূপান্তরিত হয়। যা বর্তমানে চাঁদপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষের প্রতিদিনের অজানাকে জানার মাধ্যম হিসেবে তৈরি হয়েছে। ২০১৪ সালের পূর্বে আমি পত্রিকাটির একনিষ্ঠ পাঠকই ছিলাম, সেখান থেকে মনের মধ্যে একটা কামনা ছিলো কীভাবে এই পত্রিকার সাথে যুক্ত হওয়া যায়।
পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে না হলেও অবশেষে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের সাথে যুক্ত হওয়ার পথটি সুগম করেন বহু সাংবাদিক গড়ার কারিগর, পত্রিকার প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত। পেশাদারিত্ব অর্জনের জন্যে একজন সাংবাদিকের দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখাটা জরুরি। তবে পেশাদারিত্বের বাইরে আমাকে নিয়মিত দেশ-বিদেশের সংবাদপত্র পড়া, টেলিভিশনের নিউজ চ্যানেলগুলো অনুসরণ করা, ইন্টারনেটে খবর ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলির দিকে নজর রাখতে হয়। কারণ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে আমাকে চাঁদপুর কণ্ঠের সিস্টেম ডেভলপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আর সেই থেকেই চেষ্টা করছি পত্রিকার উন্নয়নে গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে সংবাদ কীভাবে মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়া যায়।
একটা কথা সব সময় মনের মধ্যে আগলে রাখি, ভালো সাংবাদিক হওয়ার জন্যে গুরুত্বর্পূণ হলো ভালো পত্রিকা ও সম্পাদক। আর চাঁদপুর কণ্ঠের ভালো সম্পাদকীয় নীতির কারণে আজকে পত্রিকাটি ২৯ বছর পেরিয়ে ৩০ বছরে পদার্পণ করেছে। পূর্বের চেয়ে সাংবাদিকতার জগৎটি এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। সংবাদপত্রের পাশাপাশি নতুন নতুন মিডিয়া বিশেষ করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, এফএম রেডিও ও সর্বশেষ ইন্টারনেটভিত্তিক পত্রিকা, ফেসবুক, টুইটার এখন সংবাদের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। যে কোনো ঘটনা বা সংবাদ গণমাধ্যমে আসার পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে আসে। তাই প্রতিনিয়ত টিকে থাকতে হয় একটা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। আর বাংলাদেশে এই পেশার অনেক সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে। আর জনগণের চাহিদা মেটাতে চাঁদপুর কণ্ঠ অনলাইন চাঁদপুরের মধ্যে সবচে’ পুরানো। এখন সকালের সূর্য ওঠার আগে ছাপানো পত্রিকা হাতে আসার পূর্বেই বিশ্বের যে কোনো দেশের মানুষে যে কোনো স্থান থেকে ক্লিক করলে পেয়ে যাচ্ছে চাঁদপুর কণ্ঠের বিভিন্ন সংবাদ।
পাঠক অনলাইন মাধ্যমের সংবাদে যদি পরিপূর্ণ তৃপ্ত না হন তখনই চাঁদপুর কণ্ঠের প্রিন্ট ভার্সনে নিউজ পেয়ে যান রাত পোহালেই। কোনো স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনার নির্যাস অনলাইনের পাশাপাশি প্রিন্ট ভার্সনের মাধ্যমে পাঠকের কাছে পৌঁছে যায়।
অনলাইন ভার্সনে পরের দিনের সংবাদের দিকে এখন তাকিয়ে থাকতে হয় না। অনুষ্ঠানস্থলে বসেই তার অনুষ্ঠানের সংবাদ হাতের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পারছে। তাই অবাধ তথ্য প্রবাহ ও পরিবেশনে চাঁদপুর কণ্ঠ অনলাইন এখন শীর্ষে অবস্থান করছে। যে কোনো ঘটনা অনলাইন ভার্সনের ফলে হাতের মুঠোর স্মার্টফোনের মাধ্যমে পাঠক যে কোনো মুহূর্তে সংবাদ হিসেবে জানতে পারছে। চাঁদপুর কণ্ঠের গুগল অ্যাডসেন্স, টুইটার, ইউটিউব ও ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন সরব উপস্থিতি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনের পাশাপাশি অনলাইন ভার্সন পাঠকদের চাহিদা মেটাচ্ছে দেশ পেরিয়ে বিদেশেও। নানা সীমবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও চাঁদপুর কণ্ঠের অনলাইন ভার্সনই পাঠকের অনেক চাহিদা মেটাচ্ছে। আর এই কাজের পুরো দায়িত্বটি পালন করে পরিপূর্ণ আত্মতৃপ্তি আমি পাই। আমার সাথে মাঝে মধ্যে সঙ্গ দেন চাঁদপুর কণ্ঠের আরো এক ঝাঁক সংবাদকর্মী। আর মফস্বলের চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিনিধি, ব্যুরো ইনচার্জ ও উপজেলা প্রতিনিধিরা আমাকে এই কাজে সংবাদ প্রেরণ করে পরিপূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠের প্রিন্ট ভার্সনের ফিচার পাতা ছাড়াও অনলাইন ভার্সনে তাৎক্ষণিক ঘটনার সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি জাতীয়, আন্তর্জাতিক, রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন, লাইফস্টাইল, আইন আদালত, অপরাধ, ধর্ম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সাহিত্য, শিশু-কিশোর, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি, ভ্রমণ, সোস্যাল মিডিয়া, মতামত, ক্যাম্পাস, এক্সক্লুসিভ, গণমাধ্যম, ক্যারিয়ার, চাকুরি নামে বিভিন্ন ফিচারে সংবাদ প্রকাশ করে পাঠকের চাহিদা মেটাচ্ছে।
চাঁদপুর কণ্ঠের জনপ্রিয়তা বাস্তবায়নে পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার, প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত ও বার্তা সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহসহ চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের সকলের অবদান রয়েছে। তাই আগামীর চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সন আরো এগিয়ে যাবে--এটাই কামনা করছি। পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলবো, এখনকার ঘটনা এখনই জানতে ভিজিট করুন : www.chandpur-kantha24.com
উজ্জ্বল হোসাইন : সিস্টেম ডেভলপার, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ।