সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ১৯:১১

ভিক্ষা ছেড়ে বই বিক্রি করছে অসুস্থ মরিয়ম

অনলাইন ডেস্ক
ভিক্ষা ছেড়ে বই বিক্রি করছে অসুস্থ মরিয়ম

মরিয়ম, বয়স (১২)। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর সরকারি হাসপাতাল গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে জনৈক ব্যাক্তির কাছে-শিশুদের বই বিক্রি করছেন। একটা বই চাইতেই সে দিগুন দাম চাইলো । এতো দাম চাও কেনো-? প্রশ্নের উত্তরে সে নরম কন্ঠে বললো-কিনতেন না কিল্লাই-কন ? ৪ দিন আগে ভিক্ষা করা ছাড়ি দি এহন বই বেচি । ধন্যবাদ দেন আর আমনে ১টা বই কিন্না লই যান। তখন ৪০ টাকার বই ৭০ টাকায় কিনলে মরিয়ম খুবই খুশি হয়।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রায়পুর হাসপাতালে র সামনে মরিয়মের সাথে বিজনেস বাংলাদেশের এ প্রতিবেদকের কথা হলে, সে তার কষ্ট ও রোগের কথা বলে কেঁদে দেয়। তার চিকিৎসার জন্য ধর্ণাঢ্য ব্যাক্তি ও সরকারের কাছে সহযোগিতাও চেয়েছে।

মরিয়ম জানায়, আঙ্গো আব্বার বাড়ি ফরিদপুর শহরে। আর আম্মার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায়। আন্ডা দুই বোন ও এক ভাই। আঁই বেগ্গুনের বড়। আঁই ক্লাশ ফাইবে হড়ি। আঁর খুব অসুখ (পায়ু পথে রক্ত ঝড়ে-পায়খানা পড়ে যায় )। হেল্লাই দুপুরে ভাত খাইতে হারিনা। হাবিজাবি খেয়ে সন্ধায় বাইত চলি যাই। আঁর খুব কষ্ট। আম্মা কইছিলো, আব্বাগো বংশে না কি প্রথম হোলা হন লাগে। তাইলেই হেতেনরা খুশি। আই মাইয়া অওয়ায় আম্মা'কে নানার বাড়িতে রাখি চলি গেছেন আব্বা। আর আসেন নাই। হুইনছি হেতেনে আরেক বিয়া কইচ্ছেন। আঁর আম্মাও আরেক বেডারে বিয়া কইচ্ছেন। হেই বেডায় রিসকা চালায়। কয়দিন আগে রিসকাডাও চুরি হই গেছে। আন্ডা বেকে আঙ্গো নানার বাইত্তে থাহি। লকডাউনে তো আঙ্গো-স্কুল বন্ধ। ঘরেও চাইল থাহেনা। হেল্লাই দুই বছর ধরি ভিক্ষা কইরতাম। ভিক্ষা বাল লাগে না।

মরিয়ম আরো বলেন, গত শুক্কুরবার রায়পুর বাজারের বড় মসজিদের সামনে দাঁড়াই আছিলাম। এক বেডা আহি আমারে বলেন ভিক্ষা করা বালা না। হেতেনে কিছু বই কিনি দেন। সেগুলো বেছি টেকা লই মারে দেই। হেইদিন থাকি ভিক্ষা ছাড়ি দি -এহন হাসপাতালের সামনে ও বাজারে হাঁটি হাঁটি বই বেচি। হত্তেকদিন ৭/৮টি বই কিনি ৫০০/৬০০ টেকা বেছি। ৩০০/৪০০ টেকা লাভ হয়।-হেই টেয়া মা'রে নিয়া দি। কিন্তু রাস্তার মইদ্দে বড্ডা হোলারা খারাফ কতা কয়। আঁর খুব ডর লাগে। কেও যদি আঁরে অসুখের টেয়া দিতো। তাড়াতাড়ি বালা অই যাইতাম।সরকাররে কোন আঁরে চিকিৎসা করতো ।

উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা গড়তে উপজেলা প্রশাসন ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিলেও। পরে তা কখনো বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে ইউএনও সাবরীন চৌধুরি বলেন, শিশু মরিয়মের আগ্রহের কথা শুনে ভালো লেগেছে। ভিক্ষা ছেড়ে দিয়ে শিশু বয়সে বই বিক্রি করছে। আমি হতবাগ হলাম। তাকে সহযোগিতা দেয়া হবে। ভিক্ষুকমুক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়