প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০১:২২
রায়পুরে ৬০টি এমপিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাবের অবস্থা
বন্ধ ল্যাবে বালু ভরপুর, নষ্ট হচ্ছে ল্যাপটপ!

২০২১-২২ অর্থবছরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৫৪ টি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি বিদ্যালয় ও মাদরাসা এবং সরকারি কলেজ সহ ৫টি কলেজে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। উদ্দেশ্য ছিলো, শিশু-কিশোরদের আইসিটি শিক্ষায় উন্নতি।
|আরো খবর
প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রায় কোটি টাকা খরচ করা হয়। তবে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন যে প্রকল্পের নামে পুকুরচুরি হয়েছে। সেসব ল্যাবে দেওয়া নিম্নমানের ল্যাপটপের বেশির ভাগই অকেজো। সঠিক তদারকির অভাবে দিনের পর দিন বন্ধ পড়ে আছে এসব ডিজিটাল ল্যাব।
২০১৫ সালের প্রথম দফায় ৩৫ টি প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ল্যাবের সব ল্যাপটপ নষ্ট হয়ে পড়ে। প্রধানরাও মেরামত করছেন না।
লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আইসিটি, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পারদর্শী করার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের আওতায় আসে উপজেলার ২৫টি বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজ।
প্রতি ল্যাবে ১৭টি ল্যাপটপ, একটি করে প্রিন্টার, একটি স্ক্যানার, একটি স্মার্ট এলইডি টেলিভিশন, ওয়েব ক্যামেরা, রাউটার, নেটওয়ার্ক সুইচ, ইন্টারনেট কানেকটিভিটি, একটি করে ইনস্ট্রাক্টর টেবিল ও চেয়ার; ১৬টি করে স্টুডেন্টস টেবিল এবং ৩২টি করে চেয়ার দেওয়া হয়।
প্রতিটি ল্যাবের রেনোভেশন ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনের জন্য আরও ৬৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর ল্যাবের নাম পরিবর্তন করে আইসিটি ডিজিটাল ল্যাব করা হয়েছে।
উপজেলার জনকল্যাণ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়, মীরগঞ্জ বালিকা, এম রহমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি ডিগ্রি কলেজে সরেজমিনে দেখা যায়, একাধিক কক্ষে ল্যাপটপগুলো অযত্নে পড়ে আছে। এগুলো অকেজো হওয়ায় বেশির ভাগ সময় ল্যাবের কক্ষ বন্ধ থাকে।
জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ল্যাব এসিস্ট্যান্ট মো. শাকিল বলেন, ২০২১ সালে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হলেও ১৭টি ল্যাপটপের মধ্যে ৫টিই ছিল অচল। ২০২৩ সালে মোট ১৬টি নষ্ট হয়ে যায়। এলইডি টিভি চলে না। ওয়াইফাই রাউটারে সংযোগ পাওয়া যায় না। ফলে ইন্টারনেট বন্ধ।
ছাত্রছাত্রীদের আইসিটি শিক্ষায় আগ্রহ থাকলেও শিক্ষকরা ব্যবহার করতে পারছেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় বলা হয়েছিল, ল্যাবের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
আবদুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও সরকার থেকে ৩৪টি ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের মধ্যে ১২টি চালু রয়েছে। বাকিগুলো নষ্ট। ওয়ালটনের ল্যাপটপ দেয়া হয় ২০১৫ সালে।
রায়পুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ আরশাদ হোসেন বলেন, ল্যাবটবগুলোর বিষয়ে শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে। নতুন বরাদ্দ না আসলে আমাদের করার কিছুই নেই।
রায়পুর উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, এসব ল্যাপটপের ওয়ারেন্টি ছিল এক বছরের। এর মধ্যে নষ্ট হলে কোম্পানি ঠিক করার কথা। ওয়ারেন্টি শেষ হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃপক্ষকে ঠিক করতে হবে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ইমরান খাঁন বলেন, এবিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ