প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০৬
শেষ হলো পদ্মা-মেঘনায় জাল ফেলার নিষেধাজ্ঞা
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশের নিরাপদ প্রজনন রক্ষায় নদীতে জাল ফেলতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। ৩ নভেম্বর রোববার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণে নদীতে নামবে জেলেরা। ইতোমধ্যে জাল ও নৌকা মেরামত করে প্রস্তুত তারা। কাঙ্ক্ষিত ইলিশসহ অন্যান্য মাছ পাওয়ার আশায় জেলেরা চষে বেড়াবে বিশাল জলরাশি।
|আরো খবর
রোববার সকালে সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, সাখুয়া, বহরিয়া বাজার ও হারিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন জেলে পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, নৌকা ও জাল নিয়ে জেলেদের প্রস্তুতি। নদী উপকূলীয় এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আড়তগুলোও ব্যবহৃত হচ্ছে ইলিশ বেচাকেনার জন্যে।
সাখুয়া এলাকার জেলে শাহজাহান গাজী বলেন, ইলিশ আমাদের সম্পদ। প্রকৃত জেলেরা কখনোই মা ইলিশ শিকার করে না। আমরা এই ২২দিন জাল ও নৌকা মেরামত করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় এখন নদীতে নামলে ইলিশ পেতেও পারি, নাও পেতে পারি।
একই এলাকার জেলে আহসান হাবিব বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের এলাকায় জেলেদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুব কম সংখ্যক জেলেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করেছে। কিছু মৌসুমি জেলে মা ইলিশ শিকার করার সাহস দেখায়।হরিণা ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ছৈয়াল বলেন, পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের বিচরণ বাড়াতে সরকারকে পরিকল্পিতভাবে নদীর নাব্যতা সংকট দূর করতে হবে। নদীতে ইলিশের বিচরণ বাড়লে জেলে-ব্যবসায়ী সবার জন্যেই উপকার। ২২দিন বেকার ছিলাম। এখন আমাদের ঘাটের সব ব্যবসায়ীই আড়ত পরিষ্কার করে বেচাকেনার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী আইন অমান্য করে অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশ ধরার দায়ে ২৯৯ জেলে গ্রেপ্তার হয়েছে। এসব জেলের ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড এবং কিছু জেলেকে জরিমানা ও থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে।
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের প্রাপ্যতার সম্ভাবনা কেমন এমন প্রশ্নের জবাবে ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান বলেন, সাগর থেকে একটি ইলিশ মিঠা পানিতে আসতে হলে তিনটি ধাপ পার হতে হয়। লোনা পানি, আধা লোনা এবং মিঠা পানি। এই সাগর থেকে মিঠা পানিতে ইলিশকে আসার জন্যে তার পথ সুগম করতে হবে। তাহলে নদীতে ইলিশের বিচরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।ক্যাপশন : চাঁদপুর সদর উপজেলার সাখুয়া গ্রামের জেলেপল্লী এলাকায় শেষ সময়ে জাল মেরামত করছেন এক জেলে।