প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:২৮
পুলিশের বক্তব্য : মায়ের প্রেমিকের সামনে ২ খুনি কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রিয়াকে
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শাহরাস্তি থানাধীন রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের অন্তর্গত আহম্মদনগরস্থ বাদী তাহমিনা সুলতানা প্রকাশ রুমি (৪৩) স্বামীর দক্ষিণমুখী তিন কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা বসত ঘরে ভিকটিম মৃত নওরোজ আফরিন প্রিয়া (২১) (পিতা-মোঃ ইসমাইল হোসেন, সাং-আহম্মদনগর (ছোট পোদ্দার বাড়ি), রায়শ্রী দক্ষিন ইউনিয়ন, থানা-শাহরাস্তি, জেলা-চাঁদপুর)-এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। থানায় সংবাদ প্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হয়ে মৃত নওরোজ আফরিন প্রিয়ার সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করত ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ভিকটিমের মাতা তাহমিনা সুলতানা প্রকাশ রুমি (৪৩) বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দাখিল করলে শাহরাস্তি থানার মামলা নং-১৬, তাং- ১৭/০৯/২০২১, ধারা- ৪৫৭/৩৮০/৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করত তদন্তভার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোঃ আসাদুল ইসলামের উপর অর্পণ করা হয়।
|আরো খবর
মাননীয় পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার) সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম চৌধুরী (কচুয়া সার্কেল), শাহরাস্তি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল ইসলামকে মামলার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন এবং প্রকৃত আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলা তদন্তকালীন সময়ে স্থানীয় উপস্থিত সাক্ষী ও বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বাদীর কথাবার্তায় সন্দেহ প্রকাশ পেলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় তিনি জানান, তার বাড়ির পাশ্ববর্তী জনৈক মোঃ হান্নান হোসেন (৩০) (পিতা- মৃত মুনসুর আলী মিয়া, সাং-দেবকরা, থানা-শাহরাস্তি, জেলা-চাঁদপুর)-এর সাথে প্রায় ৫/৬ বছর পূর্ব হতে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক। বাদীর মেয়ে ভিকটিম মৃত নওরোজ আফরিন প্রিয়া (২১) প্রতিনিয়ত পরকীয়ায় লিপ্ত না হওয়ার জন্য প্রায়ই বাধা প্রদান করত। ফলে বাদী ও জনৈক মোঃ হান্নান হোসেন (৩০)-এর পরকীয়া প্রেমে ভিকটিম বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে থাকে। ঘটনার দিন ১৬/০৯/২০২১ তারিখে বাদী তার কন্যা অত্র মামলার ভিকটিম (বর্তমানে মৃত) নওরোজ আফরিন প্রিয়া (২১) ও তার নাতনি আনহার (১৮ মাস)সহ বিকেল অনুমান ১৬:০০ ঘটিকার (৪টার) সময় বাড়ি হতে শাহরাস্তি ঠাকুর বাজারে ডাক্তার দেখাতে যান। বাড়িতে তার একমাত্র ছেলে দিয়া হোসেন পরশ (১৯) অবস্থান করে। ভিকটিম ও তার নাতনিকে ডাক্তার দেখিয়ে মাগরিবের নামাজের পর অনুমান সন্ধ্যা ১৮:৩০ ঘটিকার (সাড়ে ৬টার) সময় বাসায় ফিরে আসামাত্র তার ছেলে দিয়া হোসেন পরশ খিলাবাজারে চলে যায়। বাদী ও তার কন্যা ভিকটিম বাসায় প্রবেশ করা মাত্রই জনৈক হান্নান তার বসত ঘরে এসে ভিকটিম নওরোজ আফরিন প্রিয়ার সাথে কথাবার্তা বলতে থাকে। ভিকটিমকে বাড়িতে একা রেখে রুটি বানানোর কথা বলে কৌশলে তার জা জান্নাতের বাড়িতে সন্ধ্যা অনুমান ১৯.০০ ঘটিকার (৭টার) সময় চলে যায়। ঐ সময় ঘরে তার কন্যা ভিকটিম প্রিয়া ও তার নাতনি অবস্থান করলে আসামী হান্নানের ০২ (দুই) সহযোগী ঘরের মধ্যে সঙ্গোপনে প্রবেশ করা মাত্রই তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দ্বারা গলার ও মাথার পেছনে ডান চোয়াল এবং পিঠে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মামলার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক মামলার অভিযুক্ত ও মূল পরিকল্পনাকারী মামলার বাদী তাহমিনা সুলতানা প্রকাশ রুমি ও হান্নানকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেন। তন্মধ্যে আসামী তাহমিনা সুলতানা রুমির জবানবন্দি কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক লিপিবদ্ধ করা হয় ।
অন্যান্য সহযোগী পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা, জোর-প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আসামী হান্নান ও বাদী শলাপরামর্শে তাদের সহযোগী ২ জনকে নিয়ে উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।