প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
মায়ের প্রতি নিরন্তর শ্রদ্ধা, চরিত্রহীনার প্রতি চরম ঘৃণা
এ পৃথিবীতে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ, আরবিতে বলা হয় ‘আশরাফুল মাখলুকাত’। এ মানুষের মধ্যে সবাই বাবা বা মা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে না। বিবাহিত হয়েও অনেকে বাবা বা মা হতে পারে না নানান জটিলতায়। সন্তানহীন দম্পতি বিত্ত-বৈভবের মধ্যে থেকেও চরম মানসিক কষ্টে দিন কাটায়। এমন দম্পতির কেউ কেউ এ কষ্ট নিবারণে কারো জারজ সন্তানেরও যদি খোঁজ পায়, তাকে দত্তক নেয়ার জন্যে ছুটে যায়। কেউ কেউ শিশু সন্তান কিনে এনেও লালন পালন করে। এমন শিশুর মুখে মা ডাক শুনে, বাবা ডাক শুনে তৃপ্তি মেটায়। নিঃসন্দেহে বাবার ঔরসে মা তার গর্ভে যে সন্তানকে ধারণ করে, ভূমিষ্ট হওয়া, ক্রমশ বড় করে তোলার জন্যে তার পেছনে সবচে’ কষ্ট স্বীকার করে মা। এমনকি মা তার জীবনের চেয়েও সন্তানের জীবনকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। কোনো কোনো মা সন্তান প্রসবের সময় প্রাণ হারায়, সন্তানকে কোনো দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজে জীবন দেয়। সন্তানের জন্যে মায়ের কষ্ট ও ত্যাগের অসংখ্য দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে তুলনাবিহীন। সেজন্যে মায়ের প্রতি নিরন্তর শ্রদ্ধা কার না আছে ?
|আরো খবর
চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলাধীন রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহম্মদনগর গ্রামের প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী তাহমিনা সুলতানা রুমি দু সন্তান প্রিয়া ও পরশের মা। এদেরকে কোলে পিঠে করে বড় করে তোলার জন্যে তিনি কতো না কষ্ট করেছেন। স্বামীর অবর্তমানে তিনি প্রিয়াকে দাখিল পাস করিয়ে পাত্রস্থ করেছেন, পরশকেও দাখিল পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুত করেছেন। এজন্যে তিনি মা হিসেবে যথার্থ করণীয় সম্পাদনের পারঙ্গমতায় অবশ্যই শ্রদ্ধেয়। তার মতো এমন পারঙ্গম পৃথিবীর সকল মা-ই শ্রদ্ধেয়, পূজনীয়।
তাহমিনা সুলতানা রুমি (৪৩) মাতৃত্বে সফল হলেও অনিয়ন্ত্রিত জৈবিক তাড়নায় একজন উচ্ছৃঙ্খল নারী। তার চেয়ে ১৩ বছরের ছোট জনৈক প্রতিবেশী মোঃ হান্নান হোসেন (৩০)-এর সাথে তার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং জৈবিক প্রয়োজন মেটাতে অবাধ মেলামেলায় তিনি তার স্বামী ও সমাজের চোখে হয়ে যান সমালোচিত ও বিতর্কিত। ৫-৬ বছর পূর্বের এ ঘটনায় স্বামী তার সাথে যখন সম্পর্ক ছিন্নের উদ্যোগ নেন, তখন বার বার সালিসের মাধ্যমে সেটি সাময়িক সমাধান করা হয়। হান্নান চলে যায় বিদেশে। কিন্তু রুমি তার এই প্রেমিকের সাথে মুঠোফোনে সম্পর্ক বজায় রাখে। এক মাস আগে হান্নান দেশে ফিরে আসে এবং রুমির সাথে অবাধ মেলামেশায় লিপ্ত হয়। বাধ সাধে রুমির বিবাহিত মেয়ে প্রিয়া। এক্ষেত্রে রুমি তার যৌনতাকে মাতৃত্বের চেয়েও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। বাধা সরাতে নিজ মেয়েকে খুন করার জন্যে প্রেমিক হান্নানকে দায়িত্ব দিলেন। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হান্নান তাঁর দুজন সহযোগীসহ প্রিয়াকে তার ১৮ মাস বয়সী সন্তান আনহারের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে। রুমি বাদী হয়ে পরদিন থানায় মামলা করেন। অসংলগ্ন কথাবার্তা ও আচরণে তিনি পুলিশের সন্দেহের তালিকায় স্থান পেলেন এবং বাদী থেকে আসামীতে রূপান্তরিত হয়ে এক সপ্তাহের মাথায় ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।
আমরা শাহরাস্তির তাহমিনা সুলতানা রুমির মতো বিপথগামী চরিত্রহীনা নারীর পাশবিক কাণ্ডে স্তম্ভিত। যৌনতাকে সবার উপরে স্থান দিয়ে তিনি তাঁর মাতৃত্বকে অবলীলায় খুন করে বস্তুত নিজের মেয়েকে খুন করার পাশবিকতা প্রদর্শন করতে পেরেছেন বলে মনে করি। তার প্রেমিকেরতো বটেই, তারও ফাঁসি দাবি করছি আমরা। সাথে সাথে এমন চরিত্রহীনা নারীর প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ করছি।