প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫০
পীরগঞ্জে মায়ের পর শিশু কন্যার মরদেহ উদ্ধার: আতিকুলের স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এলো ভয়ংকর সত্য
"মরদেহ উদ্ধারের পর যা জানা গেল, শিউরে উঠবে সবাই"
![](/assets/news_photos/2025/02/09/image-58785-1739105721bdjournal.jpg)
রংপুরের পীরগঞ্জে এক নারীর মস্তকবিহীন মরদেহ উদ্ধারের দুই দিন পর তার পাঁচ বছরের শিশু কন্যার লাশও মিলল মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত হত্যাকারীর দেওয়া স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এলো এক ভয়ংকর হত্যাকাণ্ডের চিত্র।
|আরো খবর
মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধারের পরই শুরু হয় চাঞ্চল্য
গত ৭ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ উপজেলার বড় বদনাপাড়া গ্রামের এক মরিচ ক্ষেতে পাওয়া যায় দেলোয়ারা বেগম ঝিনুক (৩৫) নামে এক নারীর মস্তকবিহীন মরদেহ। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে, সিআইডির অপরাধ তদন্ত দল ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেলোয়ারার পরিচয় শনাক্ত করে। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দিলালপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নামে পুলিশ। এরপর বড় বদনাপাড়া গ্রামের মুনছুর আলী মণ্ডলের ছেলে আতিকুল ইসলামকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়।
স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এলো শিশুহত্যার ভয়ংকর তথ্য
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করে আতিকুল ইসলাম। সে জানায়, দেড় মাস আগে দেলোয়ারা বেগমের পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে সাইমাকে হত্যা করে লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বাড়ির পেছনের বাগানে পুঁতে রেখেছিল। গোবরের স্তূপের পাশে ৩-৪ ফুট গর্ত খুঁড়ে সে শিশুটির মরদেহ মাটিচাপা দেয়।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে পুলিশ বড় বদনাপাড়া গ্রামের এক বাগান থেকে ওই শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।
আসামির বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসী। শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে গ্রেপ্তারকৃত আতিকুল ইসলামের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি
পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমএফ ফারুক জানান, "আতিকুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে দেলোয়ারা বেগম এবং তার কন্যা সাইমাকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকার করেছে। আমরা হত্যার কারণ অনুসন্ধান করছি।"
কেন এই ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড?
এখনো হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক কলহ অথবা আর্থিক বিরোধের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত শেষ হলে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে।
শেষ ভাবনা
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একে একে মায়ের পর শিশুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে কাজ করছে। অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ