প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৮
ছুটিতে আসা পুলিশ কনস্টেবল হাসানের কাণ্ডে তোলপাড় বরিশাল
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ব্যাপক দমন-পীড়নের পর তীব্র গণরোষের মুখে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী এক প্রকার ভেঙে পড়ে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর হয় ব্যাপক রদবদল।
|আরো খবর
পুলিশে ভাবমূর্তি উদ্ধারে এখনো চলছে জোর প্রচেষ্টা। বিভিন্ন এলাকায় পরিবর্তিত (চেষ্টারত) পুলিশের নতুন ভূমিকায় দেশব্যাপী যখন নেতিবাচক ধারণা থেকে সাধারণ মানুষ যখন ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে, ঠিক তখনি বরিশালে ছুটিতে এসে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন ভোলা সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল হাসানুজ্জামান রাহাত। যার বিপি নং ৯৩১২১৪৫৮১৭।
ভোলা জেলায় কর্মরত পুলিশের একজন কনস্টেবল বরিশাল নগরীতে এসে স্থানীয় বিএনপিনেতার করা এক রাজনৈতিক মামলার আসামিকে মারধর করতে করতে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে বরিশাল নগরী জুড়ে।
ভোলা সদর থানায় কর্মরত কনস্টেবল হাসানুজ্জামান রাহাতের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামে। কনস্টেবল রাহাত গিলাতলী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মোল্লার ছেলে। বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে বরিশাল কোর্ট কম্পাউন্ড থেকে খান তুহিন নামের এক যুবককে মারতে মারতে কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যান তিনি।
এসময় পুলিশ কনস্টেবল রাহাতের সাথে ছিলো চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামের মৃত মোবারক আলী চৌকিদারের ছেলে আরিফ চৌকিদার ও রফিকুল ইসলাম রিপন। রিপন আলোচিত এই মামলার বাদী।
থানা সূত্রে জানা যায়, নগরীর কলেজ রো এলাকার বাসিন্দা বিএনপিনেতা রফিকুল ইসলাম রিপন ৫ আগস্টের পর বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আসামি খান তুহিন।
রাহাতের কর্মস্থল ভোলা জেলায় হলেও গ্রামের বাড়িতে ছুটিতে এসে সংশ্লিষ্ট থানার আসামি ধরেন। ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে ওই মামলার বাদী রিপনকে সঙ্গে করেই তিনি খান তুহিনকে কোর্ট কম্পাউন্ড এলাকা থেকে মারতে মারতে স্থানীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
ভুক্তভোগী খান তুহিন বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। তবুও ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে আমার একই এলাকার বাসিন্দা ভোলা জেলায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল হাসানুজ্জামান রাহাত মামলায় জড়িয়ে দিয়ে আমাকে বরিশাল নগরীর কোর্ট কম্পাউন্ডে এসে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। সেসময় একই গ্রামের আরিফ চৌকিদার ও মামলার বাদী রিপনও ছিলো তার সঙ্গে।’
এ বিষয়ে ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘রাহাত ভোলায় কর্মরত ছিলো। গত ছদিন আগে ডিএমপিতে যোগাদানের ছাড়পত্র নিয়েছে। রাহাত তো বরিশালে কর্মরত নয়। সে যে কাজটি করেছে সেটা অবশ্যই নিয়ম বহির্ভূত।’
এবিষয়ে জানতে কনস্টেবল রাহাতকে কল দিলে সাংবাদিক শুনে ব্যস্ততার ওজুহাতে ফোনটি কেটে দেন। পরে সংবাদ প্রকাশ বন্ধ করতে বিভিন্নভাবে জোর লবিং তদবির চালান কনস্টেবল রাহাত।
ছুটিতে আসা একজন কনস্টেবল কীভাবে মারতে মারতে যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়— এমন প্রশ্নে কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার নাফিসুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমিও শুনেছি অন্য জেলায় কর্মরত একজন কনস্টেবল আসমি তুহিনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে৷ এ ব্যাপারে আমি সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’
তথ্যসূত্র :ঢাকা টাইমস।