প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৩১
চাঁদপুরে নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ নিধন ।। ১৪৩ জেলে আটক
চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনা নদীতে থেমে নেই নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ নিধন।পূর্ণিমা রাতে প্রাকৃতিক কারণেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ডিম ছাড়ে থাকে।ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্যেই সাগর নদনদীতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ইলিশের নিরপদ প্রজননের লক্ষে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ, পরিবহন ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় । এ অভিযান চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। সেই সুবাদে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞ আর মাত্র কয়েকটি দিন।কিন্তু জেলেরা আইন না মেনে প্রতিদিনই নদীতে ইলিশ শিকার করছে।
|আরো খবর
শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান নৌ পুলিশের অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় নৌ পুলিশের অভিযানে অভয়াশ্রম এলাকা থেকে ইলিশ ধরা অবস্থায় হাতেনাতে ১০৪ জেলে আটক হয়। জব্দ করা হয় ৭ লাখ ৫৯ হাজার মিটার কারেন্টজাল, ৫৭৪ কেজি ইলিশ এবং ৩৩টি মাছ ধরার নৌকা। এসব ঘটনায় ৫টি ভ্রাম্যমান আদালতে ৪২ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড, ৮ জেলেকে ৩৪ হাজার টাকা অর্থদন্ড, ১৬ জেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকী ৩৮ জেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়।
নৌ ওসি আরো জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামীদেরকে কারাগারে প্রেরণ, জব্দকৃত ইলিশ মাছ স্থানীয় এতিম খানা ও গরীবদের মাঝে বিতরণ, কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং জব্দকৃত নৌকা থানা হেফাজতে রয়েছে। অপরদিকে চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্সের অভয়াশ্রম এলাকায় গত ২৪ ঘন্টার অভিযানের তথ্য জানিয়েছেন সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম।
তিনি জানান, অভিযানে আটক ৩৯ আসামীর মধ্যে ১০জনকে ১ মাস করে, ২৮জনকে ৭ দিন করে কারাদন্ড দিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিগার সুলতানা। এক আসামী অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। একই সময় জব্দ করা হয় ৩টি মাছ ধরার নৌকা। এছাড়া অভিযানে জব্দকৃত ৬০ কেজি ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ এবং ৫০ হাজার মিটার কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
টাস্কফোর্সের এসব অভিযানে নেতৃত্ব দেন চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মো. মেহেদী হাসান, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামানসহ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। অভিযানে নৌ পুলিশের একাধিক দল ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
গবেষণায় জানা গেছে, আশ্বিনের অমাবস্যা থেকে কার্তিকের পূর্ণিমা পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ বছর নদী ও সমুদ্রে বিচরণরত ইলিশের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছাড়ার উপযুক্ত হয়েছে। এ সময় দেশের ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে হলে প্রধান প্রজননের এই সময়ে মাই ইলিশ কে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে হবে।