প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:৩২
আকিজ গ্রুপের ৪ কোটি টাকা চিনি পাচার মামলায়
অবশেষে চোরাকারবারি মরু হাজী গ্রেফতার
আকিজ গ্রুপের চার কোটি টাকার চিনি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে লাইটারেজ জাহাজে নামিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফ্যাক্টরিতে নেয়ার পথে চাঁদপুরের মেঘনায় পাচারের মামলায় চাঁদপুরের চিহ্নিত চোরাকারবারী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে মরু হাজীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে নৌ পুলিশ। চাঁদপুর নৌ থানার ইনচার্জ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে সোমবার চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে মরু হাজীসহ মামলার অপর এক আসামীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। চাঁদপুরের চিহ্নিত চোরাকারবারি মরু হাজী গংয়ের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে অকটেন (তেল) চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
|আরো খবর
জানা যায়, সম্প্রতি ইন্ডিয়া থেকে আকিজ গ্রুপের চিনির বড় একটি চালান বাংলাদেশে আমদানি করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে থাকা বড় জাহাজ থেকে লাইটারেজ জাহাজ দেওয়ান মেহেদী টুতে করে ২০ হাজার ৩০০ বস্তা চিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে মতলব উত্তরের মোহনপুর মেঘনা নদীতে নোঙ্গর করে ৮ হাজার বস্তা চিনি চোরাকারবারি জাহাঙ্গীর আলম মরু হাজী ও তার সহযোগী পুরাণবাজার রঘুনাথপুর এলাকার শাহজাহান গংয়ের মাধ্যমে পাচারের পর অন্যত্র বিক্রি করা হয়।
এই ঘটনায় আকিজ গ্রুপ অব কোম্পানির পক্ষ থেকে মতলব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। অবশেষে মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দেওয়ান মেহেদী টু লাইটারেজ জাহাজের মাস্টারসহ ১১ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চাঁদপুরে চিহ্নিত চোরাকারবারি জাহাঙ্গীর আলম মরু হাজীসহ চারজনের নাম প্রকাশ পায়। সেই চোরাকারবারিরা আকিজ গ্রুপ কোম্পানির ৮ হাজার বস্তা চিনি সেই লাইটারে জাহাজ থেকে স্টিলবডি ট্রলারে নামিয়ে ফরিদপুরের বাকিতুল্লাহ বিশ্বাসের কাছে বিক্রি করে। সেই চিনি ফরিদপুর, মাদারীপুর ও কুষ্টিয়ায় পাচার করেছে বলে তথ্য মিলেছে।
নৌ পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে চট্টগ্রাম থেকে চিনি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে দেওয়ান মেহেদী টু লাইটারেজ জাহাজ থেকে ৮ হাজার বস্তা চিনি পাচার হয়ে যায়। সেই ঘটনায় জাহাজের মাস্টারসহ ১১ জনকে আটক করার পর চাঁদপুরের চিহ্নিত চোরাকারবারিদের নাম বেরিয়ে আসে। এই ঘটনায় সেই চোরাকারবারিদের ধরার জন্যে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে অভিযুক্ত চোরাকারবারিরা গা-ঢাকা দিয়েছে। অবশেষে দীর্ঘ বছর নদীর চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত চোরাকারবারি মরু হাজীকে পুলিশ আটক করায় জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চাঁদপুরের চিহ্নিত গডফাদার চোরাকারবারি জাহাঙ্গীর আলম গাজী ওরফে মরু হাজী দীর্ঘ বছর যাবত নদীতে লাইটারেজ জাহাজ থেকে বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানির মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। সে এই কাজ করে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। নামে-বেনামে শহরে তার বাড়ি ও জায়গা-জমি রয়েছে। সে চাঁদপুর শহরের স্ট্র্যান্ড রোডে তার নিজস্ব পাঁচতলা ভবন বিশিষ্ট আলিশান বাড়িতে বসবাস করে। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করলে চাঁদপুরে চোরাকারবারি বন্ধ হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।