প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:৫৮
হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন পেলেন সেলিম চেয়ারম্যান

প্রায় ৩৭ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় ‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম খানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
|আরো খবর
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করতে পারায় সেলিম খান পুনরায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন।
সেলিম খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, হাইকোর্টের আদেশে মামলা নম্বর ভুল ছিল। এ কারণে নতুন জামিন আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ আগস্ট পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং প্রতারণা করে প্রায় ৩৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে সেলিম খানের নামে ৩৬ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য মিলেছে। জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ সম্পদের দালিলিক মূল্য অনুযায়ী মোট সম্পদের হিসাব করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তিনি সম্পদের দাম কম উল্লেখ করে দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন। প্রকৃত ও বাজারমূল্য অনুযায়ী তার নামের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
‘বালুখেকো’ হিসেবে পরিচিত সেলিম খানের বিরুদ্ধে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
সরকারের অনুমোদন ছাড়া উত্তোলন করা বালু বিক্রির অর্থ ভাগবাটোয়ারা করেছেন তার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে। তিনি তার মালিকানাধীন সেলিম এন্টারপ্রাইজের ২০০টি ড্রেজারের মাধ্যমে প্রায় এক দশক ধরে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকারি অর্থ আত্মসাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ দুদকে জমা পড়ে।
দুদকের অনুসন্ধানে সেলিম খানের নামে পাওয়া সম্পদের মধ্যে স্থাবর সম্পদ ২৯ কোটি ৩৮ লাখ ৪১ হাজার টাকার। অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকার। ৯টি চলচ্চিত্র নির্মাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৬ কোটি ২৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা। তার নামে একাধিক বহুতল বাড়ি, একাধিক গাড়ি, বিপুল পরিমাণ জমি, ফ্ল্যাট, আগ্নেয়াস্ত্র, স্বর্ণালংকার, ব্যাংকে জমানো বিপুল টাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।
তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে: চাঁদপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৪০টি দলিলে কেনা বিপুল পরিমাণ জমি, রাজধানীর কাকরাইলে সাততলা ভবন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড় এলাকায় দশতলা ভবন, কাকরাইলের আজমিন টাওয়ারে চারটি ফ্ল্যাট এবং কাকরাইলের আরেকটি ভবনে ফ্ল্যাট। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তার নামে ফ্ল্যাট রয়েছে।
মামলার এজাহারে আরও জানানো হয়, চাঁদপুর সদরে তিনি একটি বাড়ি কিনেছেন ৫ কোটি টাকায়। লক্ষ্মীপুর মৌজায় প্রায় এক বিঘা জমিতে সিনেবাজ ফিল্ম সিটি নামে দুইতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সুইমিংপুলও করা হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ৩-৪ কোটি টাকা।
চাঁদপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সঙ্গে প্রায় দুই বিঘা জমিতে সিনেবাজ ফিল্ম সিটি মার্কেট করা হয়েছে। রাজধানীর কাকরাইলের করিম ম্যানশনে তার শাপলা মিডিয়া হাউসের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন।