ডাঃ তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় আবারো গৃহবধূর মৃত্যু

চাঁদপুরে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় আর কত নারীর মৃত্যু বরণ করতে হবে? এৃমন প্রশ্নের জবাব চায়, জেলার সচেতন নাগরিক সমাজ। কারণ একের পর এক ডাঃ তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। এবার ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় শহরের আল-আমীন হাসপাতালে রাহিমা বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

শুক্রবার ৮ অক্টোবর বিকেলে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে সিজার অপারেশন করা অবস্থায় গৃহবধুর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবারের সদস্যরা। তবে মায়ের মৃত্যু হলেও নবজাতক কন্যা শিশুটি সুস্থ রয়েছে।

ঘটনার পরপর নিহতের স্বজনদের চিৎকারে যেনো আকাশ বাতাসে ভারী হয়ে উঠে। জড়ো হতে থাকে শত শত উৎসুক জনতা। এক পর্যায়ে অবস্থার বেগতিক দেখে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশকে জানালে মডেল থানার নির্দেশে নতুনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ কামরুজ্জামান ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

নিহত রাহিমা বেগম সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের আখনের হাট এলাকার স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী মনির হোসেনের স্ত্রী। স্বামী মনির হোসেন জানায়, আমার স্ত্রী রাহিমা প্রায় ২ বছর ধরে ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিল। সেই সূত্র ধরে আমার স্ত্রী রাহিমার সিজার করার দায়িত্বটি গাইনী চিকিৎসক ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়া নিজেই নেন। তাই তার কথা অনুযায়ী পরিক্ষা-নিরিক্ষা শেষে চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় চাঁদপুর আল-আমিন হাসপাতাল (প্রাঃ) লিঃ এ ভর্তি করানো হয়। ৮ অক্টোবর দুপুরে হাসপাতালে সিজারের জন্য ওটিতে নেয়া হয়। কিছুক্ষন পর ওটি থেকে কন্যা সন্তান হয়েছে বলে জানানো হয়।

এরপর প্রায় ১ ঘন্টা অতিক্রম হয়ে গেলেও আমার স্ত্রী কেমন আছে এবং সুস্থ আছে কি না, তা জানায়নি। বিষয়টি সন্দেহ হলে আমি জোর করে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করি। তখন আমাকে বলা হয় আমার স্ত্রী মারা গেছে। সিজার করে ডাঃ তানিয়া চলে গেলেও হাসপাতালের কেউ মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কিছু জানায় নি। গৃহবধূর শ্বাশুড়ী রহিমা বেগম জানায়, ডাঃ তানিয়া আমার ছেলের বৌ রাহিমারে মেরে ফেলছে। সে খুনি। গৃহবধুর পিতা জয়নাল গাজী জানায়, ৪ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে মনির হোসেনের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও ডাঃ তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ কামরুজ্জামান জানায়, ঘটনার অনেকপরে আমাদেরকে জানানো হয়েছে। আমরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করেছি। তবে কোন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়ার ব্যবহ্নত মোবাইল ফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে চাঁদপুর শহরের গড়ে উঠা বেসরকারি এই হাসপাতালগুলোতে একের পর এক ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ সকল অভিযোগের বিষয়ে থানায় পর্যন্ত অভিযোগ গড়ালেও অজ্ঞাত কারনে এসকল অভিযোগগুলো শেষ পর্যন্ত অনেকটা নীরবে তা চাপা পড়ে গিয়ে আর কোনো খবর থাকে না।

এমনও অভিযোগ রয়েছে, উল্লেখিত গাইনী ও প্রসূতি চিকিৎসক ডাঃ শামসুন্নাহার তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় এ পর্যন্ত বেশকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও এ সকল ঘটনার বিষয় কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। ফলে চাঁদপুরের সচেতন নাগরিকগণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানতে চান, মানুষের জীবন নিয়ে খেলনা করা এ চিকিৎসকদের হাতে আর কত নারীর মৃত্যু চান? আর কত নারীর ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্টদের টনক নড়বে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃত নারীর লাশ হাসপাতালে রয়েছে এবং হাসপাতাল ও রোগী পক্ষসহ প্রভাবশালী একটি সর্বদলীয় স্বার্থান্বেষী মহল সমঝোতার চেষ্টায় অব্যাহত রয়েছেন।