প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৫
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল
চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীমৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকের ওপর হামলা, থানায় অভিযোগ

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীমৃত্যুর অভিযোগ এনে চিকিৎসকের ওপর হামলা করেছেন মৃত রোগীর স্বজনরা। এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৯ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে
|আরো খবর
চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আরিফুজ্জামান (৪২) (পিতা আহসান মাস্টার, সাং কল্যান্দী) নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তার স্ত্রীসহ স্বজনরা দ্রুত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ঐ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান সুমন ১১৬ নম্বর কক্ষে বসে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলেন। এদিকে স্বজনরা বারবার জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা এ চিকিৎসককে আরিফের বিষয়টি দেখার জন্যে তাগাদা দিচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় এ চিকিৎসক 'যাই যাচ্ছি' বলে বেশ কিছু সময় নেন। অপর দিকে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। দীর্ঘ সময় পর চিকিৎসক আরিফকে এসে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দেন তথা একটি প্রেসক্রিপশন দেন। পরে সেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে রোগী বাড়িতে চলে যান। কিন্তু বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পরই তার অবস্থা আবার খারাপ হতে থাকে।
তার আত্মীয়রা তড়িঘড়ি করে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে আরিফুজ্জামান মারা যান। এরপর মৃতের লাশ হাসপাতালে পৌঁছা মাত্রই তার স্ত্রী ও সঙ্গে থাকা স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সিএনজি অটোরিকশার ভেতর থেকেই চিকিৎসককে উদ্দেশ্য করে তারা অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল দিতে থাকেন।
এরপরও ওয়ার্ডবয় কাউসার আহমেদ রোগী নামাতে গেলে প্রথমে তাকেই ধাক্কা মারেন মৃতের স্ত্রী। এ সময় সঙ্গে থাকা স্বজনরা সিএনজি থেকে নেমে ১১৬ নম্বর কক্ষে ঢুকে চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান সুমনের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে থাকে।
এক পর্যায়ে ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহার মিয়া ও চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের একটি ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে এ ঘটনার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নুরে আলম, ডা. সৈয়দ আহমেদ কাজল ও ডা. আনিসুর রহমান ছুটে আসেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে হামলাকারীরা মৃত আরিফুজ্জামানের মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যান। এদিকে রোগীর স্বজনদের হামলার ঘটনায়
আহত চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান সুমন রাতে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, মৃত আরিফুজ্জামান বেপারী এক কন্যা সন্তানের জনক। তার মেয়ে চাঁদপুর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। এ ঘটনার বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাহার মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্সসহ নিজে সশরীরে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আইনী ব্যবস্থা বা মামলা প্রক্রিয়াধীন ছিলো বলে তিনি জানান।