বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩, ০০:০০

সাংগঠনিক চর্চার মাধ্যমে মানবিকতা ও সৃজনশীলতার বিকাশ হয়
অনলাইন ডেস্ক

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘চাঁদমুখ’-এর সাধারণ সম্পাদক।

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির সম্প্রতি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘সুচিন্তা’ বিভাগের মুখোমুখি হন। সাক্ষাৎকারটি আজ প্রকাশিত হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি শিক্ষকতা পেশায় আছেন। সামাজিক সংগঠনেও সক্রিয় আছেন। সংগঠন চর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে বলুন।

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির : আমি প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় আছি। বর্তমানে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। শিক্ষকতার পাশাপাশি আমি বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে শিক্ষক সমিতির সাথে জড়িত। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত আছি।

সংগঠন চর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গেলে আমি বলবো, মানুষের জীবনে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ সামাজিক জীব, তাই সমাজে প্রত্যেক মানুষের প্রতি প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। আর সামাজিক দায়বদ্ধতা আমরা কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারি না। সংগঠন চর্চার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে জাগ্রত হয় মানবিকতা, সহিষ্ণুতা, গণতান্ত্রিক মনোভাব, সৃজনশীলতা, অপরকে সহযোগিতা করার মনোভাব। আপনি যদি একবার ভাবুন, আমাদের দেশে করোনাকালে মানুষের দুর্দিনে যখন সবাই সবার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঘরে দরজা বন্ধ করে দিন-রাত পার করেছে তখন করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা, হাসপাতালে আনা-নেয়া, ঔষধ ও খাবার পৌঁছে দেয়া, মৃতদেহ সৎকার, অক্সিজেন সরবরাহসহ সকল সেবামূলক কাজে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। একসময় মানুষ রক্ত কিনতে হতো কিন্তু এখন বিভিন্ন সংগঠনের কারণে মানুষ বিনামূল্যে রক্ত গ্রহণ সেবা পাচ্ছে। এছাড়া আমাদের সবার মনে কিছু না কিছু সৃজনশীলতা ও সহযোগিতার মনোভাব রয়েছে, কিন্তু আমরা ব্যক্তিগতভাবে হয়তো তা করতে সাহস পাই না বা মনে সংকোচ লাগে। কিন্তু যখন একটি সংগঠন তৈরি হয় এবং সংগঠন মানুষের সেবায় কাজ করে তখন সবাই সবার সৃজনশীলতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তিগত এবং সামাজিক সমস্যা দূর করা যায়। তাই আমি মনে করি, মানব জীবনে সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া সংগঠন চর্চার মাধ্যমে আমাদের মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরি হয়। তাই ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে হলে অবশ্যই সংগঠন চর্চা করতে হবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদমুখ সংগঠন কী কী কাজ করে?

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির : চাঁদমুখ সংগঠন মূলত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০১৫ সালে ‘ভালো কাজ আন্দোলন’ স্লোগান নিয়ে ক’জন তরুণ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করে। চাঁদমুখ সংগঠনটি বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলায় প্রথম আইসিটি অলিম্পিয়াড আয়োজন করে চাঁদমুখ। এছাড়া গরিব ও রিকশাচালকদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে থাকে চাঁদমুখ। পবিত্র ঈদুল ফিতর ওই ঈদুল আজহায় অসচ্ছল পরিবার এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী ও ঈদের নতুন জামা বিতরণ কার্যক্রম করে আসছে। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সভা বা সেমিনার আয়োজন করে থাকে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদমুখ সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির : চাঁদমুখ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, তাই সমাজ ও মানব সেবায় চাঁদমুখ ভবিষ্যতেও কাজ করে যাবে। আমাদের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার একটি উপকমিটি রয়েছে। তারা চাঁদমুখের আগামী বছরগুলোতে করণীয় নিয়ে অনেকগুলো কার্যক্রম তৈরি করছে। এ মুহূর্তে আমি কাজের নামগুলো না বলে কাজের ধরনগুলো বলে যেতে চাই। চাঁদমুখ ভবিষ্যতে শিক্ষার মানোন্নয়নে, শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধিতে, তরুণ এবং যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে, সমাজের নানা অসঙ্গতি ও সমস্যা সমাধানে এবং জনসচেতনতা জাগ্রত করতে কাজ করবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুরে কী কী সামাজিক সমস্যা রয়েছে বলে মনে করেন?

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির : চাঁদপুরের অনেক সমস্যাই রয়েছে। প্রধান যে সমস্যা ছিলো নদী ভাঙ্গন, তা আমাদের চাঁদপুরের গর্ব, মেঘনা পাড়ের কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি সমাধান করেছেন। বর্তমানে চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাং এবং মাদক সমস্যা রয়েছে। এছাড়া শহরের শিশুদের জন্যে কোনো বিনোদন পার্ক বা শিশু পার্ক নেই। সুস্থ শরীর ও মানসিক বিকাশের জন্য বিনোদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য একটি শিশু পার্ক স্থাপন জরুরি। এছাড়া বড়দের জন্য বিনোদন পার্কের অভাব রয়েছে। চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেডে যে বঙ্গবন্ধু পর্যটন কেন্দ্রটি রয়েছে, তা আধুনিকীকরণ এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : তরুণদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ শিশির : তরুণদের উদ্দেশ্যে বলবো, তোমরা সঠিক সময় সঠিক কাজটি করো। সময় খুবই মূল্যবান। তাই সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে সঠিক মানুষ হয়ে সমাজ ও দেশের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করো। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ক্ষুধা, দুর্নীতি, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন সে সোনার বাংলা বিনির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে আজকের এই তরুণদেরই। সকল প্রকার অন্যায়, দুর্নীতি ও অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে সামাজিক ও সংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনে সাথে যুক্ত হয়ে দেশ ও মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করো। সর্বশেষ একটাই বলবো, বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই পড়ো, জ্ঞান অর্জন কর এবং মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়