বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

রোগীর মনোবল বৃদ্ধি করাই চিকিৎসকের কাজ
অনলাইন ডেস্ক

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খানের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ঢাকায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন দেখতেন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিয়ান এন্ড সার্জনস্ থেকে এফসিপিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করে ২০১৯ সালে যোগ দেন চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে দু বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২১ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে যোগ দেন।

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান একজন ইএনটি সার্জন। নাক, কান, গলা ও মুখ গহ্বর রোগের চিকিৎসক হিসেবে চাঁদপুরে তিনি রোগীদের নিরলসভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘চিকিৎসাঙ্গন’ বিভাগের মুখোমুখি হন।

সাক্ষাৎকার নেন : আলআমিন হোসাইন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে কোথায়?

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : আমার পৈত্রিক নিবাস ঢাকায়। জন্ম এবং বেড়ে ওঠা সেখানেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে জানতে চাই।

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : আমি ঢাকা ন্যাশনাল ব্যাংক পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জনস্ থেকে এফসিপিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হওয়ার ভাবনাটি সূচনা হলো কীভাবে?

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার ভাবনাটি সূচনা হয়। কেননা চিকিৎসা একটি মহৎ পেশা। এ পেশায় থেকে মানুষের সেবা করার সুযোগ সবচেয়ে বেশি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হিসেবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কথা বলুন।

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসেবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে সেবা প্রদানের প্রথম দিনটি ছিলো আমার এবং আমার পরিবারের জন্যে বিশেষ দিন। নিজের স্বপ্নপূরণ ও সাধারণ মানুষের সেবা করার মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি অনুভব করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুরে যোগদান করেছেন কবে?

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : ২০১৯ সালে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যোগদান করি। ২০২১ সালে কনসালটেন্ট (জুনিয়র) হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োজিত হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি ইএনটি সার্জন (নাক, কান ও গলা রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক)। চাঁদপুরে এ রোগের চিকিৎসাব্যবস্থার সার্বিক দিক নিয়ে কিছু বলুন।

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : চাঁদপুরে কীভাবে ইএনটি রোগের উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা যায় আমরা সে চিন্তা করছি। মানুষ যাতে ঢাকা গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে চাঁদপুরেই উন্নত চিকিৎসাসেবা পেতে পারেন আমরা সে চেষ্টা করি। চাঁদপুরে এখন আমরা থাইরয়েড সার্জারি, অ্যান্ড্রোসকপির মাধ্যমে কাটা-ছেড়া ছাড়া কানের পর্দা অপারেশন ও ক্যানসারের প্রাথমিক ডায়াগনোসিস সেবা প্রদান করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রোগীদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কি?

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সকলকে সচেতন হবে। শরীরে কোনো প্রকার রোগ নিয়ে বসে না থেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কোনো প্রকার অপচিকিৎসা গ্রহণ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, সচেতনতার মাধ্যমে অপচিকিৎসা প্রতিহত করা সম্ভব।

চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসাজীবনের একটি সুখের এবং একটি দুঃখের স্মৃতির কথা বলুন।

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : চিকিৎসাজীবনের সুখের স্মৃতি অনেক। ক্যানসারের রোগীকে ডায়াগনোসিসের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার পর তার মুখের হাসি পেশাগত জীবনে পরম পাওয়া। যাদের বাঁচার কোনো আশাই থাকে না, কিন্তু চিকিৎসা গ্রহণের পর যখন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেন- এর চেয়ে সুখের আর কিছু হয় না।

দুঃখের স্মৃতি হলো রোগীরা যখন অপচিকিৎসার শিকার হন। বিশেষ করে গ্রামের এর প্রবণতা অনেক বেশি। এর ফলে একজন মানুষের অঙ্গহানি ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপচিকিৎসা রোধ করতে হলে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। দেখা গেলো, অনেক রোগের অপারেশনের প্রয়োজন নেই, কিন্তু অপারেশন করা হলো, এটা কিছু ঠিক না। তাই বুঝতে হবে, কোনটা চিকিৎসা আর কোনটা অপচিকিৎসা। আশার কথা হলো : মানুষ এখন আগের তুলনায় বেশি সচেতন।

আমি মনে করি, চিকিৎসাব্যবস্থায় রেফার সিস্টেম খুবই জরুরি, কেননা যিনি যে রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক তিনি সে রোগের সেবা প্রদান করবেন। রোগভেদে প্রয়োজনে অন্য চিকিৎসকের কাছে রেফার করবেন। এতে খুব সহজ ও দ্রুত মানুষের রোগমুক্তি হবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রোগমুক্ত জীবনযাপন করতে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, ওষুধ খাওয়ার চেয়ে বেশি জরুরি হলো সঠিক কাউন্সেলিং। এতে খুব সহজেই মানুষ আরোগ্য লাভ করতে পারেন। কেননা কাউন্সেলিংয়ের একজন রোগীর মনোবল বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, ফলে খুব দ্রুত হয়ে উঠেন। রোগীর মনোবল বৃদ্ধি করাই চিকিৎসকের কাজ। একজন চিকিৎসক যখন রোগীকে বলেন ‘ভালো আছেন’, তাতেই অর্ধেক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অবসরে কী করেন?

ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খান : জীবনের জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিনই বই পড়ি। সংবাদপত্র পড়ি। চিকিৎসাবিষয়ক বই বেশি পড়া হয়।

উল্লেখ্য, ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম খানের স্ত্রী ডাঃ ফারহানা রহমান গাইনী ও প্রসূতি রোগের চিকিৎসক। তিনি দু ছেলের জনক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়