প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২২, ০০:০০
হাঁটু, কোমর, নিতম্ব এবং গোড়ালীর ব্যথা
হাঁটু, কোমর, নিতম্ব ও গোড়ালীর ব্যথার মূল কারণ হলো সাইটিকা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও হাঁড় ক্ষয়।
সাইটিকা স্নায়ু
মস্তিষ্কের নিচ হতে ০.২৫ ইঞ্চি মোটা ঘাড়ের উপর দিয়ে মেরুদণ্ডের ভেতর দিয়ে ককিক্স পর্যন্ত এসে দুভাগে বিভক্ত হয়ে দু পায়ের মধ্য দিয়ে দু পায়ের অগ্রভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত স্নায়ুকে কেন্দ্রীয় স্নায়ু বলে। বিভিন্ন কারণে সাইটিকা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন : পড়ে গেলে, জোরে ঝাঁকুনি খেলে, উঁচু হিলযুক্ত জুতা পরলে অথবা মেরুরজ্জুতে কোনো খোঁচা লাগলে ইত্যাদি। যাদের হজমশক্তি দুর্বল এবং যারা কুঁজো (ঝুঁকে) হয়ে বসেন তাদেরও সাইটিকা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত থাকে।
সাইটিকা স্নায়ুর সমস্যাবলি
বাত : বাতের প্রধান লক্ষণ হলো কটিদেশীয় কশেরুকা অথবা শ্রেণীদেশীয় কশেরুকা ব্যথা করে অথবা কোমর থেকে পায়ের আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত বিশেষ করে হাঁটুতে ব্যথা করে। সাধারণত মহিলাদের বয়স যখন পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে যায় তখন যৌন হরমোনের গোলমালের কারণে এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকে; একে অস্টিও আর্থাট্রিস বলে। ব্যথার মূল কারণ ঢ-ৎধুতে ধরা পড়ে না। কারণ সমস্যা সাইটিকা নার্ভে হাড়ে নয়। কিন্তু গজও করলে ব্যথার মূল কারণ ধরা পরবে। এটি অত্যাধিক ব্যয়বহুল। তাই সকল রোগীর পক্ষে এ টেস্ট করা সম্ভব নয়।
যখনই কোনো রোগীর উপরে বসতে, হাঁটতে, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে অথবা মাটিতে পা ফেলতে সমস্যা হয় তখনই বুঝতে হবে তিনি বুঝতে হবে তিনি সাইটিকা সমস্যায় ভুগছেন।
চিকিৎসা : ১) প্রথমে দেহ থেকে টক্সিন বের করে দিন।
২) হ্যান্ড-রোলার ও ফুট-রোলার দিনে দুবার পাঁচ মিনিট করে রোলিং করুন।
৩) ৯, ১৬ ও সাইটিকা বিন্দুতে এক মিনিট করে দিনে দুবার চিকিৎসা করুন।
৪) হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্যে প্রতি রাতে খাবারের পরে দুটি লবঙ্গ, দুটি গোলমরিচ ও ৫ গ্রাম আদা ছেচে এককাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, একঘণ্টা পরে ছেকে নিয়ে পান করুন। এটি নিয়মিত পান করলে গ্যাসট্রিকের ঔষধ সেবন করতে হবে না।
গেঁটে বাত ও হাড়ক্ষয়
উপরের সমস্যার সাথে যদি থাইরয়েড/প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন ক্যালসিয়াম বিপাক ক্রিয়া বিঘœ ঘটে। এর সাথে যৌনগ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পটাসিয়াম বিপাক ক্রিয়া বিঘœ ঘটে। ফলে হাড়ের পুষ্টি যোগান ব্যহত হয় এবং বিভিন্ন জয়েন্টের হাড়গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। এই সময় দেহে পানির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জয়েন্টগুলো ব্যথা করে। কখনো কখনো গোড়ালী, হাঁটু ও হাতের কুনই ইত্যাদি বড় বড় জয়েন্টগুলো ফুলে যায়। একে গেঁটেবাত বলে।
সাধারণত বৃদ্ধ বয়সে দুর্বলতায় অথবা যারা লাগাতর সর্দিতে ভোগে তাদের দেহের অভ্যান্তরীণ উত্তাপ কম হওয়ায় এই সমস্যা দেখা দেয়। সময় মতো চিকিৎসা না করলে হার্টে এর কুপ্রভাব পড়ে। তখন একে রিউম্যাটিক ফেভার বলে।
চিকিৎসা : ক) উপরের চিকিৎসার সাথে ৮, ১১ ও ৩৬নং বিন্দুতে চাপ দিতে হবে। (চলবে)
অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন : বিভাগীয় প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।
[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]