শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম লেখা

কাদের পলাশ
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম লেখা

‘চাঁদপুর কণ্ঠ’ আমার কাছে এক ভিন্ন রকম অনুভূতির নাম। আমি নিজেকে শেকড় মনে রাখা মানুষ মনে করি। কারণ আমার অস্তিত্ব যেমনি অস্বীকার করতে পারি না, আমার পথচলায় যাঁর বা যাঁদের অবদান থাকে তাঁদের আমি কখনো ভুলি না। কৃতজ্ঞ না হই অকৃতজ্ঞ মানসিকতা আমার নেই। এজন্যে আমি আমার নিজেকে সবসময় ধন্যবাদ দেই।

চাঁদপুর কণ্ঠে ২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আমার প্রথম লেখা প্রকাশ পায়। লেখার শিরোনাম ছিলো ‘ভালোবাসার খোঁজে’। মূলত আমার তিন বছরের প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে আসার পর অনুভূতি প্রকাশ করেছিলাম লেখাটিতে। লেখাটি প্রথমে ছিলো মুক্তগদ্য। পরে অবশ্য গল্পের ঢং দিই। এর আগে শ’খানেক কবিতা লিখেছি। একটা উপন্যাসও লেখা হয়েছিলো ২০০২ সালে। সাদা গণিত খাতায় লেখা উপন্যাসটি কুয়েতের একটি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছি। কেনো লিখি জানি না, কেনো ফেলে দিলাম তাও জানি না। তবে কবিতা (কবিতার মতো করে) লেখার যে চেষ্টা ছিলো তা অন্তত আমার পরিবারের সদস্য আর ভাই-বন্ধুরা জানতো। বিশেষ করে আমার বড়োভাই (লেখক ও সাংবাদিক আবু ইউসুফ) ভালো করে জানতেন। তিনি আমাকে ব্যাপক উৎসাহ দিতেন। এখনো দেন।

সময়ের সাথে লেখালেখি চলতে থাকলো। কিন্তু লেখা প্রকাশ করতে হবে তা নিয়ে কখনো চিন্তাও করিনি। আমার বাল্যবন্ধু নিপুর মাধ্যমে কবিবন্ধু কবির হোসেন মিজির সাথে পরিচয় হওয়ার আগের কথা। আমি তখন কুয়েত প্রবাসী। কবির মুঠোফোনে আমার গান শুনতে চাইলো। এর আগে অবশ্য আমার বন্ধু নিপু তাকে বলেছে যে, আমি সখ করে গান গাই। গাওয়ার চেষ্টা করি। কুয়েতে বসেই তাকে গান শোনালাম। এরপর দেশে এসে কবির মিজির সাথে দেখা হলো, কথা হলো। জানলাম সে কবিতা লিখে। তার লেখা পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়। আমি কবির মিজিকে বললাম, আমার লেখাগুলো প্রকাশ করতে চাই। কবির মিজি বললো, লেখা পাঠিয়ে দে। মনোনীত হলে অবশ্যই ছাপবে। আমি ঠিকানা দিতে বললাম। সে ঠিকানা দিলো, কবির হোসেন মিজি, শাহী ফার্মেসী, মিশন রোড, চাঁদপুর। ‘ভালোবাসার খোঁজে’ লেখাটি পাঠালাম। কবির মিজি রিসিভ করে চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামের বিভাগীয় সম্পাদক ক্ষুদীরাম দাসের কাছে পৌঁছে দিলেন। এখনকার সাংবাদিক কবির হোসেন মিজি তখন ভিন্ন পেশার মানুষ। এখন শহরের অলিগলি ছুটে বেড়ানো এক্টিভ সাংবাদিক হিসেবেই সবাই চেনে ও জানে। লেখক মানুষ তাই সুযোগ পেলেই তার সাথে আড্ডায় মেতে উঠতাম। কিন্তু এখন আর হয়ে উঠে না। সময় আর বাস্তবতা তা হতে দেয় না।

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ আমার অণুগল্পটি প্রকাশ করবে আগের রাতে জানতাম। সেদিন রাতে ঘুমাতে পারিনি। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। রাত যেন ভোর হয় না। একপ্রকার ঘুমহীন রাত কাটলো। ভোরে পত্রিকার স্টলে পৌঁছে গেলাম। তখনো পেপারের বান্ডিল খোলা হয়নি। যখন খোলা হলো, পাতা উল্টে বেজায় খুশি। তিন কপি দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ কিনে বাড়ি আসি। মা-কে দেখাই, ভাই ও বোনকে দেখাই। কিন্তু অন্য কাউকে দেখাতে সাহস পেলাম না। কী কারণে জানি না। তবে কেনো যেনো ইতস্তত হলো অন্য কাউকে দেখাতে। এরপর দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বিভাগীয় সম্পাদক ক্ষুদীরাম দাসের সাথে মুঠোফোনে কথা হলো, দেখা হলো। সম্পর্কটা নিবিড় হলো। প্রতি সপ্তাহে আমার লেখা প্রকাশ শুরু হলো। বলে রাখা ভালো, জীবনের দ্বিতীয় গল্প লিখেই পুরস্কার জিতেছি। তখন চাঁদপুর কণ্ঠ বিষয়ভিত্তিক গল্প প্রতিযোগিতার আয়োজন করতো। এখনো করে, কিন্তু অংশ নেই না। আমার দ্বিতীয় প্রকাশিত লেখাটির নাম ছিলো ‘বিচ্ছেদের অনল’। প্রতিযোগিতার বিষয় ছিলো ‘বিচ্ছেদ’। পুরস্কারটি জিতে গেলাম। এরপর চাঁদপুর কণ্ঠে লিখে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছি। আজও লিখে চলেছি। ইতোমধ্যে আমার দুটি গল্পের বই, একটি কবিতা, উপন্যাস, একাধিক গবেষণা গ্রন্থ ও তিনটি সম্পাদনা গ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছে। আরো অন্তত তিনটি পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত রয়েছে।

আমার লেখার উৎকর্ষের জন্যে অবশ্যই চাঁদপুর কণ্ঠের কাছে ঋণী। এ ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। কারণ চাঁদপুর কণ্ঠ আমার লেখা ছাপার সুযোগ করে দিয়েছে বলেই হয়তো লেখক হিসেবে অন্তত পরিচয় দিতে পারছি। আমার লেখা এখন জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, লিটলম্যাগসহ বিভিন্ন কাগজে প্রকাশ হচ্ছে। কাগুজে পত্রিকার সে রমরমা দিন এখন আর নেই। এখন ভার্চুয়াল যুগ। তবুও চাঁদপুরের পাঠক হৃদয় জয় করে আছে এ পত্রিকাটি।

পত্রিকাটিতে সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করেছি দীর্ঘদিন। ২০১৪ সাল থেকে প্রায় ৪ বছর বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে চলে কণ্ঠের সাথে আমার পথ চলা। একজন লেখক ও সাংবাদিক হিসেবে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আরো সফলতা ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।

লেখক : সম্পাদক, দৈনিক শপথ; স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, যমুনা টেলিভিশন;

সাধারণ সম্পাদক,

চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়