প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০
স্মৃতিতে অম্লান তুমি চাঁদপুর কণ্ঠ
১৭ জুন ২০২৪ চাঁদপুর কণ্ঠের ৩০ বছর পূর্তি। ৩০ বছর পথচলা, ৩০ বছর ঘটনাবহুল জীবন অতিবাহিত হওয়া এত বিশাল ব্যাপার। মানুষের জীবনে এই দীর্ঘ সময়ে ঘটে যায় কত ঘটনা। মনের গহীনে পুঞ্জীভূত হয় কত স্মৃতি। আজ আমার প্রিয় পত্রিকা চাঁদপুর কণ্ঠ সদর্পে এগিয়ে চলেছে স্মৃতির বোঝা নিয়ে নীরবে-নিভৃতে। কত শত বিচিত্র ঘটনার সাক্ষী হয়ে। ভাবলে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যাই। ভাবতে খুবই ভালো লাগে যখন দেখি পত্রিকাটি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে।
১৯৯৪ সালে যখন পত্রিকাটি ছোট আকারে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তখন থেকেই পত্রিকাটির সাথে আমার সখ্যতা। প্রকাশক ইকবাল-বিন-বাশার ভাই ও বিলকিস আপার সাথে আমার খুব আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। সেই পথ ধরেই আরও বেশি চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতি আমার আগ্রহ ছিল। আমি পত্রিকাটি প্রকাশের সময় পুরাণবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতাম। আমাদের স্কুলে চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকাটি রাখা হতো। তখন থেকেই পত্রিকাটির প্রতি আমার সখ্যতা। পত্রিকাটির বিভিন্ন আঙ্গিকের খবর আমায় খুব আকৃষ্ট করতো। সবচেয়ে বেশি ভালোলাগত পত্রিকাটির নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা, দলমত নির্বিশেষে সব রকমের সংবাদ প্রকাশিত হওয়া। দেশের ও দেশের বাইরের গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্য সম্বলিত খবর প্রকাশ হওয়াটাও আমার মনকে খুব আকৃষ্ট করতো।
আস্তে আস্তে পত্রিকাটি দৈনিক পত্রিকায় উত্তীর্ণ হলো। প্রচার ও প্রকাশের পরিসর আরও ব্যাপ্ত হলো। দৈনিক পত্রিকার বৈশিষ্ট্যে স্বমহিমায় নিজে সমৃদ্ধ হলো। চাঁদপুর শহর যেমন ‘ইলিশের বাড়ি’ হিসেবে প্রসিদ্ধ লাভ করেছে, তেমনি চাঁদপুর কণ্ঠও বিতর্কের অন্যতম পীঠস্থানে পরিণত হয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত ভাইয়ের হাত ধরে। ২০০৯ সাল থেকে চাঁদপুর কণ্ঠ-পাঞ্জেরী বিতর্ক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে একঝাঁক বির্তাকিক ও তীক্ষè ক্ষুরধার সুবক্তা। সবই শাহাদাত ভাইয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সুফল। শুধু তাই নয়, এই পত্রিকাটি লেখক, পাঠক ও সাংবাদিক তৈরিরও সোপান।
আমি চাঁদপুর কণ্ঠের নিয়মিত পাঠক। একদিন চাঁদপুর কণ্ঠ না পড়লে মনে হয় কী যেন একটা অতৃপ্ত রয়ে গেল। এ বছর চাঁদপুর কণ্ঠের ৩০ বছর, মনে হয় এই তো সেদিন পড়লাম সাপ্তাহিক চাঁদপুর কণ্ঠ। দেখতে দেখতে ৩০টা বছর কেটে গেল। কবির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে ইচ্ছে করে ----
“সে যে কাল হলো কতকাল,
তবুও যেন মনে হয় সেদিন সকাল”
আজ চাঁদপুরবাসীর প্রয়োজনের তাগিদ পূরণ করে চাঁদপুর কণ্ঠ হয়ে উঠেছে একান্ত আপন। দৈনিক ম্যাগাজিন পৃষ্ঠাগুলো দিয়ে চাঁদপুরবাসী পাচ্ছে মনের খোরাক। যেমন- সাহিত্যপাতা, নারীকণ্ঠ, ক্রীড়াকণ্ঠ, চিকিৎসাঙ্গন, শিক্ষাঙ্গন, পাঠক ফোরাম, সুচিন্তা, বিতর্কায়ন, ইসলামী কণ্ঠসহ আরও নানান বিষয়। এসব নানান খবরের মধ্য দিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠ হয়ে উঠেছে ‘আমাদের কণ্ঠ’, ‘জনগণের কণ্ঠ’। প্রতিষ্ঠা লগনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩০ বছর চাঁদপুুর কণ্ঠ প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রাণের কথাটি প্রকাশ করে বলতে হয়-
“শুভ আরম্ভ, ক্ষুদ্র থাকে না
পরিপূর্ণতা লভে।
আজিকার এই প্রতিপাদ চাঁদ
পূর্ণচন্দ্র হবে।”
স্বমহিমায়, সদর্পে এগিয়ে যাচ্ছে চাঁদপুর কণ্ঠ। সততা, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা, বস্তুনিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা পত্রিকাটিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি রইল আন্তরিক শুভ কামনা। শুভ হোক চাঁদপুর কণ্ঠের দীর্ঘ পথচলা, লাভ করুক শতায়ু।
লেখিকা : কল্পনা সরকার, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষিকা, পুরাণবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পুরাণবাজার, চাঁদপুর। বর্তমান ঠিকানা : কদমতলা রোড, নতুনবাজার, চাঁদপুর।