রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০

প্রেরণা আর ভালোবাসার নাম চাঁদপুর কণ্ঠ

মাজহারুল ইসলাম শফিক
প্রেরণা আর ভালোবাসার নাম চাঁদপুর কণ্ঠ

সালটি খুব সম্ভব ১৯৮৭। আমি তখন ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণিতে পড়ি। সুযোগ পাই চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক রূপসী চাঁদপুর পত্রিকায় লেখার। নিজ নামে না অন্য এক ভাইকে লিখে সাহায্য করতাম। ১৯৯৫ সালের শেষ দিকে যুক্ত হই সাপ্তাহিক চাঁদপুর কণ্ঠে। তখন এতো প্রযুক্তি ছিলো না। সংবাদ লেখা সহজ হলেও পত্রিকা অফিসে পাঠানো ছিলো খুবই কষ্টকর। নৌপথে লঞ্চই ছিলো হাইমচর থেকে চাঁদপুরে সংবাদ প্রেরণের একমাত্র মাধ্যম। চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে যুক্ত হয়ে ঘুরে ঘুরে পাঠক সংগ্রহ করতে হয়েছে। নিজের লেখা কোনো সংবাদ যখন পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে নামসহ প্রকাশ হতো, মনে হতো যেনো কিছু একটা জয় করে ফেলেছি। এতে সুখ যেমন ছিলো, যন্ত্রণা এবং বিড়ম্বনাও ছিলো অনেক।

খুব সম্ভবত ১৯৯৯ সাল হবে। হাইমচর উপজেলার তৎকালীন একটি রাজনৈতিক দলের হালচাল নিয়ে আমার সংবাদ প্রকাশিত হলে চরম এক অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন চাঁদপুর কণ্ঠের অফিস ছিলো গুয়াখোলা রোডের মাথায়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সকাল না হতেই ওই রাজনৈতিক দলের জেলা পর্যায়ের এক শীর্ষ নেতা পত্রিকা অফিসে ফোন করে একের পর এক হুমকি দিতে থাকে সংশ্লিষ্ট সংবাদদাতাকে (আমাকে) হাইমচর তেলির মোড়ে জীবন্ত জ্বালিয়ে দিবে ইত্যাদি। পত্রিকা জগতে যাঁর হাতে আমার দীক্ষা, চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত নৈতিকতার শক্তিতে ছিলেন এক বিশাল হিমালয়। তখন তিনি তার কথায় আঁৎকে উঠলেও আপস করেননি এবং ভয়ে একেবারে চুপসে যাননি।

তখন তরিৎ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলো টিএন্ডটির ল্যান্ড ফোন। তিনি তা-ই অবলম্বন করে তৎকালীন টিএন্ডটির ইনচার্জ শাখাওয়াত ভাইকে একরকম বাধ্য করে আমার বাড়িতে পাঠান। আমাকে খাসের দিঘির পাড়ের টিএন্ডটি অফিসে উপস্থিত করে কল ব্যাক করে সব বিস্তারিত শোনান। বললেন সতর্ক থাকতে। যদিও তৎকালীন হাইমচরে আমার ভিত ততোটা দুর্বল ছিলো না। একজন প্রতিনিধির প্রতি কতোটা দায়িত্বশীল ছিলেন কাজী শাহাদাত, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আমাকে এতো কষ্টকর উপায়ে সন্ধান করে সতর্ক করা। সত্যিই তিনি চাঁদপুর জেলায় সাংবাদিকদের জন্যে প্রশান্তির এক বিশাল বটবৃক্ষ।

সত্য প্রকাশে এরূপ অনেক ঘটনার শিকার হতে হয়েছিলো আমাকে। হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের ঈশানবালার বহুল আলোচিত শেফালী হত্যার সংবাদ, সুদীপ্ত চাঁদপুর কর্মসূচি বাস্তবায়নে চরম দুর্নীতির সংবাদ, হাইমচর উপজেলা ভবন নির্মাণ কাজে দুর্নীতির সংবাদ, মেঘনার ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং প্রকল্পের দুর্নীতির সংবাদ ছিলো উল্লেখযোগ্য। প্রেরণা, ভালোবাসা, দায়িত্ব পালনের এক পরম ঠিকানা হওয়ায় আজও দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে সম্পর্ক রেখেছি অটুট। আল্লাহ এ পত্রিকার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি দান করুক। সুস্থ রাখুক সকল কলাকুশলীকে।

লেখক : সাবেক মফস্বল সম্পাদক; সাবেক বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলামী কণ্ঠ ও ব্যুরো ইনচার্জ (হাইমচর), দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ; সাবেক সভাপতি, হাইমচর প্রেসক্লাব।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়