প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০
সংবাদের বিশ্বস্ততায় চাঁদপুর কণ্ঠ
বর্তমান সময়ে কোনো কোনো জাতীয় পত্রিকাও ধারাবাহিকভাবে প্রকাশনা অব্যাহত রেখে টিকে থাকতে পারে না বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে। সেখানে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ টিকে থাকার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সুন্দর পরিকল্পনা আর সততা থাকলে যে কোনো ভালো কাজ বা প্রকাশনাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। দীর্ঘ সময় পার করে ৩০ বছর পূর্তিতে জেলাবাসীর অকুণ্ঠ ভালোবাসা নিয়ে যে পত্রিকাটি আজ পাঠককুলে সমাদৃত সেই চাঁদপুর কণ্ঠের আমি একজন কর্মী--কথাটা মনে হতেই নিজের অজান্তে দেহ-মন কেমন জানি আনন্দে পুলকিত হয়ে উঠে। সত্যি আমি গর্বিত একটি ভালো মানের পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ পাওয়ায়। শুধু কাজ করার সুযোগেই আমি আনন্দিত নই, আনন্দিত এজন্যে যে, চাঁদপুর কণ্ঠ শুধু সংবাদই প্রকাশ করে না, কাজ করে সমাজ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়েও। সবকিছু মিলিয়ে বিবেচনা করলে অকপটে স্বীকার করতে হবে যে, সমাজ গঠনে বলিষ্ঠ নাম চাঁদপুর কণ্ঠ। যার মাঝে রয়েছে সত্য ও ন্যায়নীতির বহিঃপ্রকাশ।
চাঁদপুর জেলাবাসীর বাইরেও অনেক মানুষের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে চাঁদপুর কণ্ঠ। প্রতিদিন সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা, বিরহ ব্যথাসহ জানা অজানা নানা সংবাদ বহন করে গ্রাহকের হাতে নিয়মিত পৌঁছছে পত্রিকাটি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কর্মসংস্থানের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে সংবাদপত্র। সংবাদপত্রে কাজ করে যেমনিভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে দেশের বেকার যুব সমাজ, তেমনিভাবে নিজেদের মেধা বিকাশেরও একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে সংবাদপত্র। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, দেশের সর্বত্র সংবাদপত্রের ছড়াছড়ি। দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক বিভিন্ন নামে প্রকাশিত হচ্ছে সংবাদপত্র। প্রতিদিনই নিত্যনতুন সংবাদ সংগ্রহ করে আমাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে সংবাদপত্র। আর অজানাকে জানার বাসনা থেকেই মানুষ কিনছে পত্রিকা।
মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণে জেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর সংবাদ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠকে যাঁরা মানুষের কণ্ঠে পরিণত করেছেন তাদের কথা উল্লেখ না করলে হয়তো ৩০ বছরপূর্তিতে আমার এই লেখাটি অপূর্ণ থেকে যাবে বলেই মনে হয়। তাই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই উল্লেখ করতে হয় চাঁদপুর কণ্ঠের প্রাণপুরুষ দুজন মানুষের কথা। যাদের স্নেহের পরশে শেখার আগ্রহে নিজেকে চাঁদপুর কণ্ঠের একজন সংবাদকর্মী হিসেবে পরিচিতি দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার সেই প্রিয় মানুষ দুজন হলেন চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক রোটারিয়ান আলহাজ অ্যাডঃ ইকবাল-বিন-বাশার পিএইচএফ, আর অপরজন হলেন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত। তাদের ছত্রছায়ায় কাজ করতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি, তাঁরা অত্যন্ত ভালো মানের মানুষ। যাঁদের ভেতর রয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা। যাঁরা সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে বা সমাজের ন্যায়সংগত কথা বলতে গিয়ে সকল সময় নিজেদেরকে সাম্প্রদায়িক চেতনার ঊর্ধ্বে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। সংবাদ প্রকাশ করার ক্ষেত্রে স্থান পেয়েছে তাঁদের ন্যায়, নীতি আর নিরপেক্ষতা। চিন্তা করেছেন সামাজিক ভালো কাজ সম্পন্ন করার, পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা। যাঁরা চাঁদপুর কণ্ঠকে কখনো দলভুক্ত বা ব্যবসাবান্ধব করেননি, করেছেন সমাজবান্ধব।
বর্তমান সময়ে অর্থনৈতিক কারণে যেখানে অনেক পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ করতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে, সেখানে চাঁদপুর কণ্ঠ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে ২০০৯ সালে চালু করা জেলাব্যাপী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আজ চাঁদপুরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীগণ নিজেদেরকে অকপটে কথা বলার মত যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। চাঁদপুর কণ্ঠ স্থাপন করেছে বিতর্ক ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন শুধু বাংলা বিতর্ক শিক্ষাই দেয় না, শিক্ষার্থীদেরকে যুগোপযোগী শিক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে চালু করেছে ইংরেজি বিতর্ক।
সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই চাঁদপুর কণ্ঠ তাদের নিরপেক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলছে সমানভাবে। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতাকে দূরে রেখে সকল সম্প্রদায়ের সংবাদকে প্রাধান্য দিয়েছে সমান্তরালভাবে, যা অনেক সংবাদপত্রেই দেখা যায় না। এমন নিরপেক্ষতাসম্পন্ন পাঠক নন্দিত চাঁদপুর কণ্ঠের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি পরম আন্তরিকতায়। বেঁচে থাকুক চাঁদপুর কণ্ঠ, বেঁচে থাকুক চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবার।
লেখক : চীফ রিপোর্টার, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ।