শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন অভিভাবকগণ

চাঁদ ট্রেডার্সের সার্ভিসিং সেন্টার : আতঙ্কিত অনুশীলনকারী খেলোয়াড়রা

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥
চাঁদ ট্রেডার্সের সার্ভিসিং সেন্টার : আতঙ্কিত অনুশীলনকারী খেলোয়াড়রা

চাঁদপুর জেলা শহরে স্টেডিয়াম ছাড়া খেলাধুলা ও হাঁটা-চলার জন্যে স্টেডিয়ামের পাশেই রয়েছে আউটার স্টেডিয়াম। এই আউটার স্টেডিয়ামে দুপুর ১টার পর থেকেই বিভিন্ন বয়সী ফুটবলার ও ক্রিকেটারগণ নিয়মিত অনুশীলন করে থাকেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ নিয়মিত হাঁটা ও ব্যায়ামসহ বাচ্চাদের নিয়ে চলে আসেন আউটার স্টেডিয়ামে।

সপ্তাহের শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন মাঠে গেলেই দেখা যাবে কেউ নেটের মধ্যে, আবার কেউ নেটের বাইরে এসে ফুটবল ও ক্রিকেট নিয়ে অনুশীলন করছেন। কিন্তু মোটরসাইকেল চালানোর জন্যে খেলোয়াড়রা ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারছেন না। কিছুক্ষণ পর পরই স্টেডিয়ামের নিচে ভাড়াকৃত চাঁদ ট্রেডার্সের সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মচারীদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন খেলোয়াড়রা। এই সেন্টারের কর্মচারী রিফাতসহ বেশ ক’জন কিছুক্ষণ পরপরই অরুণ নন্দী সুইমিং পুলের গেট থেকে শুরু করে একেবারে সুইমিংপুল ও খেলার মাঠে অনেক উচ্চস্বরে হর্ন বাজিয়ে খুব দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালান। উচ্চস্বরে হর্ন এবং মোটরসাইকেলের বিকট আওয়াজে অনুশীলনকারী খেলোয়াড়দের খেলা এবং অনুশীলনে বিঘ্ন ঘটছে। আউটার স্টেডিয়াম লাগোয়া সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমী ও ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির খেলোয়াড়রা নিয়মিত অনুশীলন করেন এখানে। এই একাডেমির মধ্যে বিশেষ করে ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে বিভিন্ন প্রাইমারি ও কিন্ডারগার্টেনে পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়া নারী ও পুরুষ ক্রিকেটাররা অনুশীলন করেন। শিশুদের অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের অনুশীলনের জন্যে মাঠের পাশে বসে থাকেন। মোটরসাইকেল চালকদের হর্ন এবং দ্রুত গতিতে চালানোর কারণে তারা ভয়ে থাকেন।

মাঠে অনুশীলনকারী ক্রিকেটারদের অভিভাবকরা এ প্রতিবেদককে বলেন, দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন বয়সী মোটরসাইকেল চালক ও সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মচারীরা দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে আমরা ভয়ে থাকি, আর বাচ্চারাতো অনেক সময় ভয়ে মাঠে আসতে চায় না। নেটের ভেতর ক্রিকেট খেললেও উচ্চ আওয়াজের কারণে তারা ঠিকমতো অনুশীলনে মনোযোগী হতে পারছে না। আমরা এ বিষয়টিতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

শনিবার বিকেলে আউটার স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়দের অনুশীলন চলাকালে এ প্রতিবেদক মাঠে উপস্থিত থেকে ক্রিকেটারদের সাথে আলাপচারিতার সময় বেশ ক’বার দেখতে পান, অনেক দ্রুত গতিতে হর্ন বাজিয়ে বেশ ক’বার মোটরসাইকেল চালাতে থাকেন রিফাতসহ সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মচারীরা। এরপর সার্ভিসিং সেন্টারের মোটরসাইকেল চালক রিফাতকে দ্রুত গতিতে কেনো মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা সার্ভিসিংয়ের কাজ করি। গাড়ি ঠিক করার জন্যে জোরে গাড়ি চালাতে হয় এবং জোরে হর্ন বাজাতে হয়। ‘মাঠে অনুশীলন করছেন খেলোয়াড়রা, এই সময়ে গাড়ি চালানো ঠিক কিনা’ জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি।

চাঁদ ট্রেডার্সের সার্ভিসিং সেন্টারে কর্মরত ম্যানেজার হানিফের সাথে এ বিষয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, আপনি কোন্ চ্যানেলের? কী জিজ্ঞেস করেন? কেন করেন? বললাম, আমি চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করি। তিনি বলেন, ট্রায়ালের জন্যে এভাবেই গাড়ি চালাতে হয়। আমরা ট্রায়ালের জন্যে নিয়মিত এভাবেই গাড়ি চালিয়ে দেখি, পরবর্তীতে সমস্যা সমাধানের জন্যে আমাদের এভাবে চালাতেই হয় গাড়ি। আর আপনি কী নিউজ করবেন? মাহাজনদের সাথে গিয়ে পারলে আলাপ করেন।

আউটার স্টেডিয়ামে ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলনরত নিয়মিত প্রমীলা ক্রিকেটার নাছরিন আক্তার নিলার সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা এই একাডেমিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনুশীলন করতে আসি। সার্ভিসিং সেন্টারসহ এখানকার গ্যালারীর নিচে ভাড়াকৃত গোডাউনের মালামাল নামানোর জন্য বড় বড় কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেল চালকদের অত্যাচারে আমাদের প্র্যাকটিসে মারাত্মক সমস্যা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধানের আশা করছি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি কামরুল হাসান স্যারসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের নিকট।

আউটার স্টেডিয়ামে অনুশীলনকারী ছোট্ট ক্রিকেটার আশফাক চৌধুরী বলেন, আমরা অনেক ছোট ছোট ক্রিকেটার এখানে খেলি। প্রতিদিন বিকেলে মোটরসাইকেল চালকরা খুব দ্রুত গতিতে এবং জোরে আওয়াজ দিয়ে গাড়ি চালায়। আমরা তখন ভয়ে থাকি। ভয়ে আমাদের খেলতে ইচ্ছে হয় না। আমরা এখানে সবাই দুপুরের পর খেলতে আসি। যারা গাড়ি চালায়, তারা যদি এখানে দুপুরের পর না আসে, তাহলে আমরা নিশ্চিন্তভাবে অনুশীলন করতে পারবো।

আউটার স্টেডিয়ামে হাঁটতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ ক’জন নারী এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা বিকেলের দিকে এইখানে দল বেঁধে একসাথে হঁ^াটতে আসি। আমাদের হাঁটার মাঝখানে দেখা যায় মোটরসাইকেল চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন। অনেক সময় ভয়ে ভয়ে হাঁটতে হয় আমাদের। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অনেকেরই জীবনে পঙ্গুত্বও বরণ করতে হয়। আমাদের সাথে ভয়ে অনেক মহিলাই এখন আর আসতে চায় না মোটরসাইকেল চালকদের কারণে।

শনিবার সন্ধ্যায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুর সাথে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কঠিন ব্যবস্থা নিবো। খেলা চলাকালীন সময় মোটরসাইকেল ট্রায়াল দিবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়