প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবসে শুরু হবে বিজয় দিবস কাবাডি টুর্নামেন্ট। এ টুর্নামেন্টে অংশ নিবে জেলার ৮ উপজেলার বালক ও বালিকা দল। টুর্নামেন্টের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাবাডি উপ-কমিটি।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় মতলব উত্তর উপজেলা ও হাজীগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার বালিকা দলের খেলার মাধ্যমে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে।
এ টুর্নামেন্টে বালক ও বালিকা গ্রুপে অংশ নেয়া দলগুলো হলো : ‘ক’ গ্রুপে ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, হাইমচর ও মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং ‘খ’ গ্রুপে কচুয়া , শাহরাস্তি, চাঁদপুর সদর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কাবাডি দল।
টুর্নামেন্টের ফিকশ্চার অনুযায়ী জানা যায়, উদ্বোধনী দিনে সকাল সাড়ে ১১টার ম্যাচে অংশ নিবে মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলা (বালিকা) এবং দুপুর আড়াইটার ম্যাচে অংশ নিবে মতলব উত্তর ও হাজীগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা (বালক), বিকেল সাড়ে ৩টায় অংশ নিবে মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলা (বালক) দল।
৯ ডিসেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় খেলবে ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর উপজেলা (বালিকা) এবং সকাল সাড়ে ১১টায় খেলবে শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা (বালিকা) দল। একই দিন দুপুর আড়াউটায় বালক গ্রুপের খেলায় প্রথমটিতে অংশ নিবে ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর উপজেলা এবং দ্বিতীয়টিতে বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচে অংশ নিবে শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা কাবাডি দল।
১০ ডিসেম্বর রোববার বালক ও বালিকা গ্রুপের সেমি-ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে এবং ১২ ডিসেম্বর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটির সদস্য ও কাবাডি উপ-কমিটির সম্পাদক আলহাজ্ব ওমর পাটওয়ারীর সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তারা জানান, আমরা খেলার জন্যে সকল কিছু প্রস্তুত করেছি এবং প্রত্যেক উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্বরত কর্মকর্তাসহ সেক্রেটারিদের কাছে খেলার ফিকশ্চার পাঠিয়ে দিয়েছি। বিজয়ের মাস উপলক্ষেই প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও উপজেলার দলগুলোকে নিয়ে খেলার আয়োজন করা হয়েছে। আমরা আশা করি খেলাগুলো দেখার জন্যে ক্রীড়ামোদী দর্শকরা মাঠে উপস্থিত থাকবেন।
সাবেক বেশ ক'জন কাবাডি খেলোয়াড় ও বতর্মানে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে নিয়মিত কাবাডি খেলা ও অনুশীলনকারী ক'জন কাবাডি খেলোয়াড়ের সাথে এ প্রতিবেদকের খেলা নিয়ে আলাপকালে তারা জানান, কাবাডি এশিয়া মহাদেশের একটি জনপ্রিয় খেলা। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের এটি একটি প্রাচীন খেলা। এই উপমহাদেশে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন নামে এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। যেহেতু আঞ্চলিক খেলা, তাই কোনো বিধিবদ্ধ নিয়মকানুন ছিলো না। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের হাডুডু খেলার পোশাকি নাম কাবাডি। কিছুদিন আগে পর্যন্ত হাডুডু খেলাই ছিলো বিনোদনের অন্যতম উৎস।
ধারণা করা হয় যে, প্রাগৈতিহাসিক যুগে যখন খাদ্য সংগ্রহের পাশাপাশি নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে মানুষ এককভাবে বা দলীয়ভাবে শিকার করতো এবং বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে শিখেছিল, তখনই কাবাডির সূচনা। পুরো দক্ষিণ এশিয়াতে কাবাডি প্রচলিত থাকলেও এর উৎপত্তিস্থল পাঞ্জাব।
কাবাডির উৎপত্তি সম্পর্কে আরেকটি মত হচ্ছে, মহাভারতে বর্ণিত অভিমন্যু কর্তৃক কৌরব সৈন্যদের চক্রব্যুহ ভেদ করার ব্যর্থ চেষ্টার ঘটনা থেকে ধারণা নিয়ে এ খেলার সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের খেলাধুলার গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে বিভিন্ন ফেডারেশন পুনর্গঠন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। চাঁদপুর জেলায় কাবাডি খেলার জন্যে তেমন কোনো প্রশিক্ষণ দিতে দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে পহেলা বৈশাখ ও বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা শহরের স্টেডিয়াম কিংবা বড়স্টেশন মোলহেডে কাবাডি খেলার আয়োজন করতে দেখা যায়। জেলা ক্রীড়া সংস্থা শুধু দুটি দিবসেই নয়, সবসময়ই যেনো এ খেলাটির আয়োজন ও খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কাছে এটাই প্রত্যাশা করছি।