শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ০০:০০

একটা গল্প নিয়ে এসো

আয়েশা সিদ্দিকা
একটা গল্প নিয়ে এসো

(গত সংখ্যার পর)

“আরে কী খবর”! কিছুটা অবাক হয়ে, হয়তো সেও ভাবেনি রাস্তায় অবনির সাথে দেখা হয়ে যেতে পারে।

“এইতো, পড়ানো শেষ আপনার”?

“হ্যাঁ, শেষ হলো”।

“আমি মাত্র যাচ্ছি”।

“আমি তো বের হয়ে তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম”।

কিন্তু ফোনটা সাইলেন্ট থাকায় অবনি টের পায়নি। অবনি মনে মনে ভেবেছিলো তাকে কোথাও চা খেতে বসার কথা বলবে। কিন্তু বলেনি এটা ভেবে যে যদি তার যাওয়ার তারা থাকে। যদি না করে দেয়। তাহলে অবনির ভালো লাগবে না। আরো ভেবেছিলো, অসুস্থ বেচারিকে আটকে রাখার মানে নেই, বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নেয়া বরং শ্রেয়। এই ভেবে আর বলেনি। কিছুক্ষণ পরে স্ট্রেঞ্জার নিজেই প্রশ্নস্বরূপ বললো,

“চা খাওয়া যাক”।

অবনি সম্মতি জানিয়ে তাকে উত্তর দিল, “হ্যাঁ ঠিকাছে”।

এই কমার্সিয়াল এলাকায় চায়ের দোকান বিরল। অনেক খুঁজতে খুঁজতে ইসলামপুরের ভেতর থেকে তাঁতীবাজারের দিকের রাস্তাটায় অনেকগুলো ভাজাপোড়ার দোকানের পরে একটা চায়ের দোকানের দেখা মিললো। অন্যান্য খাবারও ছিলো সেখানে। দোকানের মামাকে চা দিতে বলে অবনি আর সে মুখোমুখি চেয়ারে বসলো। সে ট্যুরের ব্যাপারে খোঁজখবর নিলো। অবনি চেয়েছিলো স্ট্রেঞ্জারও যেত যদি ট্যুরে, তাহলে অবনীর ভালোই লাগতো। উপরন্তু তাকেই সবার থেকে আলাদা করে দেখে। “লেখালেখি কী হচ্ছে”?

অবনি কিছুটা মন খারাপ করে উত্তর দিল “হচ্ছে না, আপনার হচ্ছে”?

“কী করো সারাদিন বাসায়”?

“স্পেসিফিক কিছুই না”।

অবনি কী করে তা নিয়ে যেন তার কতো কৌতূহল।

“আর কিছু খাবে”?

“না, খাব না”।

এবার অবনি তাকে বিকেলের কাহিনি ব্যাখ্যা দিলো। “আমি চাচ্ছিলাম আপনাকে দেখা করার কথা বলতে, কিন্তু কী ভাবেন সেসব ভেবে বলিনি। তারপর ছটায় পড়ানোর সময় দিয়েছি। হিজাব পড়তে পড়তে ভেবেছি আপনার সাথে পথে দেখা হয়ে যেতে পারে। এখন কাকতালীয় ভাবে তাই হলো”।

অবনির ব্যাখ্যা দেয়ার মধ্যে সে দোকানের মামাকে এক প্লেট দই চিড়া বানিয়ে দিতে বললো। দুটো প্লেটে দিতে বলেছে। হয়ত কথাটা দোকানের মামা খেয়াল করেননি। একটা প্লেটেই দুজনকে দই চিড়া দেয়া হলো। তারা দুজনে একই প্লেটে দই চিড়া খেলো ও। কেউ দ্বিমত পোষণ করেনি। খেতে খেতে অবনি ভাবছিল “আমি তো অন্য কারোর সাথে এভাবে এক প্লেটে কিছু খাই না। কিন্তু আমার তো দ্বিমত ও নেই তার সাথে এক প্লেটে খেতে। বরং ভালো লাগছে আরোও”। রহস্যময় ভদ্রলোককে অবনি সবার থেকে আলাদা করে দেখে এই কথা সে এই মুহূর্তে বিশ্বাস করেই নিয়েছে। এতে আর তার কোনো সন্দেহ নেই নিজের প্রতি। কিন্তু খেতে খেতে সে আরোও একটা কথা ভেবেছে, “আচ্ছা যদি স্ট্রেঞ্জারকেও অন্য কোনো মেয়ের সাথে একই প্লেটে খেতে দেয়া হয়! তাহলে কী সে খাবে? খাবে হয়ত, হয়ত খাবে না”। তবে এসব চিন্তা অবনি কেন করছে সেটা সে নিজেও জানে না। যাই হোক, দই চিড়া শেষ হলে চা। ভদ্রলোকের খাওয়া বরাবরই আগে শেষ হয়ে। কালও অন্যথা হলো না। অবনীর অর্ধেক চা শেষ না হতেই তার পুরোটা চা শেষ হয়ে যায়। দই চিরার বেলায়ও একই অবস্থা হয়েছে। অবনি অবাক হয়েছে, স্ট্রেঞ্জার বুঝতেই পারলো না চায়ে চিনি দেয়া ছিল। কিন্তু সে বুঝতে পারলো না কেন! সে কী অন্যমনস্ক ছিল? নাকি অসুস্থতার জন্য বুঝতে পারেনি! কিন্তু সে অন্যমনস্ক যদি থাকে তাহলে সে কী ভাবছিল! এটা অবশ্য অন্যমনস্ক থাকার প্রথম ঘটনা না, সে আগেও অন্যমনস্ক ছিল। মাস ছয়েক আগের ঘটনা। তখন তার বাসা আর অবনীর আরেকটা স্টুডেন্টের বাসা একই রাস্তায় ছিলো। মাঝে মধ্যেই সে বাসার দিকে যাওয়ার সময় অবনীকে ফোন দিতো। একসাথে যাওয়ার জন্য। প্রথমবার যখন পাতলা খান লেন দিয়ে তারা হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে এগোচ্ছিলো কিছুদূর গিয়ে স্ট্রেঞ্জার অবনিকে প্রশ্নের সুরে বললো, “আইসক্রিম?”

সেবার প্রথম তারা একসাথে রাস্তায় হাঁটছিল, অবনীর তাকে এতটাও কাছের মনে হয়নি যে তার থেকে আইসক্রিম খাওয়া যায়। তাই সে উত্তর দেয় “না”।

কিন্তু কে শোনে কার কথা। অবনীর বারণ উপেক্ষা করে সে আইসক্রিম নিচ্ছিল, আর বলছিলো, “কোন ফ্লেভার আমি তো জানি না”?

এটাকে অবনীর প্রেমিক প্রেমিক কনসার্ন মনে হয়েছে। এভাবে অবনিকে কেউ কখনো জিজ্ঞেস করেনি তার কোন ফ্লেভারের আইসক্রিম পছন্দ তা। সে যখন বুঝলো না করে লাভ হবে না, তখন সে চকলেট ফ্লেভারের একটা আইসক্রিম হাত দিয়ে দেখিয়ে দিল। দুজনে আইসক্রিম খেতে খেতে অনেকদূর চলে গেছে। অবনীর আইসক্রিম যখন অর্ধেকটা শেষ হয়েছে তখন তার আইসক্রিম পুরোটা শেষ। অবনি জিজ্ঞেস করলো

“আচ্ছা আমি কী খুব আস্তে আস্তে খাচ্ছি”?

স্ট্রেঞ্জার বললো, “না না, আমি ই দ্রুত খেয়েছি”।

কাঠি আইসক্রিম হওয়ায় অবনীর মুখের চারপাশটায় বাচ্চাদের মতো লেগে একটা বাজে অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। সেদিকে লক্ষ্য করে স্ট্রেঞ্জার বললো, “কী অবস্থা হয়েছে, আমার কাছে কিন্তু টিস্যু নেই”।

এতক্ষণে অবনীর স্টুডেন্টের বাসার প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে তারা। হঠাৎ করে সে অবনিকে এক জায়গায় রেখে অন্য দিকে যাচ্ছিলো। কিছু না বলে যাওয়ায় অবনি কিছুটা বিরক্ত হলেও পরে বুঝতে পেরেছে সে টিস্যু কিনে নিয়ে আসতে গেছে। এসে অবনীর হাতে টিস্যুটা দিয়ে বলে মুছে নাও।

সে মুখের আইসক্রিম লাগা অংশটা মুছে, টিস্যুর প্যাকেটটা স্ট্রেঞ্জারের দিকে এগিয়ে দিতে যাবে তখনি সে বলে,

“আমার কাছে টিস্যু আছে, এটা তুমি নিয়ে যাও।”

অবনি উত্তর দেয়,

“তাহলে আপনি টিস্যুটা কেনো কিনতে গেলেন, আপনার থেকে একটু আমাকে দিলেই তো হতো”।

“হ্যাঁ তাইতো, মানে বাসায় টিস্যু আছে সেটা বলেছি”। সেদিন অবনি তাকে কিছুটা নার্ভাস হিসেবে অব্জার্ভ করে। কিন্তু কেন নার্ভাস হয়েছে তাই বুঝতে পারেনি অবনি। যদিও অবনি নিজেও যথেষ্ট নার্ভাস ছিলো। আর সেজন্যই মুখের চারপাশে আইসক্রিম লেগে বাজে অবস্থা তৈরি হয়েছিলো। এবার চায়ের গল্পে আসা যাক। অবনি বলার পরে সে দোকানের মামাকে অভিযোগ করলো চিনির ব্যাপারে। দোকানের একজন মামা বললো, “চিনি তো দেই নাই”।

আরেকজন বললো, “লিকারেই তো চিনি দেয়া থাকে”।

তারপর হিসেব মিললো। অবনি চা খেতে চাইল আরেকবার। এবার তাকে টিপ্যাক দিয়ে চা বানিয়ে দেয়া হলো যেন চিনি এড়ানো যায়। সবশেষে বিল দেয়ার সময় অবনি দিতে চেষ্টা করলেও ভদ্রলোকের জোড়াজুড়িতে সে ব্যর্থ হয়। সে বিল দিয়ে দিলে অবনীর অভিযোগ

“আপনি কেন বার বার সব বিল দেন?”

“আমি তোমাকে চা খেতে নিয়ে এসেছি, বিল তো আমারই দেয়ার কথা”।

অবনীর ফের প্রশ্ন,

“বারবার তো আপনিই আমাকে চা খেতে নিয়ে আসেন, আমি তো নিয়ে আসি না, তাহলে আমি বিলটা দিব কীভাবে?”

প্রশ্নের উত্তরে সে অবনি কে প্রশ্ন করে,

“কেন তুমি চা খেতে নিয়ে আসো না আমাকে?” এই সুযোগটাই যেন খুঁজছিল অবনি। এই কথাটা স্ট্রেঞ্জারকে জানানো উচিত, কেন সে তাকে চা খেতে ডাকে না কখনো। অবনি উত্তর দিলো “আপনি তো ব্যস্ত থাকেন, আমি চা খেতে ডাকলে যদি আপনি না করে দেন তাহলে আমার তা ভালো লাগবে না, যেচে খারাপ লাগাতে কে চায়। তাই আমি চা খেতে যাওয়ার কথা বলি না আপনাকে”। এবার ভদ্রলোক হাহা করে হেসে অবনির বলা কথাটাকে উড়িয়ে দিয়ে অবনিকে বলছে,

“ছ টায় স্টুডেন্টকে সময় দিয়েছো এখন সাতটা বাজে, এবার যাও। দেরি হয়ে যাচ্ছে।” অবনি আর কিছু না বলে তখনি পড়ানোর বাসায় চলে যায়। পড়ানো শেষ করে বাড়ি ফিরে ট্যুরের জন্য সবকিছু প্রস্তুত করছিলো, তার রুমমেটরা তাকে বেশ ভালোই সহায়তা করেছে। কেউ ড্রেসের সাথে হিজাব ম্যাচ করে দেয়া, কেউ আবার শাড়ির কুচিটা ভাজ করেও দিয়েছে, যেন ট্যুরে গিয়ে সহজভাবে অবনি শাড়িটা পড়তে পারে। মোটামুটি কাজ গুছিয়ে অবনি ঘুমাতে যাবে তখন স্ট্রেঞ্জার মেসেজ করেছে,

“ট্যুরের প্রিপারেশন কতদূর?”

আরেকজন বললো

“লিকারেই তো চিনি দেয়া থাকে”।

তারপর হুসেব মিললো। অবনি চা খেতে চাইল আরেকবার। এবার তাকে টি প্যাক দিয়ে চা বানিয়ে দেয়া হলো যেন চিনি এড়ানো যায়। সবশেষে বিল দেয়ার সময় অবনি দিতে চেষ্টা করলেও ভদ্রলোকের জোড়াজুড়িতে সে ব্যর্থ হয়। সে বিল দিয়ে দিলে অবনীর অভিযোগ

“আপনি কেন বার বার সব বিল দেন?”

“আমি তোমাকে চা খেতে নিয়ে এসেছি, বিল তো আমারই দেয়ার কথা”।

অবনীর ফের প্রশ্ন,

“বারবার তো আপনিই আমাকে চা খেতে নিয়ে আসেন, আমি তো নিয়ে আসি না, তাহলে আমি বিলটা দিবে কীভাবে?”

প্রশ্নের উত্তরে সে অবনি কে প্রশ্ন করে

“কেন তুমি চা খেতে নিয়ে আসো না আমাকে?” এই সুযোগটাই যেন খুঁজছিল অবনি। এই কথাটা স্ট্রেঞ্জারকে জানানো উচিত, কেন সে তাকে চা খেতে ডাকে না কখনো। অবনি উত্তর দিলো “আপনি তো ব্যস্ত থাকেন, আমি চা খেতে ডাকলে যদি আপনি না করে দেন তাহলে আমার তা ভালো লাগবে না, যেচে খারাপ লাগাতে কে চায়। তাই আমি চা খেতে যাওয়ার কথা বলি না আপনাকে”। এবার ভদ্রলোক হাহা করে হেসে অবনি কে বলছে

“ছ টায় স্টুডেন্টকে সময় দিয়েছো এখন সাতটা বাজে, এবার যাও। দেরি হয়ে যাচ্ছে।” অবনি আর কিছু না বলে তখনি পড়ানোর বাসায় চলে যায়। পড়ানো শেষ করে বাড়ি ফিরে ট্যুরের জন্য সবকিছু প্রস্তুত করছিলো, তার রুমমেটরা তাকে বেশ ভালোই সহায়তা করেছে। কেউ ড্রেসের সাথে হিজাব ম্যাচ করে দেয়া, কেউ আবার শাড়ির কুচি টা ভাজ করেও দিয়েছে, যেন সেখানে গিয়ে সহজে ভাবে অবনি শাড়িটা পরতে পারে। মোটামুটি কাজ গুছিয়ে অবনি ঘুমাতে যাবে তখন স্ট্রেঞ্জার মেসেজ করেছে,

“ট্যুরের প্রিপারেশন কতদূর?”

অবনী উত্তর দিল “চলছে”।

এবার সে নিজ দায়িত্বে নিজের ট্যুরের অভিজ্ঞতা অবনীকে শেয়ার করতে লাগলো। কী কী প্রয়োজন, নিয়ে যেতে লাগবে, এক এক করে অবনীকে স্মরণ করিয়ে দিতে লাগলো। এতটা কনসার্ন ছিলো, এতটা কনসার্ন হয়ত অবনী নিজেও নিজের প্রতি না। কেউ একজন তার প্রতি কনসার্ন এই ব্যাপারটা অবনীর ঠিক হজম ই হয় না । সে আবেগাপ্লুত হয়ে যায়। কারণ অবনীর ভাবনা পৃথিবীতে সে নিজেই একমাত্র তার জন্য। আর কেউ তার জন্য না। ফ্যামিলি ছাড়া কেউ তাকে একটু কেয়ারিং অথবা কনসার্ন হলে সেটা তার জন্য গিফট, এবং এটা সীমিত সময়ের জন্য ও বটে।

“দুই জোড়া জুতা (একজোড়া কেডস, একজোড়া স্লিপার), কয়েক জোড়া মোজা, পর্যাপ্ত জামাকাপড়, তোয়ালে মাস্ট, শাড়ি যদি পর তাহলে শাড়ি, সেই সাথে ম্যাচ করে কসমেটিকস, মেডিসিন মাস্ট, স্যালাইন, তেঁতুল, কয়েকটা মেডিসিনের নাম ও বলা হলো অবনীকে (মাথাব্যথা, জ্বর, পেটে ব্যথা, এসিডিটি, বমি, হেক্সিজল)”।

“কিন্তু এত কিছু যদি আমার মনে না থাকে? বিশেষ করে মেডিসিন নিতে হবে এটা তো আমার মাথায়ই আসেনি”। অবনির তাকে উত্তর।

“শুনো এগুলো সব কাগজে লিখে লিস্ট করো। তারপর একটা একটা করে ব্যাগে নিয়ে সেটায় টিক দাও, আমি বাজার করার সময় এই কৌশল টা ফলো করি। তুমিও ফলো করতে পারো”।

“বাহ ভালো আইডিয়া তো, আমার তো এভাবে মাথায় আসেনি”।

“তাহলে আমাকে ধন্যবাদ দাও”।

“আচ্ছা, ধন্যবাদ। বললেন জন্য দিলাম। একটা প্রশ্ন করতে পারি”?

“হ্যাঁ”।

“এত কনসার্ন কেন আপনি আমাকে নিয়ে”।

সে উত্তর দেয়

“এটা তো যে কারোর জন্যই আমার পরামর্শ, নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম, এতে কারোর উপকার হলে তাতে আমারই ভালো লাগবে”। ব্যাপারটা হলো সে অবনীকে নিয়ে অনেক কনসার্ন হলেও সেই কথা সে মুখে স্বীকার করবে না কখনো।

অবনীর ফের তাকে প্রশ্ন “তাহলে কনসার্ন না আপনি? আচ্ছা, আমি ট্যুর থেকে কী নিয়ে আসতে পারি আপনার জন্য”?

সে যা চাইলো! তার অমন একটা উত্তরের জন্য অবনি একদন অপ্রস্তুত ছিলো।

সে বললো, “একটা গল্প নিয়ে এসো”।

আচ্ছা, সে কী জানে? সেই অবনির জীবনের হাজারো গল্পের সমাহার। তার প্রতিটি কথা অবনির কাছে বেদবাক্যতুল্য। তার সাথের প্রতিটি মুহূর্তকে অবনি এক একটি গল্প হিসেবে মনে গেথে রেখেছে। সে কী জানে? সে অবনির জীবনের সব থেকে খারাপ সময়ে ঠিক কতোটা মেডিসিন হিসেবে কাজ করেছে। সে কী জানে? টইটুম্বুর জলে হাবুডুবু খেতে খেতে ডুবে যাওয়া একটা প্রাণকে হাতে ধরে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সে। সে কী জানে? অবনির সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পুরোটা ক্রেডিট অবনি তাকে দেয়। সে কিনা শুধু একটা গল্প চাইলো! অবনি তো তাকে নিজের সব লেখালেখি উৎসর্গ করতে প্রস্তুত। (সমাপ্ত)

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়