প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ০০:০০
বাবা যাদের সরকারি অফিসে ছা-পোষা কেরানী
তাদের আবার উৎসব কী! তিন বেলা খেতে পাই, এই তো বেশি।
আমরা হিন্দু। অফিসের বড়কর্তা
বাবাকে দিয়েছিলেন নিমন্ত্রণ- ‘বেড়াতে এসো সপরিবারে,
ঈদে খুব আনন্দ হয়।’
প্রভাতে দেখলাম মুসলিম লোকদের পরনে
পাঞ্জাবি-টুপি, হাতে জায়নামাজ, দল বেঁধে
যাচ্ছে ঈদগাহে। নামাজ শেষে পশুর গলায় চালাবে ছুরি।
বেলা বাড়তেই বাবা ডেকে বললেন- ‘চল বেড়িয়ে আসি
স্যারের বাসায়। সম্মানিত লোক, সাক্ষাৎমাত্র
পা ছুঁয়ে করবি সালাম।’
বাবার কথা রাখলাম। স্যার আমাকে
অবাক করে হাতে ধরিয়ে দিলেন
দুটি পাঁচশো টাকার নোট, ঈদের সালামী।
এবং পরম মমতায় বসালেন পাশের সোফায়; খেতে দিলেন
দুধেল সেমাই, ভাজা মিষ্টি পাঁপড়। বাবার সঙ্গে স্যার
কথা বলছিলেন এমন হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিমায়, দেখলে কে বুঝবে
অফিসের বড়কর্তা আর সামান্য কেরানীতে চলছে আলাপ!
স্যারের একটা ছেলে, আমারই মতন বয়স। দুজনে
অনেকটা সময় খেললাম ক্রিকেট, দেখলাম
কুরবানীর মাংসের কাটাকুটি।
যখন বিদায় নিয়ে চলে আসবো, আমাকে দিলো
খাসির মাংসভরা একটা থলি। প্রায় দু’কেজি ওজন।
চোখ জলে ঝাপসা হয়ে এলো, আর ন¤্রতায়
নতমাথায় ভাবলাম- ‘ধর্ম যাই হোক, কোন উৎসবই
কারও একার নয়, আর ঈদও একটা উৎসব।’