বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

আমার দুই যুগে হাজার সংখ্যার অনুভূতি
জমির হোসেন

এক.

প্রতিটি মানুষকে সমাজে কিছু না কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। যে যার মতো করে পছন্দের কাজকে ত্বরান্বিত করে। তবে কিছু কর্ম সমাজের উচ্চ শিখরে দাঁড়িয়ে আছে। তার মধ্যে অন্যতম শিল্প ও সংস্কৃতি। যা সাহিত্যের বিশেষ অংশ বহন করে। সাহিত্য উন্নত সমাজ গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই সাহিত্যচর্চা যেনতেন কাজের মধ্যে পড়ে না বলে এই পেশায় বা নেশায় আসা ব্যক্তির সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।

এরপরও বলবো, আমার দেখা গত দুই যুগে বর্তমানে চাঁদপুরে সাহিত্য চর্চার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। একটা সময় লেখালেখির জায়গাটা সংকুচিত ছিলো। সমসাময়িক ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে, জেলার সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকা পাঠকের অগাধ ভালোবাসায় ধারাবাহিক সংস্করণ অব্যাহত রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে পাঠক ফোরামের হাজার সংখ্যা পাঠকের মাঝে এখনও বিদ্যমান হয়ে আছে।

এর চেয়ে আনন্দের বার্তা আর কী হতে পারে একজন খুদে সাহিত্যকর্মী হিসেবে। পাঠক ফোরামের সাথে আমার দুই যুগের বেশি পথচলা। সেই কিশোর লেখক থেকে এখনও লিখছি। হাঁটি হাঁটি পা করে হাজার সংখ্যা অতিক্রম করা চাট্টিখানি কোনো বিষয় নয়। প্রকাশনার সাথে যারা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে তাদের এ অবদানের কথা কোনো প্রকার অস্বীকার করা যাবে না।

দুই.

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠা সম্পাদক ও প্রকাশক আলহাজ্ব অ্যাডঃ ইকবাল-বিন-বাশার। তাঁর সাহসী পদক্ষেপে চাঁদপুরবাসী এ রকম একটি মানসম্মত নির্ভুল পত্রিকা পাঠকের হাতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। পত্রিকার প্রধান সম্পাদক রোটাঃ কাজী শাহাদাত। যাঁর হাত ধরে পত্রিকাটি এখনও সর্বোচ্চ পাঠকসমাধিত একটি বহুল আলোচিত পত্রিকা। কাজী শাহাদাতকে সাংবাদিক গড়ার কারিগর বললে ভুল হবে না। অনেকেই চাঁদপুর কণ্ঠের সুবাদে তাঁর হাতের ছোঁয়ায় চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করছেন। যাকে নীরব আনন্দ বলা যায়।

তিন.

চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামে যখন লেখা শুরু করি তখন কিশোর বয়স। সেই সময় একটি লেখা জমা দিয়ে পরবর্তী সপ্তাহে লেখাটি ছাপার জন্যে অপেক্ষা করতাম। যদি লেখাটি প্রকাশ হতো আনন্দের সীমা থাকতো না। পাশাপাশি আরও বেশি লেখার উৎসাহ বেড়ে যেতো। আর যদি কোনো কারণে তা ছাপা না হতো তবে সেদিন মন এতো বেশি খারাপ হতো তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। অনেকটা আকাশে মেঘের মতো। সেই সময় পাঠক ফোরামের দায়িত্বে ছিলেন শাহাদাত হোসেন শান্ত। ওই সময় পাঠক যে খুব বেশি পড়তো লেখা ছাপা হলেই তা বোঝা যেতো। আর বর্তমান পাঠক ফোরামের সাহিত্য সম্পাদক তরুণ লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান। সাহিত্য নিয়ে যার দিনরাত সময় কাটে। আজ থাক, তাকে নিয়ে আরেক দিন লিখবো।

আরেকটি বিষয় তখন জাতীয় দৈনিক আজকের কাগজ, মানবজমিন ও দৈনিক ইত্তেফাকের মতো বড় পত্রিকায় অনেকের লেখার সুযোগ ছিলো। আজকের কাগজ ও মানবজমিন পাঠকের জন্যে পাঠক ফোরাম নামে একটা পাতা বের করতো। ওই সময়ে অনেক পাঠক প্রিয় ছিলো পাতাটি সেখানে নিয়মিত লেখক ছিলাম। তবে চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামে লেখার মজাই ছিলো অত্যন্ত আনন্দের। নিজ জন্মস্থানের পত্রিকা বলে কথা!

চার.

বর্তমান পাঠক ফোরামে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যাপক ছোঁয়ায় সব কিছুতে একটা প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। তাই পাঠক ও লেখক উভয়ই সচেতন। অন্যদিকে কম্পিউটারের বাটন টিপলে যেকোনো বিষয় খুব সহজে জানা যায়। এক কথায় সব কিছু হাতের নাগালে। আমরা যে সময় লেখা শুরু করেছি অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছিলো। খাতা আর কলমের অবাধ ব্যবহার। পোস্ট অফিসের মাধ্যম ছিলো আমাদের একমাত্র ভরসা। যেকোনো লেখা গন্তব্যে পৌঁছতে এক সপ্তাহ লেগে যেতো আর এখন মেইলের সেন্ড বাটন পুশ করলে কয়েক সেকেন্ডে লেখাটি গন্তব্যে পৌঁছে যায়। তবে আমার মতে সেই কালই ভালো ছিলো। কারণ অপেক্ষার প্রহর গুণতে খুবই ভালো একটা সময় কাটতো। চাঁদপুর কণ্ঠ এমন একটি পত্রিকা জাতীয় দৈনিক এর আদলে বিভিন্ন পাতা বের হয়, তাই শেখার মতো অনেক কিছু পাতায় পাতায় ভেসে উঠে পাঠক, লেখকের উভয়ের সান্নিধ্যে। প্রতিটি পাতা গুরুত্ব বহন করে। শিক্ষাঙ্গন, ক্রীড়াকণ্ঠ, শিশুকণ্ঠ, সাহিত্য পাতা, সুচিন্তা, চিকিৎসাঙ্গন এবং সার্বজনীন পাঠক ফোরাম, যা মফস্বলের একটি পত্রিকায় হাজার সংখ্যার মাইলফলক হয়ে ইতিহাস গড়েছে। যদিও আমার জানা নেই, বাংলাদেশের এমন কোনো বিভাগে এ রকম কোনো মফস্বল পত্রিকার পাঠক ফোরামের হাজার সংখ্যার রেকর্ড রয়েছে কি না।

অবশেষে পাঠক ফোরামের সাথে লেখকসহ সংশ্লিষ্ট সকল শুভানাধ্যায়ীদের নিরন্তর শুভেচ্ছা। সেই সাথে হাজার সংখ্যার সাথে পরবর্তী সংখ্যার দৃঢ়ভাবে শুভ কামনা করছি।

লেখক : জীবনের যত গান, প্রবাসে মেঘ জোৎস্না এবং সভাপতি ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেসক্লাব।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়