রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

যানজটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসা সময়ের দাবি
মীর আব্দুল আলীম

রাজধানী ঢাকায় বাস করে ১১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। প্রতি একরে প্রায় ৫০০ জন বাস করে, নিউইয়র্কে যেখানে ২৫-৩০ জন। এতো মানুষের চাপ সামাল দিতে পারছে না রাজধানী ঢাকা। তাই রাস্তায় যানজট লেগেই আছে। ‘যানজট’ রাজধানী ঢাকার প্রধান সমস্যা। রাজধানীতে প্রতিদিন বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আয় নষ্ট হচ্ছে যানজটের কারণে। জাতীয় বাজেটের মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে, যা প্রবৃদ্ধির প্রায় ২ দশমিক ৫ ভাগ। এছাড়া প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মাথাপিছু আয়ের ক্ষতি হচ্ছে মাইনাস ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। ২ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিআইডিএসের মহা-পরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় দিনে প্রায় ১৫টির মতো গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের যে মানুষ শহরে বাস করে তার অধিকাংশ ঢাকায়। তাই রাজধানীতে মানুষের চাপ বেড়েছে, বেড়েছে যানজটও।

রাজধানীর ১৫ শতাংশ যাত্রী দখল করে আছেন মোট সড়কের ৭০ শতাংশ। এক গবেষণা তথ্যে দেখা গেছে, বর্তমানে ঢাকায় কম-বেশি ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ যাত্রী প্রাইভেট গাড়িতে যাতায়াত করেন। এ প্রাইভেট কারের দখলে থাকে ৭০ শতাংশেরও বেশি রাস্তা। বাকি ৮৫ শতাংশ যাত্রী অন্য কোনো ধরনের গণপরিবহন ব্যবহার করেন। অর্থাৎ তারা গণপরিবহনের মাধ্যমে সড়কের মাত্র ৩০ শতাংশ এলাকা ব্যবহারের সুযোগ পান। সড়কের কম করে হলেও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের বেশি দখল হয়ে আছে অবৈধ পার্কিং এবং নানা ধরনের দখলদারের হাতে। এ ছাড়া রাজধানীর ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় প্রধান সড়কেই হেঁটে চলেন নগরবাসী। তাহলে যানজট নিরসন হবে কী করে?

রাজধানীতে চলাচলকারী যানবাহন প্রতিদিন যানজটের কারণে প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা আটকে থাকে। যেটা আমাদের শ্রমঘণ্টা অপচয়জনিত কারণে জাতীয় উৎপাদনশীলতার ক্ষতি, জ্বালানি সাশ্রয় বা অসহনীয় দুর্ভোগ কমাতে কোনোই কাজে লাগছে না। যত্রতত্র গাড়ি চালানো, পুরাতন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল, চালকদের অদক্ষতা এবং ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনই এজন্যে দায়ী। দিন দিন যেনো এ সমস্যা আরো তীব্র হচ্ছে। বিশেষ করে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়, হাসপাতাল, বিপণিবিতান প্রভৃতি জায়গায় যাতায়াত করা এক দুঃস্বপ্নের যন্ত্রণার মত। বার মাসই এ শহরে যানজট লেগে থাকে। বিশ্বের মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকার মতো আর কোথাও বিরক্তিকর যানজটের আবির্ভাব হয় কি না আমাদের জানা নেই। যানজটের কারণে ঢাকা আজ এক গুরুতর অসুস্থ নগরী। যাতায়াত দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে নিরবচ্ছিন্ন যানজটে। যানজট সমস্যার সমাধানের জন্য নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু তাতে যানজট সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে কার্যকর অগ্রগতি এখনো লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যানজট রাজধানী ঢাকার কোটি মানুষের মেগাসিটিকে স্থবির করে দিচ্ছে। জনসংখ্যার তুলনায় রাস্তার স্বল্পতা এবং স্বল্পগতির অযান্ত্রিক যানবাহনের আধিক্যকে এ স্থবির অবস্থার জন্য দায়ী করা হয়। রাজপথে রিক্সার আধিক্য, ট্রাফিক আইন না মানা, পরিকল্পনার অভাব, ফুটপাত দখল, প্রাইভেট কারের সংখ্যা স্পুটনিক গতিতে বৃদ্ধি পাওয়াও যানজটের অন্যতম কারণ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যানজটের কারণ হিসেবে ভাঙাচুরা রাস্তা এবং কারণে-অকারণে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িকেও দায়ী করা হচ্ছে। যেখানে-সেখানে পার্কিং, ফুটপাত দখল করে দোকান বসানো ইত্যাকার সমস্যা তো বহু পুরানো। সে সঙ্গে রাজধানীতে দিনদিন বৈধ অবৈধ গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।

থেমে নেই বিআরটিএ। এমন পরিস্থিতিতেও বিআরটিএতে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, প্রতিদিন ঢাকার রাস্তায় কতগুলো গাড়ি নামছে। কিন্তু প্রতিদিন কি ঢাকার রাস্তা বড় হচ্ছে? তবে গাড়ি যারা নামাচ্ছেন তারা প্রয়োজনেই নামাচ্ছেন। এগুলো ব্যবহার করছেন। এত গাড়ি আছে, প্রতিদিন এত নতুন নতুন গাড়ি নামছে, এরপরও পাবলিক বাসে মানুষ সিট পাচ্ছে না। ঠেলাঠেলি করে এমনকি গেটে ঝুলে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নগরীতে চলাফেরা করছেন। আর এ ধরনের অগণিত গাড়ির বহরে ভরে যাচ্ছে নগরীর রাস্তাগুলো। গাড়ির ভেতরে যেমন ভিড় মানুষের, বাইরেও তেমনি ভিড় গাড়ির। ফুটপাতগুলোয়ও কিলবিল করছে মানুষ।

আসলে আমাদের দেশটার কোনো গতি নেই; আছে দুর্গতি। যানজটের যে অবস্থা তাতে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত ঢাকার মানুষকে মোটমাট কত বছর রাস্তায় আটকে থাকতে হয়? এক হিসেবে তা সাড়ে সাত বছর। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৬৮ বছর। এ হিসেবে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত যাতায়াতের সময়ের আনুমানিক যোগফল হবে কমসে কম সাড়ে সাত বছর। এটা গায়েবি গজব নয়, মনুষ্যসৃষ্ট আজাব। এ আজাব থেকে কবে মুক্তি মিলবে?

আমাদের যতটুকু সড়কপথ আছে তাতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নানাবিধ পদক্ষেপ নিলে যানজট ৮০ ভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব। আমরা বিশ্বের বড় বড় শহর এমনকি হজের সময় মক্কা, মদিনা, অলিম্পিক গেমসহ নানা বড় আসরের সময় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সে সময় কত সহজেই না যানজট নিয়ন্ত্রণ করছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। অলিম্পিকের মতো আসরে দিন গুনে জোড়-বেজোড় নম্বরের প্রাইভেট গাড়িগুলো চলাচল করতে দিচ্ছে। একদিন জোড় সংখ্যার গাড়িগুলো রাস্তায় চলার অনুমতি পাচ্ছে তো পরদিন পাচ্ছে বিজোড় সংখ্যার গাড়িগুলো। বিশেষ মুহূর্তগুলোতে বাইরের শহরের গাড়িগুলো শহরে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে আগে থেকেই সরকারের পক্ষ থেকে পত্রিকায় ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ হচ্ছে না, হচ্ছে না যানজটও। জোড়-বিজোড় নম্বরের গাড়িগুলো রাজধানীতে দিন গুণে চলাচল করতে দেয়া যেতে পারে। ঢাকা মহানগীর যানজট, পার্কিং সমস্যা, পরিবেশ দূষণ ও জনদুর্ভোগের পরিপ্রেক্ষিতে আশু করণীয় হলো পার্কিং চাহিদা নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন, বিনামূল্যে পার্কিং বন্ধ করা এবং অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য জরিমানার ব্যবস্থা করা, সর্বত্র জায়গা ও সময়ের মূল্যানুসারে পার্কিং ফি নেয়া, পার্কিং থেকে প্রাপ্ত অর্থ পাবলিক পরিবহনের মানোন্নয়নে ব্যয় করা, নগরের ব্যস্ততম এলাকায় প্রাইভেট কার চলাচলের ক্ষেত্রে কনজেশন চার্জ গ্রহণ করা, প্রাইভেট কারের লাইসেন্স সীমিত করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে প্রাইভেট গাড়ির পরিবর্তে পাবলিক পরিবহনের ব্যবস্থা করা, প্রাইভেট গাড়িনির্ভর অবকাঠামো (ফ্লাইওভার, পার্কিংয়ের স্থান তৈরি) নির্মাণ না করা, পাবলিক পরিবহন, জ্বালানিমুক্ত যান ও পথচারীদের সুবিধা বৃদ্ধি করা, জায়গা ও সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা ও প্রাইভেট কারের পার্কিং সমস্যা সমাধানে পার্কিংয়ের জন্য সময় ও স্থান অনুসারে অর্থ গ্রহণই যুক্তিযুক্ত।

রাজধানীর যানজট সহনীয় মাত্রায় আনতে স্বল্পগতির যানবাহন ও প্রাইভেট কারের সংখ্যাধিক্যের দিকে নজর দেয়া দরকার। ট্রাফিক আইন যাতে সব ক্ষেত্রে কড়াকড়িভাবে মানা হয় সে ব্যাপারেও যতœবান হতে হবে। ফুটপাত থেকে দোকানপাট উঠিয়ে দেয়া, যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং দিনের ব্যস্ত সময়ে প্রাইভেট কার চলাচল কমিয়ে আনার কথাও ভাবতে হবে। রাজধানীতে জনসংখ্যার তুলনায় সড়কের সংখ্যা এমনিতেই কম। তারপরও রয়েছে স্বল্পগতির রিকশা ও প্রাইভেট কারের আধিক্য। ফুটপাত দখল করে দোকানপাট চালানো কিংবা রাস্তায় যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং এ মেগাসিটিতে নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ হলো, প্রাইভেট কারের অপরিকল্পিত পার্কিং। ঢাকার প্রায় সব সড়কেই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে গাড়ি পার্কিং। ফলে সড়কে যানবাহন চলাচলের জায়গা কমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। আবার পার্কিংয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ প্রাইভেট কার ব্যবহারে আরো উৎসাহিত হচ্ছে। গাড়ি বাড়ছে, বাড়ছে পার্কিং সমস্যাও। পার্কিং সমস্যা নিরসনে এর আগে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলেও সমাধান মেলেনি। যানজট নিয়ন্ত্রণ, সম্পদ ও জায়গার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পার্কিং সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান বের করা জরুরি। রাজধানীর যানজট নিরসনে সঠিক পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্তের অভাব দেখা যায়। পার্কিং সমস্যা নিরসনে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণের বিকল্প কিছু নেই। ঢাকার রাস্তা, ফুটপাত, খেলার মাঠ, পার্ক সর্বত্রই প্রাইভেট কার পার্কিংয়ের জন্য নামমাত্র মূল্যে বা বিনামূল্যে জায়গা বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়া ভবনে আবশ্যিকভাবে কার পার্কিংয়ের জন্য জায়গা রাখা ও পার্কিংয়ের জন্য ভবন নির্মাণ করে শহরে প্রাইভেট কারকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। মতিঝিল এলাকায় নির্মাণাধীন সিটি সেন্টারে ৫০০ প্রাইভেট কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে ১০টি ফ্লোর বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় প্রতিটি ভবনে প্রাইভেট কারের পার্কিং সুবিধা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; যার ফলে ভবিষ্যতে প্রাইভেট কার বৃদ্ধি পাবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের হিসাব মতে, মতিঝিল-দিলকুশা এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার প্রাইভেট কার পার্কিং করা হয়। প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ না করা হলে এবং সেই সঙ্গে বিকল্প পরিবহন সুবিধা দিতে না পারলে শুধু পার্কিং সুবিধা বৃদ্ধি করে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। জনসমাগমস্থলে গাড়ি পার্কিং করা হলে মানুষের চলাফেরা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নষ্ট হয়। আমরা চাইলেই ফুটপাত বা রাস্তায় ব্যক্তিগত জিনিস রাখতে পারি না। অথচ সর্বত্রই প্রাইভেট কার পার্কিংয়ের জন্য রাস্তা এবং ফুটপাত ব্যবহার করা হচ্ছে। ফুটপাত ও রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করায় মানুষের চলাচল বিঘিœত হয়, আশপাশের ব্যবসা কেন্দ্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, জনসাধারণের অবাধ বিচরণের অধিকার খর্ব হয়।

যানজট এখন শুধু রাজধানীই নয়, জাতির জন্যও এক বিড়ম্বনার নাম। বিদেশিরা বাংলাদেশের রাজধানীকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে থাকে যানজটের কারণে। বলা যেতে পারে, যেসব কারণে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বিঘিœত হচ্ছে, যানজট তার অন্যতম। যানজটের জন্য মাত্রাতিরিক্ত অভিবাসনও দায়ী। প্রায় সোয়া কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজধানী ঢাকা ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্যতম মেগাসিটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। যানজটসহ নানা সমস্যায় ঢাকা মহানগরী বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সমস্যাবহুল নগরী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যানজট নিরসনে প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ। বিচ্ছিন্নভাবে একক পদক্ষেপ নিয়ে এই সর্বগ্রাসী সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। রাজধানীর রাস্তার তুলনায় যানবাহনের আধিক্য যানজটের জন্য অন্যতম দায়ী। এর পাশাপাশি রয়েছে ট্রাফিক নিয়ম না মেনে চলার প্রবণতা। ফুটপাত অপদখল, রাস্তার অপব্যবহারও যানজটের অন্যতম কারণ। মূলত অপরিকল্পিত নগরায়নই এজন্য দায়ী। ফলে সড়কের ওপর চাপ বেড়েছে, যার মূল্য দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

যানজটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসা সময়ের দাবি। এটাও সত্য, রাজধানী ঢাকার যানজট সমস্যা রাতারাতি সমাধান হবে না। সরকারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে, যাতে জনগণ এ দুর্ভোগ থেকে রেহাই পায়। এ সমস্যার সমাধান না হওয়ার কারণ হচ্ছে জনসংখ্যার ঘনত্ব। ঢাকায় প্রতি একরে প্রায় ৫০০ জন বাস করে, নিউইয়র্কে যেখানে ২৫-৩০ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব আরো বাড়ছে। রাজধানী থেকে বাণিজ্যিক অফিস আদালত, বিশ^বিদ্যালয় যত দ্রুত সম্ভব স্যাটেলাইট শহর পূর্বাচলে স্থানান্তর করতে হবে। তাতে জনসংখ্যার চাপ কমে যাবে। জনগণের স্বার্থে সরকার যানজট নিরসনে অচিরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সমাজ গবেষক। ব-সধরষ-হবংিংঃড়ৎবসরৎ@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়