রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

মাঘ মাসের কৃষি

কৃষিবিদ আজিজুল ইসলাম
মাঘ মাসের কৃষি

বাংলা পঞ্জিকা মতে এখন মাঘ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। মাঠে মাঠে হাড় কাঁপানো শীত আর কুয়াশার দাপট চলছে। প্রকৃতির বৈরি আচরণ তোয়াক্কা না করে বাংলার কৃষকরা বোরো ও রবিশস্য আবাদে মাঠে কাজ করছেন।

সময়টা এখন শীতের শাক-সবজি উৎপাদনের। মাঠে বেশি ফলন পেতে শীতকালীন শাক-সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, ওলকপি, শালগম, গাজর, শিম, লাউ, কুমড়া, মটরশুঁটি এসবের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। উত্তম কৃষি চর্চা অনুসরণ করে জৈবসার, জৈব বালাইনাশক, ফেরোমন ফাঁদ সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বালাই দমন করতে হবে। শীতকালে মাটিতে রস কমে যায় বলে সবজি ক্ষেতে চাহিদা মাফিক সেচ দিতে হবে।

বোরো ধান রোপণের উত্তম সময় এখন। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ ধান রোপণ হয়েছে। কেউ বা ক্ষেতে চাষ দিচ্ছেন আবার কেউ কেউ চারা রোপণ শেষ করেছেন। বোরো ধান রোপণের জন্যে উপরি সার প্রয়োগ করতে হয়। ধানের চারা রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিন পর প্রথম কিস্তির সার, ৩০ থেকে ৪০ দিন পর দ্বিতীয় কিস্তি এবং ৫০ থেকে ৫৫ দিন পর শেষ কিস্তি হিসেবে ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। বোরো ধানে নিয়মিত সেচ প্রদান, আগাছা দমন, বালাই ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য পরিচর্যা করতে হবে। বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরি থেকে বাঁচাতে রাতে ঢেকে রাখতে হবে। রোগ ও পোকা থেকে ধান গাছকে বাঁচাতে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ, আন্তঃপরিচর্যা, যান্ত্রিক দমন, উপকারী পোকা সংরক্ষণ, ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা, আলোর ফাঁদ এসবের মাধ্যমে ধানক্ষেত বালাই মুক্ত করতে হবে। এভাবে রোগ ও পোকার আক্রমণ প্রতিহত করা না গেলে শেষ উপায় হিসেবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

এখন গম চাষের সময়। গমের জমিতে যেখানে ঘনচারা রয়েছে তা পাতলা করে দিতে হবে। গম গাছ থেকে যদি শিষ বের হয় বা গম গাছের বয়স ৫৫ থেকে ৬০ দিন হয় তবে জরুরিভাবে গমক্ষেতে একটি সেচ দিতে হবে। এতে গমের ফলন বৃদ্ধি পাবে। ভালো ফলনের জন্যে দানা গঠনের সময় আরেকবার সেচ দিতে হবে। গম ক্ষেতে ইঁদুর দমন করতে হবে।

শীতের এ সময় দেশের অনেক এলাকায় ভুট্টা আবাদ করা হয়। ভুট্টাক্ষেতে গাছের গোড়ার মাটি তুলে দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য কারণে এ সময় ভুট্টা ফসলে আর্মিওয়ার্ম, ফল আর্মিওয়ার্ম ইত্যাদি পোকার আক্রমণ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছ থেকে লার্ভাগুলো হাত দ্বারা সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

এখন নতুন আলু উঠার সময়। আলু ফসলে নাবি ধসা রোগ দেখা দিতে পারে। সে কারণে স্প্রেয়িং শিডিউল মেনে চলতে হবে। মড়ক রোগ দমনে দেরি না করে ২ গ্রাম এক্সট্রামিল অথবা ডাইথেন এম ৪৫ অথবা সিকিউর অথবা মেলুডি ডুও প্রতি লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। মড়ক লাগা জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। তাছাড়া আলু ফসলে মালচিং, সেচ প্রয়োগ, আগাছা দমনের কাজগুলোও করতে হবে। আলু গাছের বয়স ৮০ দিন হলে মাটির সমান করে গাছ কেটে দিতে হবে এবং ১০ দিন পর আলু তুলে ফেলতে হবে। খুব সহজে ও কম খরচে আলু উত্তোলন করতে পটেটো ডিগার যন্ত্র ব্যবহার করা যায়। ক্ষতির হার ১ শতাংশের নিচে এবং শ্রমিক ৫০ শতাংশ সাশ্রয় হয়। আলু তোলার পর ভালো করে শুকিয়ে বাছাই করতে হবে এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়