প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
পৃথিবীর বুকে যখন আমার কান্নার শব্দ শুনে মায়ের চোখ ভেয়ে জল পড়ার মাঝে হাসি ফুটে ছিলো, তখন ছিলো আমার জীবনের প্রথম দিন। দীর্ঘ সময়ে মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠে মানব শিশু। সন্তানকে শিক্ষা দিতে মা প্রস্তুতি নিতে শুরু করে, সন্তান গর্ভে আসার পর থেকেই। সন্তান গর্ভে আসার পর থেকেই মা পরিকল্পনা আঁকতে থাকে, সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে মা নানান প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
চঞ্চল দূরন্ত ছোট্ট মেয়েটি, বিয়ের পরও যার মধ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি; সে মেয়েটিরই আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় সন্তান গর্ভে আসার পর। নিজের প্রতি উদাসীন মেয়েটি যত্নবান হয়ে ওঠে সন্তানের কথা ভেবে।
সন্তানের অস্তিত্ব মা। কেননা,মায়ের পর এই বিশাল পৃথিবীতে শিশু সবচেয়ে অসহায় ও দুর্বল থাকে।
পৃথিবীতে এত এত মানুষের মাঝে শিশু তার মায়ের বুক আগলে থাকে। আমরা বাঁচতে শিখি এইভাবেই পৃথিবীতে। কারণ মা হল প্রত্যেক সন্তানের কাছেই সবচেয়ে নিরাপদ এবং শান্তির আশ্রয়। তারপর থেকে শুরু হলো জীবনের চলার পথ মায়ের হাত ধরে।
আমাদের পড়াশোনার হাতে-খড়ি হয় মায়ের কাছ থেকে। মায়ের সাহচার্য ও প্রভাবে সন্তানের জীবন গড়ে ওঠে। আমাদের চাল-চলন, আদব-কায়দা, শিক্ষা, রুচি প্রভৃতি মায়ের প্রভাবে গড়ে ওঠে। মায়ের স্নেহ, মায়া, মমতা তিনি সব সন্তানের মাঝে বিলিয়ে দেন। আমাদের সাফল্যে মায়ের খুশির সীমা থাকে না।
আমাদের জীবনে মায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মা নামের মাঝেই লুকিয়ে থাকে আলাদা একটা শান্তি, অন্যরকমের তৃপ্তি। মা মানেই একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে শিক্ষা দেয়া হয় ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা, নৈতিকতা, শারীরিক শিক্ষা।
মায়ের মুখের উচ্চরিত প্রতিটি শব্দ থেকে শিখে যাই। মনের ভাব প্রকাশ করার প্রধান মাধ্যম মাতৃভাষায় কথা বলা। প্রথম শিখি, মা উচ্চারণ। মাকে মা বলে ডাকা শিখার পর শিখে যাই আস্তে আস্তে সব কথা বলার ধরন। এইভাবেই, অ, আ, ক, খ শব্দ মিলিয়ে বাক্য তৈরি করে লিখার নমুনা শিখে যাই।
মাকে নিয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটন বলেছিলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা হলেন আমার মা। মায়ের কাছে আমি চিরঋণী। আমার জীবনের সব অর্জন তারই কাছ থেকে পাওয়া নৈতিকতা, বুদ্ধিমত্তা আর শারীরিক শিক্ষার ফল।’
অন্যদিকে, ফ্রান্সের সম্রাট বা ইতালির সাবেক রাজা নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছেন, ‘তুমি আমাকে আদর্শ মা দাও, আমি তোমাকে আদর্শ জাতি উপহার দিব।’
আবার অন্য এক জায়গায় বলা হয়েছে- মায়ের শিক্ষাই শিশুর ভবিষ্যতের বুনিয়াদ, মা-ই হচ্ছেন শিশুর সর্বোৎকৃষ্ট বিদ্যাপীঠ।
মায়ের বুকে আমাদের দুনিয়া ও বেহেশত। আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘আখেরাতের বেহেশত মায়ের পায়ের নীচে।’