প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯
দেবদাস কর্মকারের কবিতা
সূর্য সুতোয় ঝুলে আছি
যেন সূর্য সুতোয় বেঁধে আছে জীবন আমার
অবিচল আলোর ধারায় কী দেখি, যেন ডুবে যাই
রোজ রোজ কী মোহে ধেয়ে আসে কান্নাবিন্দু
পৃথিবীর যত গাথা যা কিছু সঞ্চয়
অনেক দূরের ঘোর আয়ুময় আয়োজন
ধূলির অনুর মত ভেসে যায় স্রোতে।প্রতিক্ষণ স্পন্দিত হই যেন বহুরূপী বিস্ময়
আকাশ জুড়িয়া কি পরিচ্ছন্ন সংকেত রাত দিন
অরূপ কি খুব দূর, কেমন আড়ালে লুকালে
গভীর বনের গা বেয়ে যেন নদী ছুঁয়ে যায়
কী এক অমীমাংসিত সন্ধি
যখোন প্রেমের মধ্য দিন কি এক স্তব্ধ অনুরাগ
নক্ষত্র নদীর মতো উড়ে এসে টানে আমাকে
ঘাসের উপরে তার দিঘল চুলে সে নড়ে চড়ে বসে
সূর্য সুতোয় ঝুলে আছি সারাটি জীবন
কেমন নির্লিপ্তিতে যখোন দেবে ডাক
আলোর নীলের ধূলি নিয়ে
স্নিগ্ধ হয়ে হয়ে যাব মিশে কি নিবিড় স্বপ্ন চূড়ায় ।৭ নভেম্বর ২০২৪, ঢাকা, ২২ কার্তিক,১৪৩১।
জেগে উঠে জননীর আমার
কী করে তোমাকে ভুলে যাই
দক্ষিণ সমুদ্রের জলজ বাতাস
সকালের শিশির বিন্দু আমাকে জাগিয়ে তোলে
তোমার টলমলে চোখের কার্নিশ, শত চেনা ঠোঁটের কারুময় খাজ, নিবিড় চুম্বন
কার্তিকের শিশিরে ভেজা ফসলের ক্ষেত
অহরহ জাগিয়ে তোলে আমাকে।অবিরাম ঢেউ জলে ধুয়ে দিয়ে সবুজ নদীর তট
ভূতগ্রস্তের মতো খুঁজি তোমার চোখের সুনীল,
ঠিক যখোন বুক পেতে মরে গেছে লক্ষ শহীদ
কী এক বিপন্ন সন্ধিক্ষণে বিধ্বস্ত জননী ভগ্নির সম্ভ্রম,
দুঃখ ভরা দিনে রক্তাক্ত যন্ত্রণার ইতিহাসতখোন
মাহেন্দ্রক্ষণ চারদিকে নতুনের পালাবদল
আলো থেকে অন্ধকার, অন্ধকার থেকে আলো।ক্ষণোজ্জ্বল সায়াহ্নে আকাশ জুড়ে থালার মতো চাঁদ
অন্ধকার রাত্রির বুক ছুঁয়ে জোনাকি নক্ষত্র
প্রগাঢ় আচ্ছন্ন কুয়াশার ঘোমটা সরিয়ে সকাল
কপালে তোমার জেগে উঠে সূর্য জ্বলা টিপ
আমার সমগ্র সত্তা যে মাটিতে হয়ে আছে লীন
পূর্ব পুরুষের গায়ের গন্ধ, দারুণ প্রিয়তা এই উর্বর বদ্বীপ, তাকে কী করে ডিলিট করি?
হয়তো কৃতঘ্ন আমি,
বুক থেকে উঠে আসা শ্বাস, কী করে যে ভুলে যাই
চিনিচাঁপা গাছের আড়ালে তারুণ্যের হুটোপুটি প্রেম!
দিন শেষে রাঙা রোদ ঝরে গিয়ে যখোন হয়ে উঠে
আমারই বুকের পাঁজর
দারুণ স্পৃহা জাগে মনে, সময়ের ব্যর্থতা ভেঙে
কোনো এক স্বপ্ন
হরিতকী তলে ধূসর ছায়া জ্যোৎস্নায়,
যখোন তোমাকে দেখি ইতস্তত যেন স্বপ্ন জন্ম হয়
ভেসে যায় হৃদয়ের জরা
ভেসে আসে সমুদ্রের জলজ বাতাস
হঠাৎ তাকাই ফিরে প্রিয়ায় শাড়ির মাঝে
জেগে উঠে কী পবিত্র জননীর আমার ।১ নভেম্বর ২০২৪, ঢাকা, ১৬ কার্তিক,১৪৩১