শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৯

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবসের গুরুত্ব

মাছুম বিল্লাহ
আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবসের গুরুত্ব

আমাদের সবারই দায়িত্ব রয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে সমতা আনয়নের জন্য যার যার স্থান থেকে অবদান রাখা। শিক্ষার ব্যাপকতাই দারিদ্র নিরসন করে বিশ্বে সমতা আনয়ন করতে পারে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নয়নের পথে ধাবিত করতে পারে। এবার অর্থাৎ ২০২৫-এ অন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবসে প্রতিপাদ্য হলো ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শিক্ষা : স্বয়ংক্রিয়তার যুগের মানবিক ক্ষমতা সংরক্ষণ।’

২৪ জানুয়ারি ২০২৫ দিনটি ছিলো জাতিসংঘ ঘোষিত একটি বিশেষ দিন। এ দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয় সারাবিশ্বে। শিক্ষা যেহেতু মানুষের মৌলিক অধিকার , শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে শিক্ষায় এর ব্যবহারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা শুরু করে। এর মাধ্যমে শান্তি, উন্নয়ন এবং সমতা আনয়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করার অঙ্গীকার করা হয়। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি থেকে দিবসটি পালন করা শুরু হয়। সেখানে বলা হয় শিক্ষাদান শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমিত নয়। আমাদের সবারই দায়িত্ব রয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে সমতা আনয়নের জন্য যার যার স্থান থেকে অবদান রাখা। শিক্ষার ব্যাপকতাই দারিদ্র নিরসন করে বিশ্বে সমতা আনয়ন করতে পারে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নয়নের পথে ধাবিত করতে পারে। এবার অর্থাৎ ২০২৫-এ অন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবসে প্রতিপাদ্য হলো ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শিক্ষা : স্বয়ংক্রিয়তার যুগের মানবিক ক্ষমতা সংরক্ষণ।’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে যা আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া দেশকে কাজে লাগাতে হবে।

আমরা জানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কম্পিউটার দ্বারা অনুকৃত করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হয়ে উঠেছে শিক্ষাক্ষেত্রের অংশ। যেখানে পড়ানো হয় কিভাবে কম্পিউটার এবং সফটওয়ার তৈরি করতে হয় যা বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করবে। শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বহুমাত্রিক ব্যবহারের অর্থ হবে এর সম্পূর্ণ কাঠামো পরিবর্তন করা। কিন্তু সঠিকভাবে যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করা যায় এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যদি এর দক্ষতার উন্নতি করতে পারে, তাহলে সেটা একইভাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য বাড়তি সহায়ক হতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হতে পারে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কোর্স সাজাতে, তাদের দুর্বলতা চিহ্নিত করতে এবং সেই অনুযায়ী তাদেরকে মতামত জানাতে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি যথাযথ সুপারিশসহ বিশদ প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে এবং শিক্ষকদের কাছে পাঠাতে পারে। এমনকি শিক্ষার্থীরাও একইভাবে নিজেদের দুর্বলতা খুজে নিয়ে তা কাটিয়ে উঠতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষ চাহিদসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্যও বাড়িতে সহায়ক হতে পারে। যেহেতু এর অ্যাগরিদম শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বিশ্লেষণ করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী তাদের পরামর্শ দিতে পারে, তাই এটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদেরকে নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যেতে সহায়ক হতে পারে।

একটি শ্রেণির প্রত্যোক শিক্ষার্থীর শেখার অগ্রগতি, পাঠে সম্পৃক্ততা এবং পারফরম্যান্সের তথ্য সংগ্রহ পর্যবেক্ষণ করে এর আলোকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা শেখার অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পারে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের সঠিক উত্তর বেছে নেয়ার মতো কিছু কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে শুধু সময় বাঁচবে তা নায়, দ্রুততম সময়ে ফল পাওয়া যাবে। এর ফলে রুরাল ও আরবান ডিভাইভ অনেকটাই মিনিমাইজ করা যাবে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের আরেকটি গুরুত্বপূর্ন দিক হলো কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি। বাংলাদেশে এখন শিল্পবিপ্লব ৪.০ এর যুগে প্রবেশ করেছে।

এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদর জন্য এ আই ও অন্যান্য উদ্ভাবনী প্রযুক্ত শেখা অত্যন্ত জরুরি যা তাদের ভবিষ্যত কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সাহায করবে। সাম্প্রতিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম তাদের ‘দ্য ফিউচার অব জবরস রিপোর্ট ২০২৫’-এ বিশ্বের এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ পরিচালনা করে। জরিফে অংশগ্রহণকারী ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এআই ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের ব্যবসার কাঠামো পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছে। ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের এআই সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ৬৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এআই দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ বসে থাকতে পারে না। বৈশ্বিক এই অবস্থার সাথে বাংলাদেশকে তাল মেলাতে হবে। এটি সত্য যে, বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে তাই বলে বসে থাকা যাবে না। আমাদের প্রযুক্তিগত সুবিধা সর্বত্র এখনও পৌঁছেনি, অনেকে বিষয়টি সম্পর্কে এখনও অজ্ঞ তারপরেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে পারে। প্রয়োজন শুধু কার্যকরী উদ্যোগের। বৈশ্বিক দৌড়ে আমাদের টিকে থাকতে হবেল শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে সফলভাবে কাজে লাগাতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়