প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:৩৪
মতলবের জ্ঞান তাপস অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী
প্রফেসর মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লাহ জ্ঞান তাফস অত্যন্ত সজ্জনব্যক্তি। চাঁদপুর জেলার মতলব থানার কদমতলী গ্রামে ১৯৪১ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহন করেন। ২০১২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার চান্দিনায় এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। অধ্যাপক মোল্লা রিয়াছত উল্লাহর পিতার নাম মৌলভী মুখলেছুর রহমান, মাতার নাম মোসাম্মৎ রাশিদা খাতুন।
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রানীত মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লার শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় মতলব জেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। মতলব স্কুল থেকে মেট্রিক এবং চাদপুর কলেজ থেকে ইন্টার মিডিয়েট পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স মাষ্টার্স পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় শেখ ফজলুল হক মনির স্নেহধন্য অধ্যপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সলিমুল্লা হলের ছাত্র লীগের সভাপতি ছিলেন।অধ্যাপক মোল্ল রিয়াছত উল্লা ১৯৬৩ সালে ডাক ভিপি পদে নিবার্চন করেন। এ নির্বাচনে ১ ভোটের ব্যবধানে রাশেদ খান মেননের সাথে হারেন। গনতন্ত্রের মানষ পুত্র হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের মৃত্যুতে ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ শোক বিহবল থাকার কারনে এই নির্বাচনে সহযোগীতা করতে পারেনী।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে মিজানুর রহমান চৌধুরী ও আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির স্নেহদন্য হয়েও ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক কারনে মনোনয়ন লাভ করেও নির্বাচন করতে পারেন নাই।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযোদ্ধে সংগঠকের ভুমিকা পালন করায় অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লাহর স্ত্রী রহিমা খাতুনের বাস ভবনে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী প্রথমে লুটপাট করে পরে অগ্নি সংযোগ করে ভস্মিভুত করে দেয়। আধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হন। স্বামী স্ত্রী দুই জন চাকুরী চ্যুত হন।
৭০ এর দশকে তিনি কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি হন এবং পরবর্তীতে অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের যুগ্ম সাধারণ নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের পর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনীতিতে অবিচল থেকে মতলবের রাজনীতিতে আজীবন অসামান্য অবদান রাখেন।
বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা কে বাংলার বানী পত্রিকার সম্পাদক অথবা বাংলাদেশ বেতারের ডাইরেক্টার হওয়ার জন্য বলেছিলেন কিন্তু তিনি এলাকার মআনুষের জন্য রাজনীতি করতে চান বলে ঢাকায় যেতে চাননি।১৯৭৫ সালের পরবর্তী দুঃসময়ে তিনি আওয়ামীলীগ (মালেক) এর মতলব থানা শাখার সভপতি হন। বর্তমান প্রধান মন্ত্রী দেশে আসার পর তিনি পর পর দুই বার পুনরায় মতলব থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জেলার সহ সভাপতি চাঁদপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ জাতীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর - ৩ নির্বাচনী আসন থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন। অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
অধ্যাপক রিয়াছত উল্লা দুই বার মতলব থানা সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তিনি মতলব কল্যান পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ দিন।
অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছ উল্লা জীবনের অধীকাংশ সময় মতলব ডিগ্রি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে এই জ্ঞান তাপস একাদিক বার শ্রেষ্ট শিক্ষক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দুঃসময়েও তিনি এ অঞ্চলে অওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের কে সংগঠিত করে রেখেছেন।
অধ্যাপক মোল্লা রিয়াছত উল্লা কিছু দিন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাত পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেছেন। ৯০ এর দশকে সংবাদ পত্রিকায় তার লেখা "কবিতায় উত্তর আধুনিকতা" প্রবন্ধটি পাঠক মহলে বেশ সারা পড়ে ছিল।
তিনি অত্যন্ত সাদামাঠা জীবন যাপনে অবস্থ্য ছিলেন। এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠনের সাথে সব সময় নিজেকে জড়িয়ে রাখতেন।
মতলবের প্রিয় মুখ সদা হাসোজ্জল নির অহংকারী জ্ঞান তাপস এই অধ্যাপক জাতীয় ইতিহাস পরিষদের সদস্য ছিলেন।
অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লার হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী দেশ বিদেশে ছড়িয়ে আছে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত রেখে ছিলেন। মতলবের শ্রেষ্ট বিদ্যা পিঠ মতলব ডিগ্রি কলেজের তিনি ছিলেন জ্ঞানের বাতি ঘড়। ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারে ও তিনি কাজ করেছেন। ধর্মীয় মূল্যবোধে তিনি জীবন পরিচালিত করতেন।
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মানের এই আদর্শের সৈনিক অজীবন সাধারন মানুষের জন্য কাজ করে গেছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লার ছিল অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস।
অধ্যাপক মোল্লা মোঃ রিয়াছত উল্লা জীবনব্যপী জ্ঞান অর্জন এবং জ্ঞান দান করে গেছেন।