শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি-৪

কলেজে পড়াবস্থায় ‘মাসুদ রানা’ হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম

-----প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান

কলেজে পড়াবস্থায় ‘মাসুদ রানা’ হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম
আলআমিন হোসাইন ॥

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তিনি চাঁদপুর সরকারি কলেজের কৃতী মেধাবী শিক্ষার্থী। ১৯৮৩ সালে তিনি এ কলেজে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হন। ১৯৯৪ সালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে দুই মেয়াদে সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চাঁদপুর সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও বারো বছর শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকে তিনি জীবনের বড় অর্জন বলে মনে করেন।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২-এ জেলা পর্যায়ে কলেজ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে মনোনীত হন।

‘চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি’ শীর্ষক দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার পর্বে আজ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমানের কথা তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা সম্পর্কে জানতে চাই।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : আমার জন্ম ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের লাড়ুয়া গ্রামে। বাড়ির পাশে ডাকাতিয়া নদীর তীরঘেঁষে রামপুর বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে রামপুর বাজার মজিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কত সালে, কোন্ শ্রেণিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : ১৯৮৩ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সে সময় কলেজের পরিবেশ কেমন ছিলো?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : সে সময় রাজনৈতিক মিটিং-মিছিলে প্রকম্পিত হতো চাঁদপুর কলেজের ক্যাম্পাস। শিক্ষক, ছাত্রদের নিষ্ঠা ও একাগ্রতার জন্যে শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত হতো না। সে সময়ে সমগ্র জেলার মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ কলেজে ভর্তি হতো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় শিক্ষক এবং সহপাঠী ছিলেন কারা? তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : আমার প্রিয় শিক্ষক ছিলেন উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক তাজুল ইসলাম স্যার, ইংরেজি বিভাগের এবিএম ওয়ালিউল্লাহ স্যার ও বাংলার মুহাম্মদ খলিলুুর রহমান স্যার (২)। স্যারদের পাঠদান প্রক্রিয়া ও ব্যক্তিত্ব আমাকে বিমোহিত করতো।

এই মুহূর্তে সে সময়ের সহপাঠী যাদের নাম মনে পড়ছে তারা হলো : নেছার, স্বপন, শরীফ চৌধুরী, প্রদ্যুৎ, বিদ্যুৎ, আনু, শরীফ আহমেদ, প্রণব, বাহাউদ্দিন, শিবলী, লতিফ, শামীম, টুটুল, শাহজাহান। শিবলী ছিলো আমার মামাতো ভাই। এদের মধ্যে শিবলী ও প্রদ্যুৎ আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্যে চলে গেছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজ জীবনের উল্লেখযোগ্য কোনো সুখের এবং দুঃখের স্মৃতির কথা জানতে চাই, যা আজও আপনার মনে পড়ে।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : সুখের স্মৃতি হলো যেদিন এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছিলো। দুঃখের স্মৃতি এখনো মনে পড়ে, কলেজে ক্লাস শুরুর প্রথম সপ্তাহে ইংরেজি বই না আনায় গ্যালারি ক্লাসে পুরো সময় ওয়ালিউল্লাহ স্যার দাঁড় করিয়ে রাখেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজে পড়াবস্থায় নিজেকে নিয়ে কী স্বপ্ন দেখতেন?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : কলেজে পড়াবস্থায় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ পড়তাম। স্বভাবতই স্বপ্ন দেখতাম ‘মাসুদ রানা’ হবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ক্লাস এবং আড্ডাবাজির স্মৃতি সম্পর্কে কিছু বলুন।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : ক্লাসগুলো ছিলো প্রাণবন্ত। অবসর সময় বন্ধুদের সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা হতো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমানে কলেজে এলে কোন্ স্মৃতি বেশি মনে পড়ে?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : বর্তমানে কলেজে গেলে গ্যালারির কথা মনে পড়ে, যেখানে আমাদের ক্লাস হতো। বিকেল বেলায় কলেজ মাঠের ফুটবল ও বাস্কেটবল খেলার দৃশ্য স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ৭৫ বছরপূর্তিতে আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : ৭৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে দেশে ও বিদেশে থাকা পুরাতন বন্ধুদের সঙ্গে মিলন ঘটবে। এতে আমি উচ্ছ্বসিত।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার দৃষ্টিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ কেনো সেরা?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : চাঁদপুর জেলায় অনার্স-মাস্টার্স কোর্স-সম্বলিত সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর সরকারি কলেজ। কলেজের দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো সবাইকে আকৃষ্ট করে। এছাড়াও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সমাজের বিভিন্ন পেশায় লব্ধ প্রতিষ্ঠিত।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা/স্বপ্ন কী?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : ভবিষ্যতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হবে-এ প্রত্যাশা করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজ জীবনের উল্লেখযোগ্য অর্জন কী?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : কলেজ জীবনের অর্জন হলো-মাত্র দুই বছর শিক্ষার্থী ছিলাম। এর চূড়ান্ত অর্জন ১৯৯৪ সালে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে প্রভাষক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) হিসেবে যোগদান। পরবর্তীতে দুই মেয়াদে সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চাঁদপুর সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে দায়িত্ব পালন করি। চাঁদপুর সরকারি কলেজে দুই বছর শিক্ষার্থী হিসেবে এবং বারো বছর শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকে আমি জীবনের উল্লেখযোগ্য বড় অর্জন বলে মনে করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কোন্ কোন্ সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন?

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : চাঁদপুর কলেজে রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী সদস্য হিসেবে যুক্ত ছিলাম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : নতুনদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে পড়াশোনার বিকল্প নেই। নতুনরা তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে কলেজটিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবে-এ প্রত্যাশা করছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উল্লেখিত প্রশ্নের বাইরে আপনার কোনো কথা থাকলে বলুন।

প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান : চাঁদপুর সরকারি কলেজ শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে এবং অবকাঠামোগতভাবে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তরিত হবে-প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হিসেবে এ প্রত্যাশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়