প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:১৮
মধ্যরাতে সাব্বির -২ লঞ্চের সাজারো ধাক্কায় লণ্ডভণ্ড চাঁদপুর লঞ্চঘাটের পল্টুন
বিআইডব্লিউটিএ রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেয়া হয় লঞ্চটি
মধ্যরাতে ঢাকা থেকে আগত ঘোষেরহাটগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এম. ভি. সাব্বির -২ চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রা বিরতিকালে লঞ্চের ধাক্কায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটের পল্টুন। এ সময় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে শতাধিক যাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১২ জানুয়ারী বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১ টার দিকে।
|আরো খবর
এই ঘটনায় লঞ্চটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা টিআই শাহআলম নিজে উপস্থিত থেকে রহস্যজনক কারণে লঞ্চটি ঘাট থেকে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সহযোগিতা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের ঘোষেরহাটগামী এমভি সাব্বির লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে রাত সোয়া ১ টার দিকে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে যাত্রা বিরতির জন্য ঘাটে ভীড় ছিল। এ সময় লঞ্চটি খুব দ্রুত বেগে এসে পল্টুনে ধাক্কা দিলে পল্টুন ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
তাৎক্ষণিক চাঁদপুর নৌ-থানার অফিসার ইনচার্জ মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সাব্বির -২ লঞ্চের ৩ জন স্টাফ ও ৩ জনকে নৌ পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিআইডব্লিউটিএর নৌ বন্দরের পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) শাহআলম নৌ থানা থেকে আটক কৃতদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তারপর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে চাঁদপুর ঘাট থেকে সাব্বির-২ লঞ্চটি ছাড়িয়ে দেয় বলে ঘাটের বিভিন্ন লঞ্চের স্টাফ ও সুপার ভাইজারগন জানান।
এমনকি এ বিষয়ে, নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম অনেকটা বিমর্ষ ভাষায় সাংবাদিকদের জানান, বিআইডব্লিউটিএ টিআই শাহআলম ও তাঁর সাথে থাকা ঘাটের লঞ্চ সুপারভাইজার রুহুল আমিন এতোটা দুঃখজনক আচরণ করে লঞ্চটি ঘটনা স্হল থেকে করতে সাহায্য করেন, যা আমরা অসহায়ের মতো চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু ছিলো না।
অথচ জনস্বার্থে নির্মিত পল্টুনে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও ব্যক্তিগত ভাবে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের স্বার্থ লাভের কারণে এই বিষয়ে আইনগত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে লঞ্চ সুপারভাইজারদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে টিআই শাহআলম দায়িত্ব পালন কালে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী থাকলেও যাত্রীর সংখ্যা সঠিক লিখে স্বক্ষর করে লঞ্চ কতৃপক্ষের নিকট থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার বহু অভিযোগ রয়েছে। লঞ্চ চলাচলকালে মুল মাস্টার না থাকলে ও তিনি পারমিটে স্বাক্ষর করে দ্বিতীয় শ্রেণীর মাস্টার দিয়ে লঞ্চ চালানোর অনুমতি দিয়ে থাকেন বলে ও অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে।
চাঁদপুর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ মুজাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা সাব্বির লঞ্চের ৩ জন কে দুর্ঘটনার পর আটক করি। টিআই শাহআলম তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।তবে এব্যাপারে বন্দর কতৃপক্ষ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দায়ের করলে আমরা আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।
এদিকে ১৩ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায় বন্দর কর্মকর্তা কাউসারুল ইসলাম, সিপি এস মাহমুদুল হাসান থানদার, টিআই শাহআলম, সুমন, ঘাট সুপারভাইজার রুহুল আমিনসহ সাব্বির-২ লঞ্চের স্টাফদের নিয়ে সমঝোতার বৈঠক করে, পল্টুনটি মেরামত করে দেবেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বন্দর কর্মকর্তা।
এবিষয়ে বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন আমরা লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ও স্টাফের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে বন্দর ও পরিবহন পরিদর্শক শাহআলমের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান ঘটনার সাথে সাথে কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি ।তাহাদেরকে বিস্তারিত বিষয়টি জানিয়েছি কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে স্টাফদের নাম ঠিকানা রেখে যাবার অনুমতি দিয়েছি।তবে লঞ্চে থাকা যাএীদের কথা বিবেচনা করে অনুমতি দিয়েছি ।
এদিকে এমন একটি দূর্ঘটনা ঘটলেও চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তাসহ বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তাদের রহস্যজনক কারণে ঘটনার কোনো প্রতিকার সম্ভব হয় না।